Skip to content
Home » MT Articles » প্লেগ কি? এটি কত ধরনের হয়? প্লেগের লক্ষণ ও চিকিৎসা।

প্লেগ কি? এটি কত ধরনের হয়? প্লেগের লক্ষণ ও চিকিৎসা।

প্লেগ

প্লেগ কি?

বাংলায় প্লেগ রোগকে “মড়ক” বা “কালো মৃত্যু” বলা হয়। এটি একটি সংক্রামক ব্যাধি যা ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত ইঁদুর এবং অন্যান্য ছোট প্রাণীদের মধ্যে পাওয়া যায়। ইঁদুরের মাছির মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

প্লেগের ধরন:

প্লেগের তিনটি প্রধান ধরন রয়েছে:

  • বিউবনিক প্লেগ: এই ধরনটি সবচেয়ে সাধারণ। এটি সাধারণত ইঁদুরের মাছির কামড়ের মাধ্যমে হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বকের নিচে ফোলা ফোলা দাগ দেখা দেয়। এই দাগগুলি ফুলে যায় এবং ব্যথা হতে পারে।
  • সেপ্টিসেমিক প্লেগ: এই ধরনটি তখন হয় যখন ব্যাকটেরিয়া রক্ত ​​প্রবাহে প্রবেশ করে। এটি বিউবনিক প্লেগ থেকেও হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর, শরীরে ব্যথা, এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
  • নিউমোনিক প্লেগ: এই ধরনটি তখন হয় যখন ব্যাকটেরিয়া ফুসফুসে সংক্রমণ করে। এটি আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি, শ্বাসকষ্ট, এবং বুকে ব্যথা হতে পারে।
কালো মৃত্যু
কালো মৃত্যু

মধ্যযুগে এই রোগটি একটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই মহামারীটিকে “কালো মৃত্যু” বলা হয়। এই মহামারীতে ইউরোপের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা মারা গিয়েছিল।

প্লেগ রোগের লক্ষণ:

এর লক্ষণগুলি সাধারনত সংক্রমণের ধরণের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়।

বিউবনিক প্লেগের লক্ষণ

  • ত্বকের নিচে ফোলা ফোলা দাগ (ফোড়া), সাধারণত লং, কুঁচকি বা ঘাড়ে দেখা দেয়।
  • জ্বর
  • মাথাব্যথা
  • কাঁপুনি
  • ক্লান্তি
  • পেশী ব্যথা

সেপ্টিসেমিক প্লেগের লক্ষণ

  • জ্বর
  • শরীরে ব্যথা
  • শ্বাসকষ্ট
  • মাথা ঘোরা
  • শক

নিউমোনিক প্লেগের লক্ষণ

  • জ্বর
  • কাশি
  • শ্বাসকষ্ট
  • বুকে ব্যথা
  • ঘাম
  • স্তন্যপায়ী গ্রন্থিগুলির ফোলা
প্লেগ রোগের লক্ষণ
রোগের লক্ষণ

প্লেগের লক্ষণগুলি সাধারণত সংক্রমণের 1 থেকে 6 দিনের মধ্যে দেখা দেয়। যদি আপনি এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করেন তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করুন।

প্লেগ কেন হয়?

এ রোগটি ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত ইঁদুর এবং অন্যান্য ছোট প্রাণীদের মধ্যে পাওয়া যায়। ইঁদুরের মাছির মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

প্লেগের তিনটি প্রধান ধরন রয়েছে:

  • বিউবনিক প্লেগ: এই ধরনটি সবচেয়ে সাধারণ। এটি সাধারণত ইঁদুরের মাছির কামড়ের মাধ্যমে হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বকের নিচে ফোলা ফোলা দাগ দেখা দেয়। এই দাগগুলি ফুলে যায় এবং ব্যথা হতে পারে।
  • সেপ্টিসেমিক প্লেগ: এই ধরনটি তখন হয় যখন ব্যাকটেরিয়া রক্ত ​​প্রবাহে প্রবেশ করে। এটি বিউবনিক প্লেগ থেকেও হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর, শরীরে ব্যথা, এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
  • নিউমোনিক প্লেগ: এই ধরনটি তখন হয় যখন ব্যাকটেরিয়া ফুসফুসে সংক্রমণ করে। এটি আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি, শ্বাসকষ্ট, এবং বুকে ব্যথা হতে পারে।

আরোও পড়ুন

রোটাভাইরাস কি? রোটাভাইরাস সংক্রমণ এর লক্ষণ, কারণ ও করনীয়।

প্লেগ কিভাবে ছড়ায়?

