Skip to content
Home » MT Articles » বাগদা চিংড়ির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

বাগদা চিংড়ির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

বাগদা চিংড়ি

বাগদা চিংড়ির পরিচয়

বাগদা চিংড়ি, যা প্রশান্ত মহাসাগরের (Black Tiger Prawn) নামেও পরিচিত, সুস্বাদু খাবার হিসেবে বাগদা চিংড়ির বেশ কদর রয়েছে। এটি দশপদবিশিষ্ট চিংড়ি গোত্রীয় প্রাণী। পৃথিবীতে সাত ধরনের পরিবারের ৫৪০ প্রজাতির বাগদা চিংড়ি রয়েছে। বাগদা চিংড়ির দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ৩৩ সেন্টিমিটার এবং ওজনে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশে সাধারণত প্রাপ্ত বাগদা চিংড়ির প্রায় ২০-২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বাগদা চিংড়ি সুবিধাবাদী এবং সর্বভোজী প্রাণী হিসেবে পরিচিত। এদের খাদ্য তালিকায় অনেক ধরনের উপকরণের সমাহার দেখা যায়। ছোট মাছ, ক্রিল, কোপেপড, রেডিওলারিয়া, ফাইটোপ্লাঙ্কটন, নেমাটোসিস্ট, অস্ট্রাকড, ডেট্রলাসহ খুব ছোট থেকে বড় আকারের উদ্ভিদ ও প্রাণী খেয়ে থাকে।

বাগদা চিংড়ি জম্বো চিংড়ি বা রাজা চিংড়ি নামেও পরিচিত, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় চিংড়ি প্রজাতিগুলির মধ্যে অন্যতম। এটি একটি সুস্বাদু খাবার এবং বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে একটি মূল্যবান রফতানি পণ্য।

বাগদা চিংড়ির বৈশিষ্ট্য:

বাগদা চিংড়ি, যা পেনায়াস মোনোডন নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় এবং মূল্যবান সামুদ্রিক খাবার। এদের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাদের অন্যান্য চিংড়ি প্রজাতি থেকে আলাদা করে তোলে।

শারীরিক বৈশিষ্ট্য:

  • আকার: বাগদা চিংড়ি মাঝারি আকারের হয়, পুরুষ ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং স্ত্রী ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত।
  • শরীর: তাদের শরীর লম্বাটে এবং পাতলা, মাথায় একটি স্পষ্ট কাঁটা থাকে।
  • রঙ: তাদের শরীরের রঙ সাদাটে-ধূসর থেকে গোলাপী-বাদামী পর্যন্ত হতে পারে।
  • পা: তাদের পাঁচ জোড়া পা থাকে, যার মধ্যে দুটি সামনের পা বড় এবং শক্তিশালী।

জীবনধারা:

  • বাসস্থান: বাগদা চিংড়ি সাধারণত উষ্ণ, ক্রান্তীয় এবং উপ-ক্রান্তীয় সমুদ্রের তলদেশে বাস করে।
  • খাদ্য: তারা সর্বভুক, মাছ, চিংড়ি, শামুক এবং উদ্ভিদ খেয়ে থাকে।
  • প্রজনন: স্ত্রীরা একবারে লক্ষ লক্ষ ডিম পাড়তে পারে।
  • জীবনকাল: তাদের গড় আয়ু 2-3 বছর।
বাগদা চিংড়ির পুষ্টিগুণ

বাগদা চিংড়ির পুষ্টিগুণ:

প্রতি ১০০ গ্রাম বাগদা চিংড়িতে পুষ্টির পরিমাণ:

পুষ্টি উপাদানপরিমাণ
ক্যালোরি১০৫
প্রোটিন২৪ গ্রাম
চর্বি১.৫ গ্রাম
স্যাচুরেটেড ফ্যাট০.৪ গ্রাম
মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট০.৪ গ্রাম
পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট০.৫ গ্রাম
কোলেস্টেরল১৫০ মিলিগ্রাম
কার্বোহাইড্রেট০.১ গ্রাম
ফাইবার০ গ্রাম
চিনি০ গ্রাম
সোডিয়াম৫৭০ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম৩০০ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম৫০ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম২৫ মিলিগ্রাম
ফসফরাস২৫০ মিলিগ্রাম
আয়রন৩ মিলিগ্রাম
জিঙ্ক১.৫ মিলিগ্রাম
কপার০.২ মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ০.১ মিলিগ্রাম
সেলেনিয়াম৩০ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন এ১০০ আন্তর্জাতিক ইউনিট
ভিটামিন ডি৩ আন্তর্জাতিক ইউনিট
ভিটামিন ই২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি৫ মিলিগ্রাম
থায়ামিন০.১ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লেভিন০.১ মিলিগ্রাম
নায়াসিন৩ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি6০.২ মিলিগ্রাম
ফোলেট৫০ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন বি12২ মাইক্রোগ্রাম
কলিন২৫০ মিলিগ্রাম
টাউরিন৫০০ মিলিগ্রাম
প্রতি ১০০ গ্রাম বাগদা চিংড়িতে পুষ্টির পরিমাণ।

