Skip to content
Home » MT Articles » তেজপাতার পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। তেজপাতা খাওয়ার নিয়ম।

তেজপাতার পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। তেজপাতা খাওয়ার নিয়ম।

তেজপাতার উপকারিতা

তেজপাতা

তেজপাতা একটি মসলা যা রান্নায় ব্যবহৃত হয়। তেজপাতার ইংরেজি নাম bay leaf. এটি একটি পাতলা, লম্বা পাতা যা একটি তীব্র, সুগন্ধযুক্ত স্বাদ রয়েছে। তেজপাতা মূলত ভারত, নেপাল এবং চীন থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এটি এখন সারা বিশ্বে জনপ্রিয় একটি মসলা। তেজপাতা বিভিন্ন ধরণের খাবারে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন স্যুপ, স্ট্যু, মাংসের খাবার এবং সবজির খাবার। এটি ঝোল এবং চায়ের স্বাদ বাড়াতেও ব্যবহৃত হয়। তেজপাতা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে বলেও জানা যায়, যার মধ্যে রয়েছে হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করা। 

তেজপাতার পুষ্টিগুণ:

তেজপাতা একটি পুষ্টিকর মসলা যা ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি ভাল উৎস। তেজপাতার প্রতি ১০০ গ্রামে নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদান রয়েছে:

  • ক্যালোরি: ৬২
  • প্রোটিন: ২.৩ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট: ১০.৩ গ্রাম
  • ফাইবার: ২.৯ গ্রাম
  • চর্বি: ০.৪ গ্রাম
  • ভিটামিন এ: ৩৬০ আইইউ
  • ভিটামিন সি: ৪.৫ মিলিগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম: ৬৮ মিলিগ্রাম
  • আয়রন: ১.৫ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম: ৫০ মিলিগ্রাম
  • পটাসিয়াম: ৪৩০ মিলিগ্রাম
  • জিঙ্ক: ০.৬ মিলিগ্রাম
তেজপাতার উপকারিতা

তেজপাতা খাওয়ার নিয়ম:

তেজপাতা একটি সুগন্ধি মসলা যা রান্নায় ব্যবহৃত হয়। এটি বিভিন্ন ধরণের খাবারে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন স্যুপ, স্ট্যু, মাংসের খাবার এবং সবজির খাবার। তেজপাতা ঝোল এবং চায়ের স্বাদ বাড়াতেও ব্যবহৃত হয়।

তেজপাতা খাওয়ার অনেক উপায় রয়েছে। এটি সাধারণত রান্না করা খাবারের সাথে খাওয়া হয়। তেজপাতাকে পুরো বা গুঁড়া করে ব্যবহার করা যেতে পারে। পুরো তেজপাতা রান্নার শুরুতে যোগ করা উচিত যাতে তারা তাদের স্বাদ এবং সুগন্ধটি খাবারে ছাড়তে পারে। গুঁড়া তেজপাতা রান্নার শেষে যোগ করা যেতে পারে।

তেজপাতা খাওয়ার কিছু সাধারণ উপায় হল:

  • স্যুপ, স্ট্যু এবং মাংসের খাবারে পুরো তেজপাতা যোগ করুন।
  • সবজির খাবারে পুরো বা গুঁড়া তেজপাতা যোগ করুন।
  • ঝোল এবং চায়ে গুঁড়া তেজপাতা যোগ করুন।
  • তেজপাতা চা বানান।

তেজপাতা খাওয়ার কিছু নির্দিষ্ট রেসিপির মধ্যে রয়েছে:

  • তেজপাতা ডাল
  • তেজপাতা মাংস
  • তেজপাতা সবজি
  • তেজপাতা ঝোল
  • তেজপাতা চা

তেজপাতা খাওয়ার কিছু টিপস হল:

  • তেজপাতাকে খুব বেশি রান্না করবেন না, কারণ এটি তাদের স্বাদ এবং সুগন্ধ হারিয়ে ফেলতে পারে।
  • তেজপাতাকে যদি গোটা ব্যবহার করেন তবে রান্নার শেষে সেগুলি সরিয়ে ফেলুন।
  • তেজপাতা যদি গুঁড়া করে ব্যবহার করেন তবে এটিকে সরাসরি খাবারে যোগ করার আগে হালকাভাবে গরম করুন।

তেজপাতার উপকারিতা:

তেজপাতার উপকারিতা

হজমশক্তি বাড়ায়:

তেজপাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানগুলি হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি পেটে গ্যাস, ফোলাভাব এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে:

তেজপাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:

তেজপাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি সর্দি, কাশি এবং ফ্লুর মতো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

আরোও পড়ুন

পিয়াজের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। পিয়াজ কেন খাবেন?

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়:

তেজপাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি এবং বিস্তার রোধ করতে সাহায্য করে।

তেজপাতা গাছ

তেজপাতার অপকারিতা:

তেজপাতা সাধারণত নিরাপদ। তবে, কিছু লোকের তেজপাতায় অ্যালার্জি থাকতে পারে। তেজপাতায় অ্যালার্জি থাকলে, নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:

  • ত্বকে ফুসকুড়ি
  • চোখ, নাক বা গলায় জ্বালা
  • শ্বাসকষ্ট
  • বমি বমি ভাব বা বমি
  • হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া

যদি আপনার তেজপাতায় অ্যালার্জি আছেন বলে সন্দেহ করেন, তাহলে এটি খাওয়া বা ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।

তেজপাতার অন্যান্য সম্ভাব্য অপকারিতাগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মহিলাদের জন্য তেজপাতা খাওয়া নিরাপদ কিনা তা নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট গবেষণা নেই। তাই, এই সময়ের মধ্যে এটি খাওয়া এড়ানোই ভালো।
  • তেজপাতার অতিরিক্ত ব্যবহারে পেটের ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়া হতে পারে।

তেজপাতা একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর মসলা যা বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। তবে, এটি খাওয়া বা ব্যবহার করার আগে সম্ভাব্য অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

সম্পর্কিত:

পেঁপের পুষ্টি উপাদান, গুণাগুণ ও উপকারিতা।

July 27, 2023

তিল ও তিলের তেল: ত্বক ও চুলের প্রাকৃতিক পরিচর্যাকারী।

September 11, 2024

গজাল মাছ: গজাল মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য।

November 13, 2024

কাঁকরোলের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। কাঁকরোল রেসিপি, চাষ পদ্ধতি।

September 20, 2023

চিয়া সিড বা চিয়া বীজ কি? এর নানাবিধ পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।

February 5, 2024

তালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। তাল ফল কেন খাবেন?

August 28, 2023

মূলার পুষ্টিগুণ,উপকারিতা ও অপকারিতা। মূলা কেন খাবেন?

September 5, 2023

কলা খাওয়ার উপকারিতা কি কি ? প্রতিদিন কলা কেন খাবেন ?

July 17, 2023

সজনে পাতার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। সজনে পাতা গুড়া তৈরি ও খাওয়ার নিয়ম।

April 18, 2024

ভাঙ্গন মাছ: ভাঙ্গন মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য।

November 23, 2024
error: Content is protected !!