Skip to content
Home » MT Articles » মসুর ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রান্না প্রণালী।

মসুর ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রান্না প্রণালী।

মসুর ডাল

মসুর ডাল

মসুর ডাল একটি জনপ্রিয় ডাল যা ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলিতে ব্যাপকভাবে খাওয়া হয়।মসুর ডালের ইংরেজি নাম Lentils। এটি একটি ভালো প্রোটিন উৎস এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে।মসুর ডাল বিভিন্ন রঙে পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে লাল, বাদামী, সবুজ এবং কালো। লাল মসুর ডাল সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং এটি সাধারণত চচ্চড়ি, ডালমা এবং অন্যান্য তরকারিতে ব্যবহৃত হয়। বাদামী মসুর ডাল প্রোটিন এবং ফাইবারের একটি ভালো উৎস এবং এটি সাধারণত সুপ এবং সালাদিতে ব্যবহৃত হয়। সবুজ মসুর ডাল একটি কমলা রঙের ডাল যা সাধারণত তরকারি এবং স্যুপ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। কালো মসুর ডাল একটি শক্তিশালী স্বাদের ডাল যা সাধারণত ডালমা এবং অন্যান্য তরকারিতে ব্যবহৃত হয়।

 মসুর ডালের পুষ্টিগুণ:

মসুর ডাল একটি পুষ্টিকর খাবার যাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম মসুর ডালে নিম্নলিখিত পুষ্টিগুণ থাকে:

পুষ্টি উপাদানপরিমাণ
ক্যালোরি116
প্রোটিন28 গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট27 গ্রাম
ফাইবার9 গ্রাম
চর্বি1 গ্রাম
ভিটামিন A10%
ভিটামিন C2%
ভিটামিন B610%
ফলিক অ্যাসিড20%
আয়রন25%
ক্যালসিয়াম7%
পটাসিয়াম10%
ম্যাগনেসিয়াম25%

মসুর ডাল রান্নার উপায়:

মসুর ডাল একটি জনপ্রিয় ডাল যা বিভিন্নভাবে রান্না করা যেতে পারে। এখানে একটি সহজ উপায় রয়েছে মসুর ডাল রান্নার:

উপকরণ:

  • ১ কাপ মসুর ডাল
  • ৪ কাপ পানি
  • ১ টেবিল চামচ তেল
  • ১/২ চা চামচ জিরা
  • ১/২ চা চামচ আদা বাটা
  • ১/২ চা চামচ রসুন বাটা
  • ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
  • ১/২ চা চামচ মরিচ গুঁড়া
  • ১/২ চা চামচ ধনে গুঁড়া
  • ১/২ চা চামচ গরম মশলা গুঁড়া
  • স্বাদমতো লবণ

রান্না প্রণালী:

মসুর ডালের রান্না প্রণালী

১. মসুর ডাল ভালো করে ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।

২. একটি কড়াইতে তেল গরম করে জিরা ফোড়ন দিন।

৩. জিরা ফোটার পর আদা বাটা এবং রসুন বাটা দিয়ে হালকা করে ভাজুন।

৪. এবার হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, এবং গরম মশলা গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন।

৫. কষানো মশলার মধ্যে ভিজিয়ে রাখা মসুর ডাল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।

৬. এবার পানি দিয়ে ঢেকে দিন।

৭. ডাল সিদ্ধ হয়ে এলে স্বাদমতো লবণ দিয়ে নামিয়ে নিন।

টিপস:

  • রান্না করার সময় মসুর ডালে বেশি পানি দেওয়া উচিত নয়। কারণ ডাল ফুলে গেলে পানি কমে যাবে।
  • ডাল সিদ্ধ হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। তাহলে ডাল আরও সুস্বাদু হবে।
  • আপনার পছন্দমতো অন্যান্য মশলাও যোগ করতে পারেন। যেমন, পেঁয়াজ কুচি, টমেটো কুচি, কাঁচা মরিচ ইত্যাদি।

মসুর ডালের উপকারিতা:

প্রোটিন সরবরাহ করে: 

একটি ভালো প্রোটিনের উৎস হলো মসুর ডাল । প্রতি ১০০ গ্রাম মসুর ডালে প্রায় ২৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে। প্রোটিন পেশী তৈরি এবং মেরামত করতে সাহায্য করে।

ফাইবার সরবরাহ করে: 

এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম মসুর ডালে প্রায় ৯ গ্রাম ফাইবার থাকে। ফাইবার হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ সরবরাহ করে: 

মসুর ডালে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ থাকে, যার মধ্যে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফলিক অ্যাসিড।

রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে: 

আরোও পড়ুন

পালংশাকের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে: 

প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে মসুর ডালে, যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে: 

মসুর ডাল রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে: 

প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে মসুর ডালে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে: 

মসুর ডালে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে: 

মসুর ডালে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

মসুর ডালের অপকারিতা/পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

মসুর ডালের অপকারিতা

মসুর ডাল একটি পুষ্টিকর খাবার যাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে। তবে, মসুর ডালের কিছু সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • গ্যাস এবং পেট ফাঁপা: মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা গ্যাস এবং পেট ফাঁপার কারণ হতে পারে। এটি মসুর ডাল রান্না করার আগে ধুয়ে নেওয়া এবং রান্নার সময় বেশি পরিমাণে পানি ব্যবহার করে কমানো যেতে পারে।
  • অ্যালার্জি: কিছু লোকের মসুর ডালের প্রতি অ্যালার্জি হতে পারে। এটি ত্বক ফুসকুড়ি, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
  • কিডনিতে পাথর: মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট থাকে, যা কিডনিতে পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কিডনিতে পাথরের সমস্যা রয়েছে এমন লোকদের মসুর ডাল সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

মসুর ডাল একটি স্বাস্থ্যকর খাবার, তবে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। যদি আপনি মসুর ডালের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

মসুর ডালের অপকারিতা এড়াতে নিম্নলিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করতে পারেন:

  • মসুর ডাল রান্না করার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন। এটি অক্সালেটের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করবে।
  • মসুর ডাল রান্নার সময় বেশি পরিমাণে পানি ব্যবহার করুন। এটি ফাইবারের পরিমাণ কমাতে এবং গ্যাস এবং পেট ফাঁপার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।
  • কিডনিতে পাথরের সমস্যা রয়েছে এমন লোকদের মসুর ডাল সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
error: Content is protected !!