দ্রষ্টব্য: এই পুষ্টির মানগুলি পরিবর্তিত হতে পারে, কারণ পুষ্টি মান চিংড়ির আকার, প্রজাতি, খাদ্য এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে।

বাগদা চিংড়ির উপকারিতা:

পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ:

  • প্রোটিনের চমৎকার উৎস: শরীরের গঠন ও মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ: ভিটামিন বি12, ডি, ই, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক ইত্যাদি।
  • ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ: হৃদরোগ, প্রদাহ ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতার ঝুঁকি কমায়।
  • ক্যালোরি ও চর্বি কম: ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

আরোও পড়ুন

গলদা চিংড়ির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য।

স্বাস্থ্য উপকারিতা:

বাগদা চিংড়ি কেবল সুস্বাদু খাবারই নয়, বরং এটি পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। নিয়মিত বাগদা চিংড়ি খাওয়ার ফলে আপনি পেতে পারেন:

১) প্রোটিনের উৎস: বাগদা চিংড়ি প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম চিংড়িতে প্রায় ২৪ গ্রাম প্রোটিন থাকে। প্রোটিন শরীরের কোষ ও টিস্যু গঠনে এবং মেরামতের জন্য অপরিহার্য।

২) হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে: বাগদা চিংড়িতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা রক্তচাপ কমাতে এবং HDL (ভাল) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।

৩) মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে: বাগদা চিংড়িতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি১২ থাকে যা মস্তিষ্কের কোষের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই পুষ্টি উপাদানগুলি স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং মেজাজ উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।

৪) হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করে: বাগদা চিংড়িতে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি থাকে যা হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

৫) চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল: বাগদা চিংড়িতে ভিটামিন এ থাকে যা দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতে এবং রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৬) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে: বাগদা চিংড়িতে জিঙ্ক থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।

৭) ত্বকের জন্য ভাল: বাগদা চিংড়িতে ভিটামিন ই থাকে যা ত্বকের কোষের ক্ষতি রোধ করতে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে।

৮) ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে: বাগদা চিংড়িতে ক্যালোরি এবং চর্বির পরিমাণ কম থাকে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে এবং একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারে।

৯) ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে বাগদা চিংড়িতে থাকা কিছু উপাদান ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে সহায়তা করতে পারে।

বাগদা চিংড়ির অপকারিতা:

বাগদা চিংড়ি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হলেও, অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিছু অপকারিতাও দেখা দিতে পারে।

সম্ভাব্য অপকারিতা:

  • উচ্চ সোডিয়াম: বাগদা চিংড়িতে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। অতিরিক্ত সোডিয়াম রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • কোলেস্টেরল: বাগদা চিংড়িতে কিছু পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে। উচ্চ কোলেস্টেরল রক্তনালীতে জমা হতে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • অ্যালার্জি: কিছু লোকের বাগদা চিংড়িতে অ্যালার্জি থাকতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ফুসকুড়ি, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব এবং পেটে ব্যথা।
  • পরিবেশগত প্রভাব: বাগদা চিংড়ি চাষের জন্য প্রায়শই ম্যানগ্রোভ বন ধ্বংস করা হয়, যা জীববৈচিত্র্য হ্রাস করে এবং উপকূলীয় অঞ্চলের ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ: বাগদা চিংড়ি চাষে প্রায়শই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়, যা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

মনে রাখবেন:

