Skip to content
Home » MT Articles » ক্যান্সার কি? ক্যান্সার কেন হয়? ক্যান্সারের লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ।

ক্যান্সার কি? ক্যান্সার কেন হয়? ক্যান্সারের লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ।

ক্যান্সার কি

ক্যান্সার কি?

ক্যান্সার হলো শরীরের কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি এবং বিস্তারের একটি রোগ। এই কোষগুলি স্বাভাবিক কোষের চেয়ে আলাদা এবং তারা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তারা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং অন্যান্য কোষ এবং টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এই রোগটি শরীরের যেকোনো অংশে হতে পারে। এটি সাধারণত শরীরের কোন নির্দিষ্ট অংশের নাম অনুসারে নামকরণ করা হয়, যেমন ফুসফুস ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার বা ত্বক ক্যান্সার।

ক্যান্সার কেন হয়?

ক্যান্সার কেন হয় তা এখনও পুরোপুরি বোঝা যায় না, তবে গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে এটি বিভিন্ন কারণের সংমিশ্রণের কারণে হয়।

ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো ডিএনএতে পরিবর্তন বা মিউটেশন। ডিএনএ হলো কোষের জেনেটিক কোড, এবং এটি কোষের বৃদ্ধি, বিভাজন এবং কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে। মিউটেশন এর ফলে কোষগুলি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পায় এবং বিস্তার লাভ করতে পারে।

ক্যান্সার কেন হয়

ক্যান্সারের অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • পরিবেশগত কারণ: কিছু রাসায়নিক পদার্থ, তেজস্ক্রিয়তা এবং নির্দিষ্ট ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • জীবনযাপন পদ্ধতি: ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং অতিরিক্ত মদ্যপান ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • পারিবারিক ইতিহাস: পারিবারিক ইতিহাসে ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে এই রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।

ক্যান্সারের নির্দিষ্ট কারণগুলি ক্যান্সারের ধরন এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধান কারণ হলো ধূমপান, স্তন ক্যান্সারের প্রধান কারণ হলো বয়স এবং পারিবারিক ইতিহাস, এবং ত্বক ক্যান্সারের প্রধান কারণ হলো অতিবেগুনী রশ্মি।

ক্যান্সারের লক্ষণ কি কি?

ক্যান্সারের লক্ষণগুলি ক্যান্সারের ধরন, অবস্থান এবং রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। তবে, কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে যা ক্যান্সারের দিকে ইঙ্গিত করতে পারে। এই লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • শরীরের যেকোনো জায়গায় চাকা বা দলা দেখা দেওয়া
  • দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা গলা ভাঙা
  • মলত্যাগে পরিবর্তন আসা (ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা মলের সাথে রক্ত যাওয়া)
  • প্রস্রাবে পরিবর্তন আসা (প্রস্রাবের পরিমাণ বা রঙের পরিবর্তন)
  • অনিয়মিত মাসিক চক্র
  • হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
  • অবিরাম ক্লান্তি
  • অবিরাম ব্যথা

এই রোগটির আরও কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ হল:

  • ত্বক ক্যান্সার: ত্বকে ফোঁড়া, ঘা, বা দাগ দেখা দেওয়া
  • স্তন ক্যান্সার: স্তনে চাকা বা দলা দেখা দেওয়া, স্তন থেকে তরল নিঃসরণ, বা স্তনে ব্যথা
  • ফুসফুস ক্যান্সার: কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, বা রক্তের সাথে কাশি
  • গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ক্যান্সার: পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব বা বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া, বা মলের সাথে রক্ত যাওয়া
  • মূত্রনালীর ক্যান্সার: প্রস্রাবে ব্যথা, প্রস্রাবের পরিমাণ বা রঙের পরিবর্তন, বা প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া
  • লিভার ক্যান্সার: পেটে ব্যথা, ক্ষুধা কমে যাওয়া, অনিয়মিত মাসিক চক্র, বা ত্বকের হলুদ হয়ে যাওয়া
  • মস্তিষ্ক ক্যান্সার: মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব বা বমি, দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তির পরিবর্তন, বা কথা বলা বা হাঁটার সমস্যা

যদি আপনি এই লক্ষণগুলির মধ্যে যেকোনো একটি অনুভব করেন তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। এই রোগটি প্রাথমিকভাবে নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসার ফলাফল আরও ভাল হয়।

ক্যান্সার কত প্রকার?

