Skip to content
Home » MT Articles » পেঁপের পুষ্টি উপাদান, গুণাগুণ ও উপকারিতা।

পেঁপের পুষ্টি উপাদান, গুণাগুণ ও উপকারিতা।

পেঁপে

স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় পেঁপের অবস্থান অন্যতম।পেঁপের ইংরেজি নাম পাপায়া (Papaya). পেঁপে কাঁচা ও পাকা দুভাবেই খাওয়া হয়ে থাকে। কাঁচা অবস্থায় সবজি ও পাঁকা অবস্থায় ফল হিসেবে খাওয়া হয় পেঁপে। আর এটি সারা বছরেই পাওয়া যায় ।আমাদের দেশে কাঁচা পেঁপে ভাজি, ভর্তা ও ডাল দিয়ে নানারকম তরকারি খাওয়া হয়ে থাকে। এমনকি এটি বিভিন্ন মাংসে দিয়েও রান্না করা হয়। এ ছাড়া কাঁচা পেঁপের হালুয়া আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয়। তাই বিশেষজ্ঞরা একে ‘সুপারফুড’ হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন। শরীরকে সুস্থ রাখতে ও শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করার পাশাপাশি এটি জ্বর নিরাময়ে, পেটের সমস্যা দূর করতে, গ্যাস্ট্রিক এবং বদহজমেও অনেক উপকারী।পাকা পেঁপে অনেকেরই পছন্দের তালিকায় থাকে না। তবে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদসহ সবাই এ ফলকে ‘মহৌষধ’ বলে থাকেন। এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর।  

পেঁপের পুষ্টিগুণ:

  • ক্যালোরি: ১০৫
  • কার্বোহাইড্রেট: ২৭ গ্রাম
  • ফাইবার: ৩.১ গ্রাম
  • চিনি: ১৯ গ্রাম
  • প্রোটিন: ১.৪ গ্রাম
  • ভিটামিন এ: ১০৮% দৈনিক মান (ডিভি)
  • ভিটামিন সি: ৬৯% ডিভি
  • ভিটামিন ই: ১২% ডিভি
  • ভিটামিন কে: ১৮% ডিভি
  • পটাসিয়াম: ৪২৬ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম: ৩১ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস: ৪০ মিলিগ্রাম
  • কপার: ১৭% ডিভি
  • ম্যাঙ্গানিজ: ১৮% ডিভি
  • বায়োটিন: ১৫% ডিভি

পেঁপের গুণাগুণ ও উপকারিতা:

বিশেষজ্ঞদের মতে, পেঁপেতে আছে ভিটামিন এ, সি, কে, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও প্রোটিন। সেই সঙ্গে এই ফলে আরও আছে প্রচুর ফাইবার। মিষ্টি স্বাদের এই ফলে ক্যালোরির পরিমাণও খুব কম। খেতে মিষ্টি হলেও ডায়াবেটিস রোগীদের এই ফল খেতে বাধা নেই। হজমের সমস্যা হলে পাকা পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এটি পেট পরিষ্কার করতে বেশ কার্যকর।

এনজাইমের উৎস:

কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম থাকে। এতে কেমোপেইন, প্যাপিন, পাইপাইন ও সাইমোপ্যাপিনের মতো উপাদান থাকে। এগুলো কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন চর্বি দূর করতে ভূমিকা রাখে।

পেটের জন্য উপকারী:

এটি পেটের জন্য অনেকটা ওষুধের মতো কাজ করে থাকে। কাঁচা পেঁপে কোলনের জন্য এবং পেটের পাঁচন প্রক্রিয়ার জন্য অনেক উপকারী। আর এতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, ডায়রিয়া ও গ্যাসের সমস্যা নিরাময়ে অনেক কার্যকরী।

ত্বকের যত্নে পেঁপে:

পেঁপেতে  প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এটি ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। প্রতিদিন পাকা পেপের সাথে মধু ও টকদই মিশিয়ে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

হজম ক্ষমতা বাড়ায় পেঁপে:

যাদের খাবারে রুচি নেই, তারা নিয়মিত পেঁপে খেতে পারেন। এটি খাবারে রুচি ফেরানোর পাশাপাশি পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। স্বাভাবিকভাবে পেট পরিষ্কার হলে ক্ষুধা পাবেই। একই সঙ্গে কমবে হজমের সমস্যা। এটি শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়। 

হার্ট ভালো রাখতে পেঁপে:

আপনি যদি সকালে নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে খুব দ্রুত। পেঁপেতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সে সঙ্গে এতে থাকে ভিটামিন এ, সি, ই। সকালে উঠে খালি পেটে পেঁপে খেলে তা শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। এর ফলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমে আসে।

চুলের জন্যও উপকারী পেঁপে:

চুলের জন্যও পেঁপে খুব উপকারী ফল। যে কারণে পেঁপে মেশানো শ্যাম্পুর প্রচলন বেশি। এছাড়া টক দইয়ের সঙ্গে পেঁপে মিশিয়ে চুলে মাখলে গোড়া শক্ত হয়। চুলের শাইনিং ভাব বজায় থাকে। 

পুষ্টিতে ভরপুর পেঁপে:

পেঁপের গুনাগুন

ব্রিটিশ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কাঁচা পেঁপেতে গাজর ও টমেটোর চেয়েও অনেক বেশি ক্যারটিনয়েডস পাওয়া যায়। তাই এটি আমাদের শরীরের ক্যারটিনয়েড ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে পুষ্টির উৎস হিসেবে কাজ করে।

চোখ ভালো রাখতে পেঁপে:

চোখ ভালো রাখতে যেসব খাবার কাজ করে তার মধ্যে একটি হলো পেঁপে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন পাঁকা পেঁপে খেলে তা দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়।পাঁকা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই চোখ ভালো রাখতে প্রতিদিন সকালে পাকা পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ওজন কমাতে ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে পেঁপে: 

পাকা পেঁপেতে যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার থাকায় তা অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। পাশাপাশি বিপাকের হারও বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়াও যারা ওজন কমাতে ডায়েট মেনে খাবার খেয়ে থাকেন, তাদের জন্যও ভালো পাকা পেঁপে। পেঁপেতে কোনো ক্যালোরি নেই, কেবল ফাইবার রয়েছে। যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন সকালে এক বাটি পাকা পেঁপে খেলে উপকার পাবেন দ্রুতই। শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকলে অন্য রোগের আশঙ্কাও কমে আসে।

আরোও পড়ুন

ভাইরাল জ্বর কি, এর লক্ষণ কি কি ? ভাইরাল জ্বর হলে করণীয় কি ?

ক্যান্সারের ঝুঁকি দূরে রাখে

নিয়মিত পেঁপে খেলে কমে ক্যান্সারের ঝুঁকি। কারণ এই ফলে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েড, লুটেইন, ক্রিপ্টোক্সান্থিন। ক্যারোটিন ফুসফুস ও অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে।

ব্রণের দাগ কমাতে পেঁপের ব্যবহার:

ব্রণের সমস্যা প্রায় সবারই থাকে। এসব ব্রণের কারণে মুখে খুব বড় ধরনের দাগ তৈরি হয়। এই বাজে দাগগুলো নিরাময় করতে পারে সুমিষ্ট এই ফলটি। মুখের অন্যান্য যেকোনো দাগ যেমন মেছতা, ফুস্কুরির দাগও খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে।মুখের বিভিন্ন দাগ দূর করার পাশাপাশি পেঁপে ফলটি মুখের উজ্জ্বলতাও ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।

error: Content is protected !!