  • সুষম খাদ্যের অংশ হিসেবে পরিমিত পরিমাণে বাগদা চিংড়ি খাওয়া নিরাপদ।
  • যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, বা অ্যালার্জির ইতিহাস থাকে, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন কতটা বাগদা চিংড়ি খাওয়া আপনার জন্য নিরাপদ।
  • টেকসইভাবে চাষ করা বাগদা চিংড়ি কিনুন যা পরিবেশের ক্ষতি করে না।
  • অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার না করে চাষ করা বাগদা চিংড়ি কিনুন।

পরিশেষে:

বাগদা চিংড়ি একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার হতে পারে। তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া এড়িয়ে চলুন এবং টেকসইভাবে উৎপাদিত বাগদা চিংড়ি নির্বাচন করুন।

বাগদা চিংড়ির মজাদার সব রেসিপি:

বাগদা চিংড়ির ঝাল:

বাগদা চিংড়ি দিয়ে তৈরি সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবারগুলির মধ্যে একটি হল বাগদা চিংড়ির ঝাল। এটি তৈরি করা সহজ এবং সুস্বাদু, এবং এটি যেকোনো ভাতের সাথে পরিবেশন করা যায়।

উপকরণ:

  • বাগদা চিংড়ি – ৫০০ গ্রাম (মাঝারি আকারের)
  • পেঁয়াজ কুঁচি – ১ কাপ
  • আদা বাটা – ১ টেবিল চামচ
  • রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
  • কাঁচা মরিচ কুঁচি – ৪-৫ টি
  • হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • মরিচ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • জিরা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • ধনে গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • গরম মসলা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • লবণ – স্বাদমতো
  • তেল – ৩ টেবিল চামচ
  • ধনেপাতা কুঁচি – সাজানোর জন্য
বাগদা চিংড়ির ঝাল

প্রণালী:

  1. চিংড়ি ধুয়ে পরিষ্কার করে লবণ ও হলুদ দিয়ে মাখিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন।
  2. একটি কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি বাদামী করে ভেজে নিন।
  3. আদা বাটা, রসুন বাটা, কাঁচা মরিচ কুঁচি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
  4. হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, গরম মসলা গুঁড়ো দিয়ে মসলা কষিয়ে নিন।
  5. মসলা কষানো হলে চিংড়ি দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন।
  6. প্রয়োজনীয় পরিমাণে পানি দিয়ে ঢেকে দিন এবং চিংড়ি সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
  7. লবণ দিয়ে স্বাদ মিশিয়ে নিন।
  8. ধনেপাতা কুঁচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

পরিবেশন:

গরম ভাতের সাথে বাগদা চিংড়ির ঝাল পরিবেশন করুন। আপনি রুটি, পরোটা, বা নুডুলসের সাথেও এটি পরিবেশন করতে পারেন।

টিপস:

  • আপনি যদি ঝাল বেশি পছন্দ করেন তবে আরও কাঁচা মরিচ কুঁচি যোগ করতে পারেন।
  • আপনি যদি চান তবে টমেটো কুঁচি বা কাঁচা মরিচ বাদ দিতে পারেন।
  • আপনি চাইলে ঝালের স্বাদ আরও বাড়ানোর জন্য তেজপাতা, লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি ইত্যাদি মসলা ব্যবহার করতে পারেন।
  • ঝোল ঘন করার জন্য আপনি আলু বা পেঁপে বাটা ব্যবহার করতে পারেন।

বাগদা চিংড়ির ঝাল একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার যা আপনার পরিবার ও বন্ধুদের জন্য তৈরি করতে পারেন। এটি তৈরি করা সহজ এবং উপকরণগুলি সহজেই পাওয়া যায়। আজই এই ঝাল রেসিপিটি চেষ্টা করে দেখুন এবং এর স্বাদ উপভোগ করুন।

বাগদা চিংড়ি এর ভুনা: একটি সুস্বাদু রেসিপি

বাগদা চিংড়ি দিয়ে তৈরি আরেকটি জনপ্রিয় খাবার হল বাগদা চিংড়ির ভুনা। এটি ঝালের চেয়ে হালকা এবং তৈরি করাও সহজ।

উপকরণ:

  • বাগদা চিংড়ি – ৫০০ গ্রাম (মাঝারি আকারের)
  • পেঁয়াজ কুঁচি – ১ কাপ
  • কাঁচা মরিচ কুঁচি – ৪-৫ টি
  • টমেটো কুঁচি – ১/২ কাপ
  • আদা বাটা – ১ টেবিল চামচ
  • রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
  • হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • মরিচ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • জিরা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • ধনে গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • লবণ – স্বাদমতো
  • তেল – ৩ টেবিল চামচ
  • ধনেপাতা কুঁচি – সাজানোর জন্য
বাগদা চিংড়ি র ভুনা