প্লেগ কিভাবে ছড়ায়
কিভাবে ছড়ায় এ রোগ

প্লেগ ছড়ানোর তিনটি প্রধান উপায় হল:

  • ইঁদুরের মাছির কামড়: ইঁদুরের মাছিগুলি ইঁদুরের দেহ থেকে ব্যাকটেরিয়া বহন করে। তারা কামড় দেওয়ার সময় এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
  • সংক্রমিত ইঁদুরের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ: সংক্রমিত ইঁদুরের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে, যেমন ইঁদুরের মৃতদেহ স্পর্শ করা, ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
  • সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ: সংক্রমিত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ব্যাকটেরিয়া শ্বাসের মাধ্যমে অন্য ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

প্লেগের চিকিৎসা:

প্লেগ হল একটি গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ যা ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়।

প্লেগের চিকিৎসা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে করা হয়। বিউবনিক প্লেগের জন্য, অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সাধারণত তিন থেকে সাত দিনের জন্য দেওয়া হয়। প্লেউরাল এবং নিউমোনিক প্লেগের জন্য, অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সাধারণত দুই সপ্তাহের জন্য দেওয়া হয়।

প্লেগের চিকিৎসার পাশাপাশি, রোগীদের প্রায়শই নিম্নলিখিত সহায়ক চিকিৎসা দেওয়া হয়:

  • তরল: রোগীদের প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা উচিত, বিশেষ করে যদি তাদের ডায়রিয়া বা বমি হয়।
  • ব্যথা উপশম: ব্যথা উপশমের জন্য ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
  • জ্বর উপশম: জ্বর উপশমের জন্য অ্যান্টিপাইরেটিক ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।

এ রোগের চিকিৎসার ফলাফল সংক্রমণের ধরন এবং প্রাথমিক চিকিৎসার সময়কালের উপর নির্ভর করে। বিউবনিক প্লেগ আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর হার সাধারণত 10% থেকে 20% হয়। প্লেউরাল এবং নিউমোনিক প্লেগ আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর হার 50% থেকে 90% হতে পারে।

প্রতিরোধের জন্য করনীয়:

প্লেগ প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:

  • ইঁদুর এবং অন্যান্য প্রাণীদের উপদ্রব দূর করুন।
  • পোকামাকড় প্রতিরোধক ব্যবহার করুন।
  • সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।

এটি বাংলাদেশে একটি বিরল রোগ। তবে, নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে প্লেগের ঝুঁকি বাড়ে:

  • ইঁদুর এবং অন্যান্য প্রাণীর উপদ্রব সহ এলাকায় বসবাস।
  • পোকামাকড় প্রতিরোধক ব্যবহার না করা।
  • সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা।

প্লেগের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

সম্পর্কিত:

এইচএমপিভি কি ভয়ঙ্কর? কিভাবে ছড়ায় এবং কি কি সতর্কতা নেবেন।

January 19, 2025

ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন

July 13, 2023

চোখের ছানি কি? কেন হয়? এর চিকিৎসা কি ও প্রতিরোধ করবেন কিভাবে?

November 10, 2024

ভাইরাল জ্বর কি, এর লক্ষণ কি কি ? ভাইরাল জ্বর হলে করণীয় কি ?

July 19, 2023

কান এর যত্নে করনীয় কি?

November 29, 2023

ডায়রিয়া কি? ডায়রিয়ার লক্ষণ ও কারণ। ডায়রিয়া হলে করণীয় কি?

October 30, 2023

লিভারের কাজ ও গুরুত্ব কি? লিভার ভাল রাখতে করনীয় কি?

June 30, 2024

রক্তের চর্বি কি? রক্তের চর্বি বৃদ্ধির কারণ ও কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।

October 29, 2024

অ্যাজমা রোগ কি? অ্যাজমা রোগের কারণ, লক্ষণ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা।

September 17, 2023

টাইফয়েড জ্বর কেন হয়? এর লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা।

July 18, 2023
error: Content is protected !!