ক্যানসার কত প্রকার

ক্যান্সারকে বিভিন্নভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। একটি সাধারণ শ্রেণীবিভাগ হলো ক্যান্সারের উৎপত্তি অনুসারে। এই শ্রেণীবিভাগ অনুসারে, ক্যান্সারকে নিম্নলিখিত দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়:

  • এপিথেলিয়াল ক্যান্সার: এই ধরনের ক্যান্সার শরীরের এপিথেলিয়াম থেকে শুরু হয়, যা শরীরের বাইরের আবরণ এবং অঙ্গের অভ্যন্তরীণ আবরণ তৈরি করে। এপিথেলিয়াল ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে স্তন ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার এবং ত্বক ক্যান্সার।
  • এন্ডোডার্মাল ক্যান্সার: এই ধরনের ক্যান্সার শরীরের এন্ডোডার্ম থেকে শুরু হয়, যা শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির অভ্যন্তরীণ আবরণ তৈরি করে। এন্ডোডার্মাল ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে পেট ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং মূত্রাশয় ক্যান্সার।

ক্যান্সারকে শ্রেণীবদ্ধ করার আরেকটি উপায় হলো ক্যান্সার কোষগুলির আচরণ অনুসারে। এই শ্রেণীবিভাগ অনুসারে, ক্যান্সারকে নিম্নলিখিত দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়:

  • বেনাইন ক্যান্সার: এই ধরনের ক্যান্সার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং সাধারণত ছড়িয়ে পড়ে না। বেনাইন ক্যান্সার সাধারণত চিকিত্সার প্রয়োজন হয় না, তবে এটি অস্বস্তি বা অন্যান্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • ম্যালিগন্যান্ট ক্যান্সার: এই ধরনের ক্যান্সার দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং অন্যান্য কোষ এবং টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ম্যালিগন্যান্ট ক্যান্সারকে সাধারণত চিকিত্সা করা প্রয়োজন।

ক্যান্সারকে শ্রেণীবদ্ধ করার আরও কিছু উপায় রয়েছে, যেমন ক্যান্সারের অবস্থান অনুসারে, ক্যান্সারের কারণ অনুসারে এবং ক্যান্সারের চিকিৎসার প্রতিক্রিয়া অনুসারে।

ক্যান্সারের নির্দিষ্ট ধরনগুলির নাম সাধারণত শরীরের যে অংশে ক্যান্সার শুরু হয় তার নাম অনুসারে দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, স্তন ক্যান্সার স্তনে শুরু হয়, ফুসফুস ক্যান্সার ফুসফুসে শুরু হয়, এবং কোলন ক্যান্সার কোলোনে শুরু হয়।

ক্যান্সারের কিছু সাধারণ ধরন হলো:

  • স্তন ক্যান্সার: মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার।
  • ফুসফুস ক্যান্সার: পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার।
  • কোলন ক্যান্সার: পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ থার্ডারি ক্যান্সার।
  • ত্বক ক্যান্সার: সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার, যা সাধারণত সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির কারণে হয়।
  • প্রোস্টেট ক্যান্সার: পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার।
  • মস্তিষ্ক ক্যান্সার: সবচেয়ে মারাত্মক ক্যান্সারগুলির মধ্যে একটি।
  • রক্ত ক্যান্সার: রক্তের কোষগুলিকে প্রভাবিত করে এমন ক্যান্সার।

কিভাবে ক্যান্সার নির্ণয় করা হয়?

এই রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষাগুলি ক্যান্সারের উপস্থিতি, ধরন, অবস্থান এবং তীব্রতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।

