Skip to content
Home » MT Articles » সিলভার কাপ মাছ এর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও সুস্বাদু রেসিপি।

সিলভার কাপ মাছ এর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও সুস্বাদু রেসিপি।

সিলভার কাপ মাছ

সিলভার কাপ মাছ

সিলভার কাপ মাছ, যা রুপালি কাচনি নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের একটি স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় এমন একটি সুস্বাদু মাছ। এটি সিপ্রিনিডি পরিবারের সদস্য। এটি বড় চ্যাপ্টা এবং একে রুপালী রঙের শরীর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।

সিলভার কাপ মাছ এর বৈশিষ্ট্য:

১) আকার: ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।

২) রঙ: রুপালী শরীর, সাদা পেট।

৩) বৈশিষ্ট্য: বড় চোখ, দীর্ঘ ঠোঁট।

৪) বাসস্থান: মিষ্টি ও লবণাক্ত জল, বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার স্থানীয়।

৫) খাদ্য: প্ল্যাঙ্কটন, ছোট মাছ, পোকামাকড়।

৬) প্রজনন: ডিম পাড়ে।

৭) মাছ ধরার মৌসুম: সারা বছর ধরে, তবে শীতকালে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।

সিলভার কাপ মাছের পুষ্টিগুণ:

পুষ্টি উপাদানপরিমাণ (১০০ গ্রাম মাংসের জন্য)
ক্যালোরি109
প্রোটিন20.4 গ্রাম
চর্বি1.9 গ্রাম
স্যাচুরেটেড ফ্যাট0.4 গ্রাম
মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট0.6 গ্রাম
পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট0.9 গ্রাম
কোলেস্টেরল50 মিলিগ্রাম
কার্বোহাইড্রেট0.1 গ্রাম
ফাইবার0 গ্রাম
চিনি0 গ্রাম
সোডিয়াম60 মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম320 মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম10 মিলিগ্রাম
আয়রন1.3 মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম27 মিলিগ্রাম
ফসফরাস200 মিলিগ্রাম
জিঙ্ক0.8 মিলিগ্রাম
ভিটামিন A100 আন্তর্জাতিক ইউনিট
ভিটামিন B1 (থায়ামিন)0.1 মিলিগ্রাম
ভিটামিন B2 (রিবোফ্লাভিন)0.1 মিলিগ্রাম
ভিটামিন B3 (নিয়াসিন)3.3 মিলিগ্রাম
ভিটামিন B6 (পাইরিডোক্সিন)0.1 মিলিগ্রাম
ভিটামিন B12 (কোবালমিন)2.0 মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন C10 মিলিগ্রাম
ভিটামিন D0 আন্তর্জাতিক ইউনিট
ভিটামিন E1.5 মিলিগ্রাম
সিলভার কাপ মাছের পুষ্টিগুণ

সিলভার কাপ মাছের উপকারিতা:

পুষ্টি:

  • প্রোটিন: সিলভার কাপ মাছ প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস, যা পেশী গঠন এবং মেরামতের জন্য অপরিহার্য।
  • ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড: এই মাছে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি, যা হৃদরোগ, প্রদাহ এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন এবং খনিজ: সিলভার কাপ মাছে ভিটামিন A, D, B12, সেলেনিয়াম এবং ফসফরাস সহ বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে।

স্বাস্থ্য:

  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তচাপ কমাতে, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে এবং HDL (“ভাল”) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে: ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কোষের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং স্মৃতি, মনোযোগ এবং মেজাজ উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
  • প্রদাহ কমায়: ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা গেঁটেবাত, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
  • চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: সিলভার কাপ মাছে ভিটামিন A থাকে, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
  • হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: সিলভার কাপ মাছে ভিটামিন D এবং ক্যালসিয়াম থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

আরোও পড়ুন

পাংগাস মাছ এর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও সুস্বাদু রেসিপি।

অন্যান্য:

  • কম ক্যালোরি: এই মাছে ক্যালোরি কম থাকে, তাই এটি ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ভালো খাবার।
  • সুস্বাদু: এই মাছ সুস্বাদু এবং বিভিন্নভাবে রান্না করা যেতে পারে।

সিলভার কাপ মাছের অপকারিতা:

১) অ্যালার্জি:

  • কিছু লোকের সিলভার কাপ মাছের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে।
  • অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ফুসকুড়ি, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট, এবং এমনকি অ্যানাফিল্যাক্সিস।
  • আপনার যদি মাছের অ্যালার্জির ইতিহাস থাকে, তাহলে সিলভার কাপ মাছ এড়িয়ে চলা উচিত।

২) হাড়ের অংশ:

  • সিলভার কাপ মাছে ছোট ছোট হাড় থাকতে পারে যা গিলে ফেললে বিপজ্জনক হতে পারে।
  • বিশেষ করে বাচ্চাদের এবং বয়স্কদের সাবধানে মাছ খাওয়া উচিত এবং হাড় বের করে ফেলা উচিত।

সিলভার কাপ মাছের রেসিপি:

মাছের ঝোল:

উপকরণ:

  • সিলভার কাপ মাছ – ১ কেজি (মাঝারি আকারের)
  • পেঁয়াজ – ২ টি (বড়, কুঁচি করে কাটা)
  • আদা – ১ ইঞ্চি (কুঁচি করে কাটা)
  • রসুন – ৫ কোয়া (কুঁচি করে কাটা)
  • টমেটো – ২ টি (বড়, কুঁচি করে কাটা)
  • হলুদ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • মরিচ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • জিরা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • ধনে গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • লবণ – স্বাদ অনুযায়ী
  • তেল – ৪ টেবিল চামচ
  • ধনেপাতা – কুঁচি করে কাটা (সাজানোর জন্য)
সিলভার কাপ মাছের ঝোল

