দাঁতের ফিলিং হলো দাঁতের ক্ষয়গ্রস্ত অংশ পূরণ করার জন্য এক ধরণের উপাদান ব্যবহার করা। দাঁত এর ক্ষয় (Dental Caries) যখন দাঁতের এনামেল স্তর ছাড়িয়ে ডেন্টিন স্তরে পৌঁছায় তখন ফিলিং করার প্রয়োজন হয়।
ফিলিং করার প্রয়োজন হয় কখন?:
- দাঁতের ক্ষয় (Dental Caries).
- দাঁত ভেঙে যাওয়া
- দাঁতের ফাটল
- দাঁতের স্পর্শকাতরতা (Dental Sensitivity)
দাঁতের ফিলিং কত ধরণের হয়?
ব্যবহৃত উপাদানের উপর ভিত্তি করে ফিলিং সাধারনত কয়েক ধরনের হয়ে থাকে।
- ধাতু (Metal fillings): সবচেয়ে পুরনো এবং সবচেয়ে সস্তা ধরণের ফিলিং। এগুলো সাধারণত রূপা, তামা এবং পারদ দিয়ে তৈরি হয়।
- কম্পোজিট (Composite fillings): দাঁতের রঙের সাথে মিশে যায় এবং এটি দাঁতের জন্য আরও সৌন্দর্যবর্ধক।
- গ্লাস আইনোমার (Glass ionomer fillings): এটি দাঁতের সাথে রাসায়নিকভাবে বন্ধন করে এবং দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- সিরামিক (Ceramic fillings): এটি সবচেয়ে স্থায়ী এবং সৌন্দর্যবর্ধক ধরণের ফিলিং, তবে এটি সবচেয়ে ব্যয়বহুলও।
ফিলিং করার প্রক্রিয়া:
- প্রথমে, দাঁতের ক্ষয়গ্রস্ত অংশ অপসারণ করা হয়।
- তারপর, দাঁত পরিষ্কার এবং শুকানো হয়।
- তৃতীয়ত, ফিলিং উপাদান দাঁত এর গর্তে প্রয়োগ করা হয় এবং আলো বা রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্বারা শক্ত করা হয়।
দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয়
দাঁতের ফিলিং করার পর কিছু বিষয় মেনে চললে ফিলিং দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
করণীয়:
- ব্যথানাশক:
- ফিলিং করার পর কিছুটা ব্যথা হতে পারে।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন।
- ঠান্ডা ও গরম খাবার:
- ফিলিং করা দাঁত ঠান্ডা বা গরম খাবারে সংবেদনশীল হতে পারে।
- কয়েকদিন ঠান্ডা ও গরম খাবার এড়িয়ে চলুন।
- কঠিন খাবার:
- ফিলিং করা দাঁত দিয়ে কঠিন খাবার না চিবানোই ভালো।
- ব্রাশিং ও ফ্লসিং:
- নিয়মিত ব্রাশিং ও ফ্লসিং করুন।
- ফিলিং করা দাঁত এর চারপাশে ভালোভাবে ব্রাশ ও ফ্লস করুন।
- নিয়মিত চেক-আপ:
- নিয়মিত দাঁতের ডাক্তারের কাছে চেক-আপ করান।
এড়িয়ে চলতে হবে:
- ধূমপান:
- ধূমপান ফিলিং এর দীর্ঘস্থায়িত্ব কমিয়ে দেয়।
- চিনিযুক্ত খাবার:
- চিনিযুক্ত খাবার দাঁতের ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ায়।
- কাঠি দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা:
- কাঠি দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে ফিলিং খসে যেতে পারে।
কিছু টিপস:
- ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।
- দিনে দুইবার ব্রাশ করুন এবং একবার ফ্লস করুন।
- মাড়ি-মুখের রোগ প্রতিরোধ করুন।
ফিলিং এর যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করা যায় এবং দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব।
ফিলিং এর স্থায়িত্ব:
ফিলিং এর স্থায়িত্ব নির্ভর করে ফিলিং এর ধরণ, দাঁতের অবস্থান এবং ব্যক্তির মৌখিক স্বাস্থ্যবিধির উপর। ধাতু ফিলিং 10-15 বছর স্থায়ী হতে পারে, কম্পোজিট ফিলিং 5-10 বছর স্থায়ী হতে পারে, এবং গ্লাস আইনোমার ফিলিং 5-7 বছর স্থায়ী হতে পারে।
দাঁতের ফিলিং এর যত্ন:
- নিয়মিত দুইবার ব্রাশ করুন এবং একবার ফ্লস করুন।
- নিয়মিত দাঁতের ডাক্তারের কাছে চেক-আপ করান।
- চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় পান কমিয়ে দিন।
- বরফ, কঠিন খাবার চিবানো এড়িয়ে চলুন।
ফিলিং সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা:
- ফিলিং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে: এটি কেবল দাঁতের ক্ষয়গ্রস্ত অংশ পূরণ করে, নতুন ক্ষয় রোধ করে না।
- ফিলিং স্থায়ী: ফিলিং স্থায়ী হলেও, এটি চিরস্থায়ী নয়।
- ফিলিং ব্যথাজনক: আধুনিক ফিলিং প্রক্রিয়া ব্যথাহীন।
এ সম্পর্কে আরও জানতে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
তথ্যসূত্র : National Institute of Dental and Craniofacial Research
This article is written with the help of Gemini : https://gemini.google.com/app