Skip to content
Home » MT Articles » তালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। তাল ফল কেন খাবেন?

তালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। তাল ফল কেন খাবেন?

তালের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা

তাল

তাল পাম পরিবারের একটি বড় গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম হল Borassus flabellifer। এটি ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাওয়া যায়।তাল গাছ খুব দীর্ঘ হতে পারে, উচ্চতায় ৩০ মিটার (১০০ ফুট) পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এর পাতাগুলি বড় এবং পাখার মতো, প্রায় ৩ মিটার (১০ ফুট) লম্বা হতে পারে। তাল গাছের ফলগুলি গোলাকার বা ডিম্বাকৃতি, প্রায় ১০ সেন্টিমিটার (৪ ইঞ্চি) ব্যাস। পাকা অবস্থায় তালের রঙ হলুদ বা লাল। তাল ফল খাওয়ার জন্য উপযুক্ত। এগুলি কাঁচা বা পাকা অবস্থায় খাওয়া যেতে পারে। কাঁচা তাল ফল থেকে তাল ফুলুরি তৈরি করা হয়। পাকা তাল ফল থেকে তাল শাঁস, গুড়, পাটালি, মিছরি, তাড়ি ইত্যাদি তৈরি করা হয়।তাল গাছ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। এর পাতা দিয়ে ছাউনি, হাতপাখা, তালপাতার চাটাই, মাদুর, আঁকার পট, লেখার পুঁথি, কুণ্ডলী, পুতুল ইত্যাদি তৈরি করা হয়। তালের কাণ্ড দিয়ে বাড়ি, নৌকা, হাউস বোট ইত্যাদি তৈরি করা হয়। তাল গাছের রস থেকে মদ, তেল, জ্বালানি ইত্যাদি তৈরি করা হয়।তাল গাছ একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উদ্ভিদ। এটি কৃষি, শিল্প এবং বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তালের পুষ্টিগুণ:

তাল একটি পুষ্টিকর ফল যা ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান সমৃদ্ধ। নিম্নে তাল ফলের পুষ্টি উপাদান পরিমাণ দেওয়া হল:

  • ক্যালোরি: 100 গ্রামে 96
  • প্রোটিন: 1.6 গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট: 22.8 গ্রাম
  • ফ্যাট: 0.2 গ্রাম
  • ফাইবার: 2.4 গ্রাম
  • ভিটামিন এ: 31%
  • ভিটামিন সি: 40%
  • ভিটামিন বি1: 15%
  • ভিটামিন বি2: 12%
  • ভিটামিন বি3: 10%
  • ভিটামিন বি6: 10%
  • ভিটামিন ই: 5%
  • ক্যালসিয়াম: 20%
  • আয়রন: 10%
  • পটাসিয়াম: 20%
  • ম্যাগনেসিয়াম: 10%
  • ফসফরাস: 10%

তাল ফলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান হল ভিটামিন সি। তাল ফল ভিটামিন সি-এর একটি দুর্দান্ত উৎস, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, কোষগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
তাল ফল অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যেমন ভিটামিন বি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনও সমৃদ্ধ। ভিটামিন বি বিপাক এবং শক্তি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আয়রন রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
তাই, তাল ফল একটি স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার। এটি নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে পারেন।

তালের উপকারিতা:

তালের উপকারিতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাল:

এই ফলটি ভিটামিন সি-এর একটি দুর্দান্ত উৎস, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, কোষগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:

তাল ফল ফাইবার সমৃদ্ধ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

হজমশক্তি বাড়ায় তাল:

এই ফলটি পাচক এনজাইমগুলির কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে, যা হজমশক্তি বাড়ায়।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়:

তাল ফল পটাসিয়াম সমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

আরোও পড়ুন

পেঁপের পুষ্টি উপাদান, গুণাগুণ ও উপকারিতা

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:

ইহা ভিটামিন বি সমৃদ্ধ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

শক্তি জোগায়:

তাল ফল ক্যালোরি সমৃদ্ধ, যা শক্তি জোগায়।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায় তাল:

এটি ভিটামিন বি সমৃদ্ধ, যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী:

ইহা ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ, যা দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

ত্বকের জন্য উপকারী:

তাল ফল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

তালের অপকারিতা:

তালের অপকারিতা

তাল একটি পুষ্টিকর ফল, তবে এতে কিছু অপকারিতাও রয়েছে। তালের অপকারিতাগুলি হল:

  • অতিরিক্ত পরিমাণে তাল ফল খেলে পেট খারাপ হতে পারে।
  • তাল ফলের শাঁসে ট্যানিন থাকায় এটি খাওয়ার পর কিছু লোকের মাথাব্যথা হতে পারে।
  • তাল ফলের শাঁসে ল্যাক্সিটিভ উপাদান থাকায় এটি খাওয়ার পর ডায়রিয়া হতে পারে।
  • তাল ফলের শাঁসে কিছু অ্যালার্জেন থাকায় এটি খেয়ে কিছু লোকের অ্যালার্জি হতে পারে।
  • তাল ফলের শাঁসে কিছু টক্সিন থাকায় এটি খাওয়ার পর কিছু লোকের অসুস্থ বোধ হতে পারে।
  • তাই, তাল ফল নিয়মিত খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অতিরিক্ত পরিমাণে তাল ফল খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও, তাল ফলের শাঁস খাওয়ার আগে এটি ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া উচিত।

তাল ফলের অপকারিতাগুলি এড়ানোর জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত:

  • তাল ফল খাওয়ার আগে এটি ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে তাল ফল খাওয়া উচিত নয়।
  • তাল ফলের শাঁস খাওয়ার পর যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয় তবে তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

সম্পর্কিত:

বাইন মাছ: স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এক খাবার। স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদুও বটে।

December 9, 2024

হরিতকির উপকারিতা, অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম।

March 10, 2024

দারুচিনি কি? দারুচিনির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

December 6, 2023

রয়না মাছ: "স্বাস্থ্যের জন্য একটি আশীর্বাদ"

November 21, 2024

আলুর কি ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে। আলু খেলে কি কি উপকার ও অপকার হতে পারে?

September 2, 2023

সোনাপাতা কি? সোনাপাতার অজানা ভেষজগুণ সম্পর্কে জানুন।

March 28, 2024

জামরুলের উপকারিতা ও অপকারিতা। জামরুল কেন খাবেন ?

July 26, 2023

মৃগেল মাছের সুস্বাদু যত সব রেসিপি।

January 25, 2024

লাউয়ের যত পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। লাউ কেন খাবেন?

September 2, 2023

মসুর ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রান্না প্রণালী।

September 18, 2023
error: Content is protected !!