Skip to content
Home » MT Articles » নিপাহ ভাইরাস কি? এটি কিভাবে ছড়ায় ? প্রতিরোধে করনীয় কি?

নিপাহ ভাইরাস কি? এটি কিভাবে ছড়ায় ? প্রতিরোধে করনীয় কি?

নিপাহ ভাইরাস

নিপাহ ভাইরাস:

নিপাহ ভাইরাস হলো একটি বাদুড়বাহিত ভাইরাস যা নিপা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটায় এবং এতে মৃত্যুহার অনেক বেশি। নিপা ভাইরাসজনিত অসংখ্য রোগের প্রাদুর্ভাব দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দেখা দিয়েছে।

নিপাহ ভাইরাসের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Nipah henipavirus। এটি হেনিপাভাইরাস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একটি ছোট, গোলাকার ভাইরাস। ভাইরাসের ব্যাস প্রায় 40-50 ন্যানোমিটার। নিপাহ ভাইরাসের জিনোম RNA দিয়ে তৈরি।

নিপাহ ভাইরাস কিভাবে ছড়ায় ?

নিপাহ ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়?

নিপাহ ভাইরাসের প্রধান বাহক হলো কেশযুক্ত বাদুড়। এই বাদুড়রা সাধারণতঃ খোলা পাত্রে সংগৃহীত খেজুর রস পান করে ও মাঝে মধ্যে প্রস্বাব করে, যার ফলে সেটি নিপাহ ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হতে পারে। মানুষ সাধারণতঃ খেজুর রস পান করার মাধ্যমে বাদুড়ের মলমূত্র থেকে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৩৩৯ জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২৪০ জন মারা গেছেন।

বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সাধারণতঃ ডিসেম্বর থেকে মে মাসের মধ্যে দেখা যায়। খেজুরের রস সংগ্রহের সময় বাদুড়ের মলমূত্র থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। খেজুরের রস পান করাই নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণের প্রধান কারণ। তবে, বাদুড়ের আংশিক খাওয়া ফল বা বাদুড়ের মলমূত্র দ্বারা দূষিত তালের রস বা তাড়ি পান করলেও নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

নিপাহ ভাইরাসের লক্ষণ:

নিপাহ ভাইরাসের লক্ষণ ও উপসর্গগুলি সাধারণতঃ সংক্রমণের ৫-৭ দিন পর দেখা দেয়। লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • জ্বর
  • মাথাব্যথা
  • পেশীতে ব্যথা
  • বমি
  • গলা ব্যথা
  • মাথা ঘোরা
  • তৃষ্ণা
  • বেহুশ হয়ে যাওয়া
  • অসংলগ্ন প্রলাপ

নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের ফলে মৃত্যুহার প্রায় ৭০%।

আরোও পড়ুন

অ্যাজমা রোগ কি? অ্যাজমা রোগের কারণ, লক্ষণ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা।

নিপাহ ভাইরাসের রোগ নির্ণয়:

নিপাহ ভাইরাস রোগ নির্নয়

নিপাহ ভাইরাসের রোগ নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করা যেতে পারে:

  • রক্ত পরীক্ষা: রক্তের নমুনায় নিপাহ ভাইরাসের অ্যান্টিবডি বা ভাইরাসের RNA সনাক্ত করে এই পরীক্ষাটি করা হয়।
  • মূত্র পরীক্ষা: মূত্রের নমুনায় নিপাহ ভাইরাসের RNA সনাক্ত করে এই পরীক্ষাটি করা হয়।
  • মস্তিষ্কের তরল পরীক্ষা: মস্তিষ্কের তরলের নমুনায় নিপাহ ভাইরাসের অ্যান্টিবডি বা ভাইরাসের RNA সনাক্ত করে এই পরীক্ষাটি করা হয়।

নিপাহ ভাইরাসের রোগ নির্ণয়ের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা হলো রক্ত পরীক্ষা। তবে, এই পরীক্ষাটি রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরপরই করা উচিত, কারণ রোগের অগ্রগতির সাথে সাথে ভাইরাসের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং পরীক্ষার ফলাফল নেতিবাচক হতে পারে।

প্রতিরোধের জন্য করনীয়:

নিপাহ ভাইরাসের প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:

  • বাদুড় ও রুগ্ন শূকর থেকে দূরে থাকা
  • বাদুড়ের বর্জ্যমিশ্রিত খেজুরের রস পান না করা
  • বাদুড়ে পুর্ণ কুয়োর জল ব্যবহার না করা
  • খেজুর রস সংগ্রহের সময় সতর্কতা অবলম্বন করা

নিপাহ ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকরী ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। রোগীদেরকে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত:

যক্ষা রোগ কি? যক্ষা রোগের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা।

September 16, 2023

জ্বর কী, কেন হয়, কাদের বেশি হয় ? জ্বর কত প্রকার ?

July 19, 2023

শিশুদের দাঁতব্রাশ কত বছর বয়স থেকে শুরু করা উচিৎ?

August 24, 2023

ফোঁড়া কি? ফোঁড়ার লক্ষণ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা।

September 16, 2023

আমাশয় কি? আমাশয়ের লক্ষণ ও ধরণ। আমাশয় হলে করণীয় কি?

October 29, 2023

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার: শরীরকে সুস্থ রাখার মূল চাবিকাঠি

September 10, 2024

রক্তের চর্বি কি? রক্তের চর্বি বৃদ্ধির কারণ ও কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।

October 29, 2024

ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ভালোমত জানুন। নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন।

July 15, 2023

কিডনির পাথর কি? কিডনিতে পাথর কেন হয়? কিভাবে প্রতিরোধ করবেন?

April 4, 2024

ডায়রিয়া কি? ডায়রিয়ার লক্ষণ ও কারণ। ডায়রিয়া হলে করণীয় কি?

October 30, 2023
error: Content is protected !!