শিশুদের দাঁতব্রাশ শুরু করার সঠিক বয়স:
আমাদের শরীরের অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো দাঁত। শিশুর সুস্থভাবে বাঁচার জন্য প্রয়োজন এই বিশেষ অঙ্গের উপযুক্ত পরিচর্যা ও সংরক্ষণ। কত বছর বয়স থেকে শিশুদের দাঁতব্রাশ করানো উচিত তা আমরা অনেকেই জানি না। অনেকেই মনে করেন, বাচ্চা বড় হলে টুথপেস্ট, টুথব্রাশ ব্যবহার করবে। কিন্তু বিষয়টা একেবারে তেমন নয়।
অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে দেখা যায়, তারা মায়ের পেট থেকেই দাঁত নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। অনেক ক্ষেত্রে ছয় মাস থেকে শুরু করে তিন বছর পর্যন্ত সময় রাগে পুরোপুরি দাঁত বের হতে। ছয় বছর পর্যন্ত দুধ দাঁতগুলো পুরোপুরি থাকে।
ছয় বছরের পর থেকে স্থায়ী দাঁত আসা শুরু করে। প্রথমে দুধ দাঁতের সবচেয়ে পেছনের দিকে ওপরের পাটি ও নিচের পাটিতে চারটি স্থায়ী দাঁত আসে। এটাকে ফাস্ট মোলার বলে।
অনেক সময় আমাদের ভেতরে ভয় কাজ করে বলে বাচ্চাদের টুথপেস্ট দেওয়া হয় না বা ব্রাশ দেওয়া হয় না। কারণ যদি তারা টুথপেস্ট খেয়ে ফেলে। এজন্য আমরা আঙুলের মাথায় একটা গজ কাপড়ের মতো পেঁচিয়ে নেবো। পেঁচিয়ে নিয়ে তাদের দাঁত হালকা করে পরিষ্কার করে দেবো। তারা যেহেতু সব সময় দুধ খায়, এজন্য আঙুল দিয়ে ওটা পরিষ্কার করে দিতে হবে।
বাচ্চার বয়স যখন দেড় থেকে দুই বছর হবে, তখন থেকে তাকে দাঁত ব্রাশ করতে দেয়া যায়। বাচ্চাদের জন্য ছোট ছোট টুথব্রাশ আছে। ওদের জন্য আলাদা টুথপেস্টও রয়েছে, যেগুলো খেয়ে ফেললেও তেমন কোনো সমস্যা হয় না।

দাঁতের বিশেষ যত্ন:
বিভিন্ন ঋতুতে দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শিশুর দাঁতে কোনো মাইক্রোস্কোপিক স্টোন জমা হয়েছে কিনা সেবিষয়ে অভিভাবককে খেয়াল রাখতে হবে। দাঁতে ব্যথা বা শিরশির অনুভূত হলে গরম পানিতে লবণ দিয়ে দিনে অন্তত ২-৩ বার কুলকুচা করতে হবে। ব্যথার তীব্রতা বেশি হলে যদি ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া সম্ভব না হয়, তখন তাৎক্ষণিক ভাবে ব্যথা কমানোর জন্য লবঙ্গ ছেঁচে সেটির রস নরম তুলো দিয়ে যেখানে ক্যারিজ হয়েছে, সেখানে লাগাতে হবে।
যা করবেন না:
বেশি মিষ্টি জাতীয় খাবার, চকোলেট, ক্যান্ডি, আঠালো বা দাঁতের গায়ে লেগে থাকে এমন খাবার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাওয়ানো উচিৎ নয় এবং খাওয়ার পর ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। শিশুদের সাধারণ বদভ্যাস গুলো, যেমন- আঙুল চোষা, জিহ্বা চোষা, ঠোঁট চোষা, নখ কামড়ানো ইত্যাদি দাঁতের স্বাভাবিক গঠনে প্রভাব ফেলতে পারে, তাই এসব থেকে শিশুকে বিরত রাখতে হবে।
শিশুদের দাঁতব্রাশ এ সতর্কতা:

অনেকেই দাঁতে ব্যথা অনুভূত না হওয়া পর্যন্ত ডেন্টিস্টের কাছে যেতে চান না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, দাঁতের রোগের কারণে চিকিৎসা করানো হয়; কিন্তু পরবর্তীতে নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার না করার ফলে অন্যস্থানে অর্থাৎ পার্শ্ববর্তী দাঁত বা মাড়িতে পুনরায় দাঁতের রোগ দেখা দেয়। তাই প্রতিদিন নিয়মিত দু’বার দাঁত মাজার পাশাপাশি কুলকুচা এবং ফ্লসিংয়ের মাধ্যমে দাঁত পরিষ্কার রাখতে হবে। এছাড়া দাঁতের যেকোনো সমস্যার সমাধানে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। নিয়মিত পরিচর্যা ও ৬ মাস অন্তর চেকআপের মাধ্যমে দাতের সুস্থতা বজায় রাখা সম্ভব।