Skip to content
Home » MT Articles » রক্তের চর্বি কি? রক্তের চর্বি বৃদ্ধির কারণ ও কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।

রক্তের চর্বি কি? রক্তের চর্বি বৃদ্ধির কারণ ও কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।

রক্তের চর্বি কমানোর উপায়

রক্তের চর্বি কি? : (সংক্ষিপ্ত বিবরণ)

রক্তের চর্বি বা কলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। এটি কোষের ঝিল্লি তৈরি, হরমোন উৎপাদন এবং ভিটামিন ডি শোষণে সাহায্য করে। কিন্তু যখন রক্তে কলেস্টেরলের পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে যায়, তখন তা হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং অন্যান্য গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।চলুন জেনে নেওয়া যাক, রক্তে চর্বি বৃদ্ধির কারণ ও রক্তের চর্বি কমানোর উপায় কি কি?

রক্তের চর্বির প্রকারভেদ

রক্তে মূলত দুই ধরনের চর্বি থাকে:

  • এলডিএল (Low-Density Lipoprotein – LDL): একে খারাপ কলেস্টেরল বলা হয়। অতিরিক্ত এলডিএল রক্তনালীতে জমে রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে।
  • এইচডিএল (High-Density Lipoprotein- HDL): একে ভালো কলেস্টেরল বলা হয়। এইচডিএল রক্তনালী থেকে অতিরিক্ত কলেস্টেরল সরিয়ে নিয়ে যায়।

রক্তে চর্বি বৃদ্ধির কারণ

রক্তে চর্বি বা কলেস্টেরল বৃদ্ধি হওয়ার পেছনে একাধিক কারণ কাজ করে। এগুলোকে মোটামুটি দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

১. রক্তে চর্বি বৃদ্ধির পরিবর্তনযোগ্য কারণ:

  • খাদ্যাভ্যাস:
    • অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, বিশেষ করে স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার (লাল মাংস, ডালডা, বেকড পণ্য) খাওয়া।
    • কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবার (ইলিশ মাছের ডিম, লিভার) অতিরিক্ত খাওয়া।
    • প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড এবং মিষ্টি জাতীয় খাবারের অতিরিক্ত সেবন।
  • জীবনযাত্রা:
    • শারীরিক অক্রিয়তা: নিয়মিত ব্যায়াম না করা।
    • ধূমপান: ধূমপান রক্তনালীতে প্লাক জমে যাওয়ার কারণ হয়।
    • মদ্যপান: অতিরিক্ত মদ্যপান লিভারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং কলেস্টেরল বৃদ্ধি করতে পারে।
  • ওজন:
    • অতিরিক্ত ওজন বা মোটা হওয়া।
  • চাপ:
    • মানসিক চাপ রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে পারে।

২. পরিবর্তন করা যায় না এমন কারণ:

  • বংশগতি:
    • পরিবারে কারও যদি উচ্চ কলেস্টেরলের সমস্যা থাকে, তাহলে আপনারও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • বয়স:
    • বয়স বাড়ার সাথে সাথে রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে পারে।
  • লিঙ্গ:
    • সাধারণত পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে মেনোপজের আগে কলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে।

অন্যান্য কারণ:

  • কিছু রোগ:
    • ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েডিজম, কিডনি রোগ, লিভার রোগ ইত্যাদি রোগ রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে পারে।
  • কিছু ওষুধ:
    • কিছু ধরনের মুত্রবর্ধক, কিছু ধরনের পিলস ইত্যাদি ওষুধ রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে পারে।

আরোও পড়ুন

ওটস কি? ওটসের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

রক্তে চর্বি পরীক্ষা কীভাবে করা হয়?

রক্তে চর্বি বা কলেস্টেরলের মাত্রা পরিমাপ করার জন্য একটি সহজ পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষাটি সাধারণত লিপিড প্রোফাইল (Lipid Profile) পরিচিত। একজন ল্যাব টেকনোলজিস্ট আপনার বাহু থেকে একটি ছোট্ট সিরিঞ্জের মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহ করে করে এই পরীক্ষাটি করে থাকেন।

পরীক্ষার ধরন:

সাধারণত, রক্তে চর্বি পরীক্ষার মাধ্যমে নিম্নলিখিত তথ্য জানা যায়:

  • মোট কলেস্টেরল: রক্তে মোট কলেস্টেরলের পরিমাণ।
  • এলডিএল (খারাপ) কলেস্টেরল: রক্তনালীতে প্লাক জমে যাওয়ার জন্য দায়ী।
  • এইচডিএল (ভালো) কলেস্টেরল: রক্তনালী থেকে অতিরিক্ত কলেস্টেরল সরিয়ে নিয়ে যায়।
  • ট্রাইগ্লিসারাইড: রক্তে অন্য একটি ধরনের চর্বি যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

রক্তে চর্বি পরীক্ষার আগের প্রস্তুতি :

  • খাবার: সাধারণত, পরীক্ষার ৮-১২ ঘন্টা আগে কোনো খাবা না খেয়ে থাকতে হয়। তবে, আপনার ডাক্তার বিশেষ নির্দেশনা দিতে পারেন।
  • ওষুধ: কিছু ওষুধ রক্তে চর্বির মাত্রা প্রভাবিত করতে পারে। তাই, পরীক্ষার আগে আপনার ডাক্তারকে আপনি যে সব ওষুধ খাচ্ছেন তা জানান।

রক্তের চর্বি কমানোর উপায়

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: ফল, সবজি, পুরো শস্য এবং মাছ খাওয়া।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: সপ্তাহে কমপক্ষে 150 মিনিট মধ্যম তীব্রতার ব্যায়াম করা।
  • ওজন কমানো: যদি ওজন বেশি হয়, তাহলে ওজন কমানোর চেষ্টা করা।
  • ধূমপান বন্ধ করা: ধূমপান বন্ধ করা।
  • ଔষধ সেবন: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ଔষধ সেবন করা।

মনে রাখবেন: রক্তে চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত চেকআপ করে রক্তে চর্বির মাত্রা জানা উচিত।

কোন খাবারগুলো রক্তের চর্বি কমাতে সাহায্য করে?

রক্তের চর্বি কমানোর জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নলিখিত খাবারগুলো রক্তে চর্বি কমাতে সাহায্য করতে পারে:

১. দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার:

  • ওটস: ওটসে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে যা রক্তে খারাপ কলেস্টেরল শোষণ কমিয়ে দেয়।
  • ফল: আপেল, পেয়ারা, কমলা, স্ট্রবেরি ইত্যাদি ফলে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে।
  • সবজি: ব্রোকলি, গাজর, বীটরুট ইত্যাদি সবজিতে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে।
  • বীজ: চিয়া বীজ, ফ্লেক্সসিড ইত্যাদি বীজে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে।

২. পলিআনস্যাচুরেটেড এবং মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার:

  • মাছ: স্যামন, টুনা, ম্যাকেরেল ইত্যাদি মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা ভালো কলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে।
  • বাদাম: বাদাম, আখরোট, বাদাম ইত্যাদিতে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা খারাপ কলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
  • অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েলে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে।

৩. অন্যান্য উপকারী খাবার:

  • সয়া: সয়াবিন, টোফু, সয়া দুধ ইত্যাদিতে আইসোফ্লেভোন থাকে যা খারাপ কলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
  • পুরো শস্য: বাদাম, ব্রাউন রাইস, ওটস ইত্যাদি পুরো শস্যে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে।
  • লেবু: লেবুতে পেকটিন থাকে যা খারাপ কলেস্টেরল শোষণ কমিয়ে দেয়।

সম্পর্কিত:

ফোঁড়া কি? ফোঁড়ার লক্ষণ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা।

September 16, 2023

দাঁতের ফিলিং কি? ফিলিং কত ধরণের হয়? ফিলিং এর যত্ন নিবেন কিভাবে?

March 21, 2024

চোখের ছানি কি? কেন হয়? এর চিকিৎসা কি ও প্রতিরোধ করবেন কিভাবে?

November 10, 2024

টাইফয়েড জ্বর কেন হয়? এর লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা।

July 18, 2023

এইচএমপিভি কি ভয়ঙ্কর? কিভাবে ছড়ায় এবং কি কি সতর্কতা নেবেন।

January 19, 2025

শিশুর দুধ দাঁতের যত্ন কিভাবে নেবেন? যত্ন নেওয়া গুরুত্ত্বপূর্ণ কেন?

August 29, 2023

আমাশয় কি? আমাশয়ের লক্ষণ ও ধরণ। আমাশয় হলে করণীয় কি?

October 29, 2023

যে সকল খনিজ উপাদান শরীরের জন্য অপরিহার্য।

January 24, 2024

থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে আপনার যা কিছু জানা প্রয়োজন।

July 11, 2023

যক্ষা রোগ কি? যক্ষা রোগের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা।

September 16, 2023
error: Content is protected !!