রান্না প্রণালী:

  1. মাছ ধুয়ে লবণ মাখিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন।
  2. একটি কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি বাদামী করে ভেজে নিন।
  3. আদা, রসুন কুঁচি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভাজুন।
  4. টমেটো কুঁচি, হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো এবং ধনে গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
  5. কিছুক্ষণ মসলা কষিয়ে নিন।
  6. জল দিয়ে ঝোল পাতলা করে নিন।
  7. লবণ দিয়ে স্বাদমতো মশলা করুন।
  8. ঝোল ফুটে উঠলে মাছগুলো দিয়ে ঢেকে দিন।
  9. মাছ সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
  10. ধনেপাতা কুঁচি ছড়িয়ে গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।

পরিবেশন:

গরম ভাতের সাথে সিলভার কাপ মাছের ঝোল পরিবেশন করুন। ঝোলের সাথে রুটি বা পরোটাও খাওয়া যায়।

মাছের ভুনা:

উপকরণ:

  • সিলভার কাপ মাছ – ১ কেজি (মাঝারি আকারের)
  • পেঁয়াজ – ২ টি (বড়, কুঁচি করে কাটা)
  • আদা – ১ ইঞ্চি (কুঁচি করে কাটা)
  • রসুন – ৫ কোয়া (কুঁচি করে কাটা)
  • হলুদ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • মরিচ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • জিরা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • ধনে গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • লবণ – স্বাদ অনুযায়ী
  • তেল – ৪ টেবিল চামচ
  • ধনেপাতা – কুঁচি করে কাটা (সাজানোর জন্য)
সিলভার কাপ মাছ ভুনা

রান্না প্রণালী:

  1. মাছ ধুয়ে লবণ মাখিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন।
  2. একটি কড়াইতে তেল গরম করে মাছগুলো দিয়ে হালকা করে ভেজে নিন।
  3. পেঁয়াজ কুঁচি, আদা কুঁচি এবং রসুন কুঁচি দিয়ে ভালো করে ভেজে নিন।
  4. হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো এবং ধনে গুঁড়ো দিয়ে মসলা কষিয়ে নিন।
  5. কিছুক্ষণ মসলা কষিয়ে নিন।
  6. লবণ দিয়ে স্বাদমতো মশলা করুন।
  7. ঢেকে দিয়ে মাছ সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
  8. ধনেপাতা কুঁচি ছড়িয়ে গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।

পরিবেশন:

গরম ভাতের সাথে সিলভার কাপ মাছের ভুনা পরিবেশন করুন। ভুনার সাথে রুটি বা পরোটাও খাওয়া যায়।

টিপস:

  • ভুনা আরও সুস্বাদু করার জন্য, আপনি তেজপাতা, লবঙ্গ, এলাচ এবং দারচিনি যোগ করতে পারেন।
  • আপনি যদি ঝাল পছন্দ করেন, তাহলে ভুনায় আরও মরিচ গুঁড়ো যোগ করতে পারেন।
  • ভুনার সাথে আলু, ফুলকপি, বা অন্যান্য সবজি যোগ করতে পারেন।

মাছ ভাজা:

উপকরণ:

  • সিলভার কাপ মাছ – 1 কেজি (মাঝারি আকারের)
  • পেঁয়াজ – 2 টি (বড়, কুঁচি করে কাটা)
  • আদা – 1 ইঞ্চি (কুঁচি করে কাটা)
  • রসুন – 5 কোয়া (কুঁচি করে কাটা)
  • হলুদ গুঁড়ো – 1 চা চামচ
  • মরিচ গুঁড়ো – 1 চা চামচ
  • জিরা গুঁড়ো – 1/2 চা চামচ
  • ধনে গুঁড়ো – 1/2 চা চামচ
  • লবণ – স্বাদ অনুযায়ী
  • হলুদ – 1/2 চা চামচ (ঐচ্ছিক)
  • মরিচ গুঁড়ো – 1/4 চা চামচ (ঐচ্ছিক)
  • তেল – ভাজার জন্য
  • ধনেপাতা – কুঁচি করে কাটা (সাজানোর জন্য)
মাছ ভাজা

রান্না প্রণালী:

  1. মাছ ধুয়ে লবণ মাখিয়ে 15 মিনিট রেখে দিন।
  2. একটি পাত্রে হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো এবং লবণ মিশিয়ে মসলা তৈরি করুন।
  3. প্রতিটি মাছে মসলা মাখিয়ে 10 মিনিট রেখে দিন।
  4. একটি কড়াইতে তেল গরম করে মাঝারি আঁচে মাছ ভেজে নিন।
  5. মাছের দুপাশ সোনালী বাদামী করে ভাজুন।
  6. ভাজা হয়ে গেলে, একটি প্লেটে তুলে নিন।
  7. ধনেপাতা কুঁচি ছড়িয়ে গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।

পরিবেশন:

গরম ভাত, রুটি, পরোটা, লুচি, বা পোলাওর সাথে সিলভার কাপ মাছ ভাজা পরিবেশন করুন।

টিপস:

  • আপনি যদি ঝাল পছন্দ করেন, তাহলে মসলায় আরও মরিচ গুঁড়ো যোগ করতে পারেন।
  • ভাজার সময় তেল বেশি গরম হলে মাছ পুড়ে যেতে পারে। তাই মাঝারি আঁচে ভাজুন।
  • আপনি যদি চান, তাহলে ভাজার আগে মাছে অল্প করে আটা মাখিয়ে নিতে পারেন। এতে মাছ আরও মুচমুচে হবে।
  • ভাজা মাছের সাথে লেবুর রস, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ কুঁচি, বা টমেটো কুঁচি পরিবেশন করুন।

This article is written with the help of Gemini

error: Content is protected !!