Skip to content
Home » MT Articles » পেয়ারার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ।পেয়ারা কেন খাবেন ?

পেয়ারার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ।পেয়ারা কেন খাবেন ?

পেয়ারার উপকারিতা

পেয়ারা

সারা বছর পাওয়া যায়, এমন একটি ফল পেয়ারা। দেশীয় এই ফল দামে সস্তা ও সহজলভ্য। অন্যান্য ফলের তুলনায় পেয়ারার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা আমলকী ছাড়া অন্য যেকোনো ফলে পাওয়া যায় না। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ পেয়ারায় রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।

পেয়ারার পুষ্টিগুণ:

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি পেয়ারায় ৪টি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ, বিশেষ করে ভিটামিন সি রয়েছে। একটি পেয়ারায় রয়েছে চারটি আপেল ও চারটি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ। এতে আছে প্রচুর পরিমাণ পানি, ফাইবার, ভিটামিন এ, বি, কে, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও খনিজ পদার্থ। 

পেয়ারার পুষ্টি উপাদান:

  • ক্যালোরি: 105
  • কার্বোহাইড্রেট: 27 গ্রাম
  • প্রোটিন: 1 গ্রাম
  • ফ্যাট: 0.5 গ্রাম
  • ফাইবার: 5 গ্রাম
  • ভিটামিন সি: 17% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ভিটামিন কে: 18% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • পটাশিয়াম: 10% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ম্যাগনেসিয়াম: 5% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ভিটামিন বি6: 10% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ফোলেট: 10% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)

পেয়ারার উপকারিতা:

পেয়ারার উপকারিতা

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে: ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে খুব কাজ দেয় পেয়ারা। পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস-মেলিটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পেয়ারা পাতাও বেশ কার্যকরী।পেয়ারায় যে আঁশ আছে, তা শরীরে চিনি শোষণ কমাতে পারে। তাই নিয়মিত পেয়ারা খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে। দেহের কোথাও কেটে গেলে ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।পেয়ারায় বিদ্যমান ভিটামিন ‘সি’ শরীরের ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্তচাপ ও রক্তের লিপিড কমে আসে। পেয়ারাতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। লাইকোপিনসমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা নিয়মিত খেলে তা কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকিও কমিয়ে আনতে সহায়তা করে।

পেটের সমস্যায় উপকারী: যেকোনো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বা পেটের গোলযোগে সবচেয়ে কার্যকরী হলো পেয়ারা। এ ছাড়া এই ফলের রস কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশয়সহ পেটের অসুখ সারাতে খুব ভালো কাজ করে। পেয়ারা ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে: ক্যানসার প্রতিরোধেও পেয়ারা খুব ভালো কাজ করে। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, লাইকোপেন, ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারে এই ফল। প্রোস্টেট ও স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে পেয়ারা খুবই উপকারী।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে: কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ–এর ভালো উৎস। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখা প্রয়োজন।

ঠান্ডাজনিত সমস্যায় উপকারী: শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা লাগা, সর্দি–কাশিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে পেয়ারা। বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত সমস্যা, যেমন ব্রঙ্কাইটিস প্রতিরোধ করে পেয়ারা। আয়রন এবং ভিটামিন সি থাকায় পেয়ারা শ্লেষ্মা কমিয়ে দেয়।

আরোও

টাইফয়েডের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা।

স্ট্রেস দূর করতে সাহায্য করে: স্ট্রেস দূর করতে দারুণ কাজ করে পেয়ারা। পেশি আর স্নায়ুর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। চাপ কমায়, শক্তি বাড়ায়।

ত্বক ও চুলের পরিচর্যায়: পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণ পানি থাকে, যা ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের রুক্ষ ভাব দূর করে ও শীতে পা ফাটা রোধ করে। তারুণ্য ধরে রাখে দীর্ঘদিন।

পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে পারে: অনেকেরই পিরিয়ড চলাকালে পেটে তীব্র ব্যথা হয় এবং প্রতিকারে ওষুধ সেবন করতে হয়। এ সময় যদি কেউ পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস খান, তাহলে তাঁর পিরিয়ডের ব্যথা দ্রুত সময়ে উপশম হতে পারে।

পেয়ারার অপকারিতা ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া:

পেয়ারার অপকারিতা
  • যারা প্রায়শই সর্দি এবং কাশির সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের পেয়ারা এড়ানো উচিত। পেয়ারা খুব ঠান্ডা। এটি অত্যধিক গ্রহণের কারণে সর্দি-কাশি বাড়তে পারে।
  • আপনি যদি অন্য কোনও স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে পেয়ারা এড়ানো শ্রেয়। এর মধ্যে পটাসিয়াম এবং ফাইবার থাকে, আপনি ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করার আগে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের পেয়ারা খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। পেয়ারা রক্তের শর্করাকে হ্রাস করে। আপনার যদি ডায়াবেটিস হয় এবং আপনি পেয়ারা খেতে চান তবে প্রথমে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ও আপনার রক্তে চিনির পরীক্ষা করে নিন।(ডায়াবেটিস রোগীদের চিনির পরিমান হঠাৎ কমে গেলে রোগী শকে চলে যেতে পারেন)।
error: Content is protected !!