মিষ্টি কুমড়া
মিষ্টি কুমড়ার ইংরজি নাম “Pumpkin”। মিষ্টি কুমড়া হল এক প্রকার ফল জাতীয় সবজি। এটি কুমড়া পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। মিষ্টি কুমড়ার বৈজ্ঞানিক নাম Cucurbita moschata। এটি একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি।যত দিন বাঁচবেন, সুস্থ চোখ নিয়ে বাঁচবেন বলে ভাবছেন? কিংবা ত্বকের কমনীয়তা কী করে বাড়ানো যায়, সে উপায় খুঁজছেন? চিকিৎসক বা বিউটিশিয়ানের কাছে না ছুটে আজ থেকে নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া রাখুন খাদ্যতালিকায়। আপনার চোখ ও ত্বকের যত্নের ভার অনায়াসেই ছেড়ে দিতে পারেন পুষ্টিকর এই সবজির ওপর।
ঘন্ট কিংবা ভাজি, যেভাবেই খান না কেন, মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টি উপাদান অক্ষুণ্ন থাকে। পশ্চিমারা এই সবজি দিয়ে মজাদার পাই তৈরি করে। পামকিন পাই বিশ্বজুড়েই সমাদৃত। এই সবজির খোসা থেকে বিচি—সবটাই ভক্ষণযোগ্য। এক কথায় এই সবজির ফেলনা নয় কিছুই।
প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানের ‘পাওয়ার হাউস’ বলা যেতে পারে মিষ্টি কুমড়াকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত খাদ্যতালিকায় মিষ্টি কুমড়া রাখলে কেবল চোখ ও ত্বক সুস্থ থাকে না, এড়ানো যায় অনেক অসুখ-বিসুখ।
মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ:
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ (১০০ গ্রাম) |
শক্তি | ২৬ কিলোক্যালরি |
কার্বোহাইড্রেট | ৬ গ্রাম |
প্রোটিন | ২ গ্রাম |
ভিটামিন |
ভিটামিন
* ভিটামিন সি: ১৯ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন এ: ২,৭৬৪ আইইউ
* ভিটামিন বি১: ০.০৫ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি২: ০.০৬ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি৩: ০.৪ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি৫: ০.০৮ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি৬: ০.০৯ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি৯: ৪৩ মাইক্রোগ্রাম
খনিজ
* পটাসিয়াম: ৪১৫ মিলিগ্রাম
* ক্যালসিয়াম: ১৬ মিলিগ্রাম
* আয়রন: ১ মিলিগ্রাম
* ম্যাগনেসিয়াম: ১৫ মিলিগ্রাম
* ফসফরাস: ৪৩ মিলিগ্রাম
* জিঙ্ক: ০.৪ মিলিগ্রাম
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা:
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
হজমশক্তি বৃদ্ধি করে মিষ্টি কুমড়া:
এই সবজিটিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফাইবার খাবার হজম করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে মিষ্টি কুমড়া:
মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী মিষ্টি কুমড়া:
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও পটাশিয়াম থাকে মিষ্টি কুমড়ায়। ভিটামিন সি ত্বককে উজ্বল ও মসৃণ করে। ভিটামিন এ ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। পটাশিয়াম ত্বককে ব্রণ ও অন্যান্য সমস্যা থেকে রক্ষা করে। মিষ্টি কুমড়ায় থাকা বিটাক্যারোটিন ত্বকের বলিরেখা দূর করে এবং চুল পড়া রোধ করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে:
ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম মিষ্টি কুমড়ায়। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফাইবার খাবার হজম করতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে ওজন কমাতে সাহায্য হয়।
হৃদরোগ প্রতিরোধ করে:
প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে মিষ্টি কুমড়ায় । পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য হয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে মিষ্টি কুমড়া:
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহকে ক্ষতিকর উপাদান থেকে রক্ষা করে।মিষ্টি কুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। তাই নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য হয়।
মিষ্টি কুমড়ার অপকারিতা:
একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি মিষ্টি কুমড়া। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে শরীর সুস্থ ও সবল থাকে। তবে, মিষ্টি কুমড়ার কিছু অপকারিতাও রয়েছে।
মিষ্টি কুমড়ার অপকারিতাগুলো নিম্নরূপ:
- কিডনি রোগীদের মিষ্টি কুমড়া কম খাওয়া উচিত। মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। কিডনি রোগীদের পটাশিয়াম কম খেতে হয়। তাই কিডনি রোগীদের মিষ্টি কুমড়া কম খাওয়া উচিত।
- যারা মিষ্টি কুমড়ার প্রতি অ্যালার্জি আছে, তাদের মিষ্টি কুমড়া খাওয়া উচিত নয়। মিষ্টি কুমড়ায় কিছু অ্যালার্জেন থাকতে পারে। তাই যারা মিষ্টি কুমড়ার প্রতি অ্যালার্জি আছে, তাদের মিষ্টি কুমড়া খাওয়া উচিত নয়।
মিষ্টি কুমড়ার অপকারিতা এড়াতে হলে মিষ্টি কুমড়া পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। কিডনি রোগী এবং মিষ্টি কুমড়ার প্রতি অ্যালার্জি আছে এমন ব্যক্তিদের মিষ্টি কুমড়া এড়িয়ে চলা উচিত।