Skip to content
Home » MT Articles » যে সকল খনিজ উপাদান শরীরের জন্য অপরিহার্য।

যে সকল খনিজ উপাদান শরীরের জন্য অপরিহার্য।

খনিজ উপাদান

শরীরের জন্য অপরিহার্য খনিজ উপাদান

শরীরের জন্য অপরিহার্য খনিজ উপাদান গুলোকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:

. প্রধান খনিজ:

ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম।

২. ট্রেস খনিজ:

লোহা, ক্লোরিন, কোবাল্ট, কপার, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, মলিবডেনাম, আয়োডিন এবং সেলেনিয়াম।

প্রধান খনিজ উপাদান এর কাজ:

  • ক্যালসিয়াম: দাঁত ও হাড় গঠনে, রক্ত জমাট বাঁধতে, পেশী সংকোচনে এবং স্নায়ু সংকেত পরিচালনায় সাহায্য করে।
  • ফসফরাস: হাড় ও দাঁতের গঠনে, শক্তি উৎপাদনে, কোষের বৃদ্ধি ও বিভাজনে এবং এনজাইম ও হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে।
  • পটাশিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, স্নায়ু সংকেত পরিচালনায় এবং পেশী সংকোচনে সাহায্য করে।
  • সোডিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, পানি ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং স্নায়ু সংকেত পরিচালনায় সাহায্য করে।
  • ম্যাগনেসিয়াম: পেশী সংকোচনে, শক্তি উৎপাদনে, এনজাইম তৈরিতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ট্রেস খনিজ উপাদান এর কাজ:

  • লোহা: হিমোগ্লোবিন তৈরি করে, যা রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন পরিবহন করে।
  • ক্লোরিন: পানি ভারসাম্য বজায় রাখতে, পেশী সংকোচনে এবং পাচনতন্ত্রে সাহায্য করে।
  • কোবাল্ট: ভিটামিন বি১২ তৈরিতে সাহায্য করে, যা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে এবং শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।
  • কপার: লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে, কোলাজেন তৈরিতে এবং এনজাইম তৈরিতে সাহায্য করে।
  • জিঙ্ক: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, কোষের বৃদ্ধি ও বিভাজনে এবং এনজাইম তৈরিতে সাহায্য করে।
  • ম্যাঙ্গানিজ: এনজাইম তৈরিতে, কোষের বৃদ্ধি ও বিভাজনে এবং শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।
  • মলিবডেনাম: এনজাইম তৈরিতে, শক্তি উৎপাদনে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে।
  • আয়োডিন: থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে, যা শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে।
  • সেলেনিয়াম: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, এনজাইম তৈরিতে এবং শরীরের কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষায় সাহায্য করে।

আরোও পড়ুন

কোলন ক্যান্সার : কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা।

প্রধান খনিজ উপাদান এর অভাবে শরীরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে:

  • ক্যালসিয়াম ঘাটতি: হাড় ও দাঁতের দুর্বলতা, রিকেটস, অস্টিওপোরোসিস, পেশী খিঁচুনি, স্নায়ু দুর্বলতা, উচ্চ রক্তচাপ।
  • ফসফরাস ঘাটতি: দাঁতের ক্ষয়, হাড়ের দুর্বলতা, পেশী দুর্বলতা, স্নায়ু দুর্বলতা, মাথাব্যথা, ক্লান্তি।
  • পটাশিয়াম ঘাটতি: উচ্চ রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিক, পেশী দুর্বলতা, পেশী খিঁচুনি, কোষ্ঠকাঠিন্য।
  • সোডিয়াম ঘাটতি: নিম্ন রক্তচাপ, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, পেশী দুর্বলতা, পেশী খিঁচুনি, ডায়রিয়া।
  • ম্যাগনেসিয়াম ঘাটতি: মাইগ্রেন, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, পেশী খিঁচুনি, অনিদ্রা, উচ্চ রক্তচাপ।
খনিজ উপাদান

