বেগুন
শুধু স্বাদের কারণে নয়, বেগুন শরীরের পুষ্টি পূরণের প্রয়োজনীয় সবজি হিসেবেও বিবেচিত। কমবেশি বারো মাসই বাজারে থাকে বেগুন। তবে বেগুন যখন বেগুনি হয়ে ইফতারে শামিল হয়, তখন তার কদর যেমন বাড়ে, দামও তেমন বাড়ে। তবে শুধু বেগুনি কেন? ভর্তা, ভাজি, ঝোলেও বেগুন জনপ্রিয়। বেগুনের ইংরেজি নাম “Brinjal”। বেগুন গাছ প্রায় ৪০ থেকে ১৫০ সেমি দীর্ঘ হয়। পাতাগুলো ঘন এবং প্রায় ১০ থেকে ২০ সেমি দীর্ঘ ও ৫ থেকে ১০সেমি প্রশস্ত হয়। বেগুনের ফলের রং সাধারণত বেগুনি হয়, তবে সাদা, হলুদ, সবুজ, লাল ইত্যাদি রঙের বেগুনও পাওয়া যায়।
বেগুনের পুষ্টিগুণ:
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ (১০০ গ্রাম) |
শক্তি | ২৯ কিলোক্যালরি |
কার্বোহাইড্রেট | ৬ গ্রাম |
প্রোটিন | ২ গ্রাম |
ভিটামিন
* ভিটামিন সি: ১৭ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি১: ০.০৫ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি২: ০.০৬ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি৩: ০.৪ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি৫: ০.০৮ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি৬: ০.০৯ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন বি৯: ৪৩ মাইক্রোগ্রাম
খনিজ
* পটাসিয়াম: ৪০৮ মিলিগ্রাম
* ক্যালসিয়াম: ১৬ মিলিগ্রাম
* আয়রন: ১ মিলিগ্রাম
* ম্যাগনেসিয়াম: ১৫ মিলিগ্রাম
* ফসফরাস: ৪৩ মিলিগ্রাম
* জিঙ্ক: ০.৪ মিলিগ্রাম
বেগুনের উপকারিতা:
![বেগুনের উপকারিতা](https://mtsolutionbd.com/wp-content/uploads/2023/09/Beguner-Upokarita.jpg)
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
বেগুনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
হজমশক্তি বৃদ্ধি করে:
বেগুনে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। ফাইবার খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে:
বেগুনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী:
বেগুনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও পটাশিয়াম রয়েছে। ভিটামিন সি ত্বককে উজ্বল ও মসৃণ করে। ভিটামিন এ ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। পটাশিয়াম ত্বককে ব্রণ ও অন্যান্য সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
আরোও পড়ুন
গাজরের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।
ওজন কমাতে সাহায্য করে:
বেগুনে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফাইবার খাবার হজম করতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত বেগুন খেলে ওজন কমাতে সাহায্য হয়।
হৃদরোগ প্রতিরোধ করে:
বেগুনে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে:
বেগুনে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
এছাড়াও, বেগুন রক্তচাপ কমাতে, প্রস্রাবের সমস্যা দূর করতে, জ্বর ও সর্দি-কাশি দূর করতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, এবং অ্যালার্জি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
বেগুনের অপকারিতা:
![বেগুনের অপকারিতা](https://mtsolutionbd.com/wp-content/uploads/2023/09/Beguner-Opokarita.jpg)
বেগুন হল এক প্রকারের ফল যা সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। বেগুনে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তবে, বেগুনের কিছু অপকারিতাও রয়েছে।
বেগুনের অপকারিতাগুলো নিম্নরূপ:
- বেগুনে অক্সালিক অ্যাসিড থাকে। অক্সালিক অ্যাসিড গলা চুলকানি এবং কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে। তাই বেগুন রান্না করার সময় লেবুর রস বা সিরকা যোগ করলে অক্সালিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায়। এতে গলা চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- কিডনি রোগীদের বেগুন কম খাওয়া উচিত। বেগুনে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। কিডনি রোগীদের পটাশিয়াম কম খেতে হয়। তাই কিডনি রোগীদের বেগুন কম খাওয়া উচিত।
- যারা বেগুনের প্রতি অ্যালার্জি আছে, তাদের বেগুন খাওয়া উচিত নয়। বেগুনে কিছু অ্যালার্জেন থাকতে পারে। তাই যারা বেগুনের প্রতি অ্যালার্জি আছে, তাদের বেগুন খাওয়া উচিত নয়।
বেগুনের অপকারিতা এড়াতে হলে বেগুন পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। কিডনি রোগী এবং বেগুনের প্রতি অ্যালার্জি আছে এমন ব্যক্তিদের বেগুন এড়িয়ে চলা উচিত।