প্রণালী:

  1. চিংড়ি ধুয়ে পরিষ্কার করে লবণ ও হলুদ দিয়ে মাখিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন।
  2. একটি কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি বাদামী করে ভেজে নিন।
  3. কাঁচা মরিচ কুঁচি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
  4. টমেটো কুঁচি দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন।
  5. আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো দিয়ে মসলা কষিয়ে নিন।
  6. মসলা কষানো হলে চিংড়ি দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন।
  7. প্রয়োজনীয় পরিমাণে পানি দিয়ে ঢেকে দিন এবং চিংড়ি সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
  8. লবণ দিয়ে স্বাদ মিশিয়ে নিন।
  9. ধনেপাতা কুঁচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

পরিবেশন:

গরম ভাতের সাথে বাগদা চিংড়ির ভুনা পরিবেশন করুন। আপনি রুটি, পরোটা, বা নুডুলসের সাথেও এটি পরিবেশন করতে পারেন।

টিপস:

  • আপনি যদি চান তবে টমেটো বাদ দিতে পারেন।
  • আপনি চাইলে ঝালের স্বাদ বাড়ানোর জন্য তেজপাতা, লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি ইত্যাদি মসলা ব্যবহার করতে পারেন।
  • ভুনার স্বাদ আরও বাড়ানোর জন্য আপনি কাঁচা কাঁচা মরিচ কুঁচি ব্যবহার করতে পারেন।
  • ভুনা ঘন করার জন্য আপনি আলু বা পেঁপে বাটা ব্যবহার করতে পারেন।

বাগদা চিংড়ির ভুনা একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার যা আপনার পরিবার ও বন্ধুদের জন্য তৈরি করতে পারেন। এটি তৈরি করা সহজ এবং উপকরণগুলি সহজেই পাওয়া যায়। আজই এই ভুনা রেসিপিটি চেষ্টা করে দেখুন এবং এর স্বাদ উপভোগ করুন!

বাগদা চিংড়ির মালাইকারি:

উপকরণ:

  • বাগদা চিংড়ি: ৫০০ গ্রাম (মাঝারি আকারের)
  • পেঁয়াজ বাটা: ½ কাপ
  • আদা বাটা: ১ টেবিল চামচ
  • রসুন বাটা: ১ টেবিল চামচ
  • টমেটো কুঁচি (ঐচ্ছিক): ½ কাপ
  • কাঁচা মরিচ কুঁচি: ২-৩ টি (বা আপনার পছন্দ মত)
  • হলুদ গুঁড়ো: ½ চা চামচ
  • ধনে গুঁড়ো: ১ চা চামচ
  • জিরা গুঁড়ো: ½ চা চামচ
  • গরম মসলা গুঁড়ো (ঐচ্ছিক): ¼ চা চামচ
  • লবণ: স্বাদ অনুযায়ী
  • চিনি (ঐচ্ছিক): ½ চা চামচ
  • মাখন: ২ টেবিল চামচ
  • দই: ½ কাপ (ফুলক্রিম দিয়ে বিকল্প করা যায়)
  • ধনেপাতা কুঁচি: সাজানোর জন্য
  • তেল: ১ টেবিল চামচ

ঐচ্ছিক উপকরণ:

  • কাঁচা কাঁঠাল কুঁচি: টক স্বাদ
  • কাঁচা আমের টক: টক স্বাদ
  • কাঁচা মরিচের কোয়া: ঝালের জন্য
  • কাজুবাটা: ক্রিমি স্বাদ
  • খোস ছাড়ানো সূর্যমুখী ফুলের বেটে: ক্রিমি স্বাদ
মালাইকারি

রান্না প্রণালী:

  1. চিংড়ি মেরিনেট করুন: চিংড়ি ধুয়ে নুন ও হলুদ দিয়ে মেখে ১৫ মিনিট রাখুন।
  2. মালাইকারি রান্না: তেলে মাখন গরম করে পেঁয়াজ বাটা ভাজুন। আদা-রসুন বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন। টমেটো (ঐচ্ছিক) দিয়ে কষান।
  3. মশলা দিন: হলুদ, ধনে, জিরা, গরম মসলা (ঐচ্ছিক) দিয়ে কষিয়ে পানি দিয়ে ফুটান।
  4. চিংড়ি দিন: মেরিনেট করা চিংড়ি দিয়ে 2-3 মিনিট রান্না করুন।
  5. দই দিন: দই (ফুলক্রিম) ও লবণ (স্বাদ অনুযায়ী) দিয়ে নাড়ুন।
  6. ঐচ্ছিক উপকরণ: কাঁঠাল, টক, মরিচ কোয়া, কাজুবাটা, সূর্যমুখী বেটে (যদি ব্যবহার করেন) দিন।
  7. গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।

টিপস:

  • আরও স্বাদ পেতে চাইলে, রান্নার শুরুতে কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাজতে পারেন।
  • ঝালের জন্য, আপনি কাঁচা মরিচের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারেন।
  • টক স্বাদ পেতে, আপনি কাঁচা আম বা কাঁঠালের টক ব্যবহার করতে পারেন।
  • ঐচ্ছিক উপকরণগুলো ব্যবহার সম্পূর্ণ আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করে।

বাগদা চিংড়ির খাদ্য তালিকা:

বাগদা চিংড়ি সর্বভুক, অর্থাৎ তারা উদ্ভিদ এবং প্রাণী উভয়ই খেয়ে থাকে। তাদের খাদ্য তালিকায় নিম্নলিখিত খাবারগুলি অন্তর্ভুক্ত:

প্রাকৃতিক খাবার:

  • প্লাঙ্কটন: ছোট ছোট জলজ প্রাণী যা চিংড়িদের প্রধান খাদ্য উৎস।
  • ছোট মাছ: চিংড়ি ছোট মাছ, যেমন চিংড়ি মাছ, গুপি এবং মোলি খেয়ে থাকে।
  • শামুক: চিংড়ি বিভিন্ন ধরনের শামুক খেয়ে থাকে, যেমন কাঁকড়া, স্ক্যালপ এবং শামুক।
  • কৃমি: চিংড়ি মাটির কৃমি এবং অন্যান্য জলজ কৃমি খেয়ে থাকে।
  • উদ্ভিদ: চিংড়ি শৈবাল, সামুদ্রিক ঘাস এবং অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ খেয়ে থাকে।

চাষকৃত খাদ্য:

  • চিংড়ি ফিড: চিংড়ি চাষের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা খাবার। চিংড়ি ফিডে প্রোটিন, চর্বি, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এবং খনিজ থাকে।
  • চালের খোসা: চিংড়ি চাষে একটি সাধারণ খাবার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। চালের খোসায় প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে।
  • সয়াবিনের খোসা: চিংড়ি চাষে আরেকটি জনপ্রিয় খাবার। সয়াবিনের খোসায় প্রোটিন এবং তেল থাকে।
  • মাছের গুঁড়া: চিংড়ি চাষে প্রোটিনের একটি ভাল উৎস।
  • ময়দা: চিংড়ি চাষে কার্বোহাইড্রেটের একটি উৎস।

খাদ্যের চাহিদা:

বাগদা চিংড়ির খাদ্যের চাহিদা তাদের বয়স, আকার এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, ছোট চিংড়িকে বড় চিংড়ির তুলনায় বেশি খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয়। উষ্ণ জলে বসবাসকারী চিংড়িকে ঠান্ডা জলে বসবাসকারী চিংড়ির তুলনায় বেশি খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয়।

খাওয়ানোর সময়সূচী:

বাগদা চিংড়ি সাধারণত দিনে একবার বা দুবার খাওয়ানো হয়। ছোট চিংড়িকে বড় চিংড়ির তুলনায় বেশি ঘন ঘন খাওয়ানোর প্রয়োজন হয়।

খাওয়ানোর পদ্ধতি:

বাগদা চিংড়ি সাধারণত হাত দিয়ে বা ফিডার ব্যবহার করে খাওয়ানো হয়। হাত দিয়ে খাওয়ানো হলে, খাবারটি ছোট ছোট টুকরো করে পানিতে ছড়িয়ে দিতে হয়। ফিডার ব্যবহার করলে, খাবারটি ফিডারে রাখতে হয় এবং ফিডারটিকে পানিতে ডুবিয়ে দিতে হয়।

This article is written with the help of Gemini

সম্পর্কিত:

error: Content is protected !!