ট্রেস খনিজের অভাবে শরীরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো:

  • লোহা ঘাটতি: রক্তশূন্যতা, দুর্বলতা, ক্লান্তি, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, চোখের মণি ফ্যাকাশে, ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা।
  • ক্লোরিন ঘাটতি: পেশী খিঁচুনি, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, শুষ্ক ত্বক।
  • কোবাল্ট ঘাটতি: ভিটামিন বি১২ ঘাটতির লক্ষণ, যেমন রক্তশূন্যতা, দুর্বলতা, ক্লান্তি, মাথাব্যথা, স্নায়ু দুর্বলতা।
  • কপার ঘাটতি: রক্তশূন্যতা, লোহিত রক্তকণিকার অস্বাভাবিক আকার, ত্বকের ক্ষত, কোলাজেন তৈরিতে সমস্যা, স্নায়ুর ক্ষতি, হাড়ের ক্ষতি।
  • জিঙ্ক ঘাটতি: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বলতা, ক্ষত নিরাময়ে সমস্যা, ত্বকের সমস্যা, চুলের ক্ষতি, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, পুরুষত্বহীনতা।
  • ম্যাঙ্গানিজ ঘাটতি: কোলাজেন তৈরিতে সমস্যা, হাড়ের ক্ষতি, থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদনে সমস্যা, স্নায়ুর ক্ষতি, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা।
  • মলিবডেনাম ঘাটতি: শক্তি উৎপাদনে সমস্যা, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সমস্যা, হাড়ের ক্ষতি, স্নায়ুর ক্ষতি।
  • আয়োডিন ঘাটতি: গয়টার, থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন হ্রাস, মেজাজ পরিবর্তন, ক্ষুধামন্দা, ওজন বৃদ্ধি, স্নায়ু দুর্বলতা, গর্ভপাত, নবজাতকের বুদ্ধিমত্তা হ্রাস।
  • সেলেনিয়াম ঘাটতি: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বলতা, প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যা, হাড়ের ক্ষতি, স্নায়ুর ক্ষতি, ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি।

খনিজের অভাব সাধারণত খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে খনিজ না পাওয়ার কারণে হয়। তবে, কিছু নির্দিষ্ট রোগ বা অবস্থার কারণেও খনিজ শোষণে সমস্যা হতে পারে।

খনিজের অভাব প্রতিরোধের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ করা জরুরি। এছাড়াও, খনিজ সম্পূরক গ্রহণের প্রয়োজন হলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সম্পর্কিত:

শিশুর দুধ দাঁতের যত্ন কিভাবে নেবেন? যত্ন নেওয়া গুরুত্ত্বপূর্ণ কেন?

August 29, 2023

কিডনির পাথর কি? কিডনিতে পাথর কেন হয়? কিভাবে প্রতিরোধ করবেন?

April 4, 2024

জ্বর কী, কেন হয়, কাদের বেশি হয় ? জ্বর কত প্রকার ?

July 19, 2023

থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে আপনার যা কিছু জানা প্রয়োজন।

July 11, 2023

রোটাভাইরাস কি? রোটাভাইরাস সংক্রমণ এর লক্ষণ, কারণ ও করনীয়।

January 24, 2024

নিপাহ ভাইরাস কি? এটি কিভাবে ছড়ায় ? প্রতিরোধে করনীয় কি?

January 13, 2024

কোলন ক্যান্সার : কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা।

January 20, 2024

লিভারের কাজ ও গুরুত্ব কি? লিভার ভাল রাখতে করনীয় কি?

June 30, 2024

চোখের ছানি কি? চোখের ছানির লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ।

March 25, 2024

আক্কেল দাঁত কী ? উঠার সময় ব্যথা হয় কেন? এই ব্যথার প্রতিরোধ ও চিকিৎসা।

August 26, 2023
error: Content is protected !!