Skip to content
Home » MT Articles » চোখের ছানি কি? চোখের ছানির লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ।

চোখের ছানি কি? চোখের ছানির লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ।

চোখের ছানি

চোখের ছানি কি?

চোখের ছানির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Cataract. চোখের ছানি হলো চোখের লেন্সের অস্বচ্ছ বা ঘোলা হয়ে যাওয়া, যার ফলে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। লেন্স হলো চোখের একটি অংশ যা আলোকে রেটিনায় ফোকাস করে, যা আমাদের দেখতে সাহায্য করে। যখন লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে যায়, তখন আলো রেটিনায় সঠিকভাবে ফোকাস করতে পারে না, ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা, অস্পষ্ট, এবং আলো-সন্দেহজনক হয়ে পড়ে।

চোখের ছানির লক্ষণ:

  • ঝাপসা বা অস্পষ্ট দৃষ্টি
  • রঙের অনুভূতি হ্রাস
  • রাতের বেলা দেখতে অসুবিধা
  • চোখে ঝলকানি
  • দ্বৈত দৃষ্টি
  • চোখে জ্বালা বা ব্যথা

চোখের ছানি পড়ার কারণ কি?:

  • বয়স: বয়সের সাথে সাথে চোখের লেন্স ধীরে ধীরে অস্বচ্ছ হয়ে যায়। 60 বছরের বেশি বয়সী মানুষদের মধ্যে ছানি বেশি দেখা যায়।
  • মধুমেহ: মধুমেহ রোগীদের ছানি পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • ধূমপান: ধূমপান ছানি পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
  • অতিরিক্ত সূর্যের আলো: সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি ছানি পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
  • চোখের আঘাত: চোখে আঘাতের ফলে ছানি পড়তে পারে।
  • কিছু ওষুধ: দীর্ঘ সময় ধরে স্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে ছানি পড়তে পারে।
  • জন্মগত: কিছু শিশু জন্মগতভাবে ছানি নিয়ে জন্মায়।

চোখের ছানির চিকিৎসা:

চোখের ছানির চিকিৎসা

চোখের ছানির একমাত্র কার্যকর চিকিৎসা হলো অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচারের সময়, অস্বচ্ছ লেন্স অপসারণ করা হয় এবং তার পরিবর্তে একটি কৃত্রিম লেন্স স্থাপন করা হয়। অস্ত্রোপচারের পরে, বেশিরভাগ মানুষ তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পান।

চোখের ছানি অপারেশন

চোখের ছানি অপারেশন হলো একটি অস্ত্রোপচার যা অস্বচ্ছ লেন্স অপসারণ করে এবং এটিকে একটি কৃত্রিম লেন্স দিয়ে প্রতিস্থাপন করে। ছানি হলো চোখের লেন্সের অস্বচ্ছ বা ঘোলা হয়ে যাওয়া, যার ফলে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়।

চোখের ছানির অপারেশন হলো সবচেয়ে সাধারণ অস্ত্রোপচারের মধ্যে একটি এবং এটি সাধারণত খুব নিরাপদ এবং কার্যকর। অস্ত্রোপচারটি সাধারণত অ্যাম্বুলেটরি সেটিংয়ে করা হয়, যার অর্থ হলো রোগীরা একই দিনে বাড়িতে যেতে পারে।

আরোও পড়ুন

ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন

অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি:

  • ফ্যাকোইমালসিফিকেশন: এটি ছানি অপারেশনের সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি। এটি একটি আল্ট্রাসাউন্ড তরঙ্গ ব্যবহার করে অস্বচ্ছ লেন্স ভেঙে ফেলে। ভাঙা লেন্সের টুকরোগুলি তখন চোখ থেকে সরিয়ে ফেলা হয় এবং একটি কৃত্রিম লেন্স স্থাপন করা হয়।
  • এক্সট্রাক্যাপসুলার ক্যাটারেক্ট অপসারণ (ECCE): এই পদ্ধতিতে, পুরো লেন্স সহ লেন্সের ক্যাপসুলটি অপসারণ করা হয়। এটি সাধারণত তখন করা হয় যখন ফ্যাকোইমালসিফিকেশন করা সম্ভব নয়।
  • ম্যানুয়াল ছানি অপসারণ: এই পদ্ধতিটি খুব কমই ব্যবহৃত হয়, কেবলমাত্র যখন অন্যান্য পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করা সম্ভব নয়।

অস্ত্রোপচারের পরে:

  • অস্ত্রোপচারের পরে, রোগীদের কিছুক্ষণের জন্য চোখে একটি প্যাচ পরতে হবে।
  • রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে হবে।
  • রোগীদের কিছুক্ষণের জন্য ভারী কাজ করা এবং চোখে ঘষা এড়াতে হবে।
  • বেশিরভাগ মানুষ অস্ত্রোপচারের পরে কয়েক দিনের মধ্যে তাদের দৃষ্টিশক্তিতে উন্নতি দেখতে পায়।

জটিলতা:

  • ছানি অপারেশন সাধারণত নিরাপদ হলেও কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে।
  • সবচেয়ে সাধারণ জটিলতা হলো চোখে প্রদাহ।
  • অন্যান্য জটিলতার মধ্যে রয়েছে রেটিনাল ডিটাচমেন্ট, গ্লুকোমা এবং সংক্রমণ।

সফলতার হার:

  • ছানি অপারেশন সাধারণত খুব সফল।
  • 90% এরও বেশি রোগী অস্ত্রোপচারের পরে তাদের দৃষ্টিশক্তিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখতে পায়।
চোখের ছানি অপারেশন

চোখের ছানি অপারেশনের খরচ:

  • ছানি অপারেশনের খরচ বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে, যার মধ্যে রয়েছে অস্ত্রোপচারের ধরন, সার্জনের অভিজ্ঞতা এবং অস্ত্রোপচারের স্থান।
  • বাংলাদেশে, ছানি অপারেশনের খরচ প্রায় ৳ 20,000 থেকে ৳ 100,000 পর্যন্ত হতে পারে।

চোখের ছানি প্রতিরোধে করনীয়:

  • নিয়মিত চোখ পরীক্ষা: নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করলে ছানি শুরুর দিকে ধরা পড়ে, যখন চিকিৎসা করা সহজ।
  • স্বাস্থ্যকর জীবনধারা: স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, যেমন ধূমপান ত্যাগ করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, এবং সুষম খাবার খাওয়া, ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে পারে।
  • সূর্যের আলো থেকে চোখের সুরক্ষা: সূর্যের বাইরে বের হওয়ার সময় সানগ্লাস পরা ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে পারে।

আরও তথ্যের জন্য:

error: Content is protected !!