এই রোগ নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত সাধারণ পরীক্ষাগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • শারীরিক পরীক্ষা: একজন ডাক্তার রোগীর শরীর পরীক্ষা করে অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা দেখেন।
  • রক্ত পরীক্ষা: রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের লক্ষণকারী প্রোটিন বা অন্যান্য উপাদানগুলির উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়।
  • চিত্র নির্ণয় পরীক্ষা: চিত্র নির্ণয় পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরীণ অংশগুলির ছবি তোলা হয়। এই পরীক্ষাগুলির মধ্যে রয়েছে:
    • এক্স-রে: এক্স-রে হল একটি বিকিরণ পদ্ধতি যা শরীরের অভ্যন্তরীণ অংশগুলির ছবি তোলার জন্য ব্যবহৃত হয়।
    • কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফি (সিটি স্ক্যান): সিটি স্ক্যান হল একটি এক্স-রে পদ্ধতি যা শরীরের তিনটি মাত্রার ছবি তোলার জন্য ব্যবহৃত হয়।
    • পজিট্রন নিঃসরণ টমোগ্রাফি (পিইটি স্ক্যান): পিইটি স্ক্যান হল একটি বিকিরণ পদ্ধতি যা ক্যান্সার কোষগুলিতে প্রচুর পরিমাণে শোষিত একটি রাসায়নিক ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষগুলির ছবি তোলার জন্য ব্যবহৃত হয়।
    • মাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই): এমআরআই হল একটি শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র এবং রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে শরীরের অভ্যন্তরীণ অংশগুলির ছবি তোলার জন্য ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি।
  • বায়োপসি: বায়োপসি হল একটি পরীক্ষা যেখানে শরীরের একটি ছোট অংশ অপসারণ করা হয় এবং পরীক্ষাগারের জন্য পাঠানো হয়। পরীক্ষাগারে ক্যান্সার কোষ আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়।

ক্যান্সারের ধরন এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে, অন্যান্য পরীক্ষাও প্রয়োজন হতে পারে।

ক্যান্সার নির্ণয় একটি জটিল প্রক্রিয়া হতে পারে। একজন ডাক্তার রোগীর ইতিহাস, লক্ষণ এবং পরীক্ষার ফলাফলগুলি বিবেচনা করে ক্যান্সারের নির্ণয় করেন।

আরোও পড়ুন

যক্ষা রোগ কি? যক্ষা রোগের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা।

অ্যাজমা রোগ কি? অ্যাজমা রোগের কারণ, লক্ষণ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা।

ক্যান্সারের চিকিৎসা:

ক্যান্সারের চিকিৎসার লক্ষ্য হল ক্যান্সার কোষগুলিকে ধ্বংস করা বা তাদের বৃদ্ধি বা বিস্তার বন্ধ করা। ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য অনেকগুলি বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • সার্জারি: সার্জারি হল ক্যান্সার কোষগুলি বা টিউমারগুলি অপসারণের জন্য একটি পদ্ধতি। সার্জারি ক্যান্সারের সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা হতে পারে, বিশেষ করে যদি ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা হয়।
  • কেমোথেরাপি: কেমোথেরাপি হল ক্যান্সার কোষগুলি ধ্বংস করার জন্য ওষুধ ব্যবহারের একটি পদ্ধতি। কেমোথেরাপি ক্যান্সারের ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করতে বা ক্যান্সার ফিরে আসা থেকে প্রতিরোধ করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • রেডিওথেরাপি: রেডিওথেরাপি হল ক্যান্সার কোষগুলিকে ধ্বংস করার জন্য বিকিরণ ব্যবহারের একটি পদ্ধতি। রেডিওথেরাপি ক্যান্সার কোষগুলিকে ছোট করতে বা ধ্বংস করতে ব্যবহার করা যেতে পারে, বা ক্যান্সার ফিরে আসা থেকে প্রতিরোধ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • ইমিউনোথেরাপি: ইমিউনোথেরাপি হল রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাকে ক্যান্সার কোষগুলিকে আক্রমণ করতে সাহায্য করার জন্য ওষুধ ব্যবহারের একটি পদ্ধতি। ইমিউনোথেরাপি কিছু ধরণের ক্যান্সারের জন্য কার্যকর হতে পারে, যেমন মেলানোমা বা স্তন ক্যান্সার।

ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য প্রায়শই একাধিক পদ্ধতি একসাথে ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সার্জারির পরে কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি দেওয়া যেতে পারে।

ক্যান্সারের চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি ক্যান্সারের ধরন, চিকিৎসার ধরন এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, বমি, চুল পড়া, এবং ক্লান্তি।

ক্যান্সারের চিকিৎসার ফলাফল ক্যান্সারের ধরন, ক্যান্সারের অবস্থান, ক্যান্সারের তীব্রতা এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা হলে ক্যান্সারের চিকিৎসার ফলাফলগুলি সাধারণত ভাল হয়।

ক্যান্সারের চিকিৎসা কি শতভাগ কার্যকর?

না, ক্যান্সারের চিকিৎসা শতভাগ কার্যকর নয়। ক্যান্সারের ধরন, অবস্থান, রোগীর বয়স এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে চিকিৎসার ফলাফল পরিবর্তিত হয়।

কিছু ক্যান্সারের ধরন, যেমন ত্বক ক্যান্সার, প্রাথমিকভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হলে সম্পূর্ণ নিরাময় করা যেতে পারে। তবে, অন্যান্য ক্যান্সারের ধরন, যেমন ফুসফুস ক্যান্সার বা মস্তিষ্ক ক্যান্সার, সম্পূর্ণ নিরাময় করা কঠিন বা অসম্ভব।

ক্যান্সার হলে রোগী কতদিন বাঁচে?

ক্যান্সার হলে রোগী কতদিন বাঁচে তা নির্ভর করে অনেকগুলো কারণের উপর। এর মধ্যে রয়েছে ক্যান্সারের ধরন, ক্যান্সারের অবস্থান, ক্যান্সারের তীব্রতা, রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য, এবং চিকিৎসার ধরন এবং কার্যকারিতা।

সাধারণভাবে, প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা হলে ক্যান্সারের চিকিৎসার ফলাফলগুলি সাধারণত ভাল হয়। উদাহরণস্বরূপ, স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে, প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা হলে 5 বছরের বেঁচে থাকার হার 90% এর বেশি। তবে, ক্যান্সার যদি উন্নত পর্যায়ে নির্ণয় করা হয় তবে বেঁচে থাকার হার কমে যায়। উদাহরণস্বরূপ, স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে, উন্নত পর্যায়ে নির্ণয় করা হলে 5 বছরের বেঁচে থাকার হার 50% এর কম।

ক্যান্সারের ধরনও বেঁচে থাকার হারকে প্রভাবিত করে। কিছু ধরণের ক্যান্সার অন্যদের তুলনায় বেশি মারাত্মক। উদাহরণস্বরূপ, ফুসফুস ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার হল সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর কারণ।

রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যও বেঁচে থাকার হারকে প্রভাবিত করে। যদি রোগীর অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, যেমন হৃদরোগ বা ডায়াবেটিস, তাহলে ক্যান্সারের চিকিৎসার ফলাফলগুলি খারাপ হতে পারে।

চিকিৎসার ধরন এবং কার্যকারিতাও বেঁচে থাকার হারকে প্রভাবিত করে। যদি চিকিৎসা কার্যকর হয় এবং ক্যান্সারকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা যায়, তাহলে রোগী সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। তবে, যদি চিকিৎসা অকার্যকর হয় বা ক্যান্সার ফিরে আসে, তাহলে বেঁচে থাকার হার কমে যায়।

ক্যান্সার হলে রোগী কতদিন বাঁচবে তা নির্ধারণ করা কঠিন। তবে, উপরে বর্ণিত কারণগুলি বিবেচনা করে, একজন ডাক্তার রোগীর জন্য একটি সঠিক ধারণা দিতে পারেন।

ক্যান্সার প্রতিরোধ ও প্রতিকার:

ক্যান্সার প্রতিরোধ হল ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমানো। এই রোগটি প্রতিরোধের জন্য কিছু জিনিস করা যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: স্বাস্থ্যকর খাবার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ফল, শাকসবজি, এবং সম্পূর্ণ শস্য।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা: নিয়মিত ব্যায়াম ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ। ধূমপান ত্যাগ করলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
  • অতিরিক্ত ওজন কমানো: অতিরিক্ত ওজন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারলে এর ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা: কিছু ধরণের ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা হলে চিকিৎসার ফলাফলগুলি ভাল হয়। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা সম্ভব হতে পারে।

ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপ হল:

  • স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য, স্তন ম্যামোগ্রাম করা উচিত।
  • ফুসফুস ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য, ধূমপান ত্যাগ করা উচিত।
  • মলাশয় ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য, কোলনস্কোপি করা উচিত।
  • ত্বক ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য, সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।

ক্যান্সার প্রতিকার হল ক্যান্সারকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা। এর প্রতিকার এখনও সম্ভব নয়, তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে কিছু ওষুধ বা চিকিৎসা ক্যান্সারকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে পারে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং প্রতিকারের জন্য আরও গবেষণা চলছে।

error: Content is protected !!