Skip to content
Home » MT Articles » কচুর কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে? কচু খেলে কি কি উপকার ও অপকার হতে পারে?

কচুর কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে? কচু খেলে কি কি উপকার ও অপকার হতে পারে?

কচুর পুষ্টিগুন ও উপকারিতা

কচু 

কচু একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি। কচুর ইংরেজি নাম “Taro”। এটিতে প্রচুর পরিমাণে পানি, ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।কচু খুবই পরিচিত একটি সবজি যা প্রায় সব মানুষই খেতে পছন্দ করেন। এর পাতা শাক হিসেবেও খাওয়া হয়।কচু শাক আয়রনের অন্যতম বড় একটি উৎস। বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকাতেই কচু জন্মাতে দেখা যায়। গ্রামের বাড়ির আনাচকানাচে ও রাস্তার পাশে অনেক জায়গায় কচু জন্মে। তবে অনেক প্রজাতির কচু আছে, যা যত্নের সঙ্গে চাষ করা হয়ে থাকে।এ ধরনের চাষ করা কচুই আমরা নানা ধরনের রান্নায় ব্যবহার করে থাকি। কচু ডাঙা ও পানি, দুই স্থানেই বেশ সহজে জন্মাতে পারে। তবে মাটিতে জন্ম নেওয়া কচুর সংখ্যাই বেশি। কিছু কচু আছে, যেগুলো বনজঙ্গলে জন্মে থাকে। এগুলো বুনো কচু নামে পরিচিত। এ ধরনের কচু মানুষের খাওয়ার উপযোগী নয়। মানুষের খাওয়ার উপযোগী জাতের মধ্যে মুখিকচু, দুধকচু, মানকচু, পানিকচু, পঞ্চমুখিকচু ও ওলকচু উল্লেখযোগ্য।

কচুর পুষ্টিগুণ:

পুষ্টি উপাদানপরিমাণ (প্রতি ১০০ গ্রামে)
শক্তি২৪ কিলোক্যালরি
কার্বোহাইড্রেট৬ গ্রাম
প্রোটিন২ গ্রাম

ভিটামিন

* ভিটামিন সি: ২৮ মিলিগ্রাম

* ভিটামিন এ: ৮০০ আইইউ

* ভিটামিন বি১: ০.০৫ মিলিগ্রাম

* ভিটামিন বি২: ০.০৬ মিলিগ্রাম

* ভিটামিন বি৩: ০.৪ মিলিগ্রাম

* ভিটামিন বি৫: ০.০৮ মিলিগ্রাম

* ভিটামিন বি৬: ০.০৯ মিলিগ্রাম

* ভিটামিন বি৯: ৪৩ মাইক্রোগ্রাম

খনিজ

* পটাসিয়াম: ৪০০ মিলিগ্রাম

* ক্যালসিয়াম: ১৬ মিলিগ্রাম

* আয়রন: ১ মিলিগ্রাম

* ম্যাগনেসিয়াম: ১৫ মিলিগ্রাম

* ফসফরাস: ৪৩ মিলিগ্রাম

* জিঙ্ক: ০.৪ মিলিগ্রাম |

কচুর উপকারিতা:

কচুর উপকারিতা
দেশি কচু শাক

শরীর ঠান্ডা রাখে: 

কচুর ৯৬%ই পানি। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পটাশিয়াম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই গরমের দিনে কচু খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে: 

কচুর ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। এতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। ডায়েটারি ফাইবার খাবার হজম করতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কচু খেলে ওজন কমাতে সাহায্য হয়।

হজমশক্তি বৃদ্ধি করে: 

কচুতে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। দ্রবণীয় ডায়েটারি ফাইবার খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। অদ্রবণীয় ডায়েটারি ফাইবার খাবারের সাথে পানি শোষণ করে এবং বর্জ্য পদার্থকে নরম করে। তাই নিয়মিত কচু খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।

রক্তের কোলেস্টেরল কমায়: 

কচুতে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও ফাইবার। ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার শোষণ করতে বাধা দেয়। তাই নিয়মিত কচু খেলে রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: 

কচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহকে ক্ষতিকর উপাদান থেকে রক্ষা করে। তাই নিয়মিত কচু খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী: 

কচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও পটাশিয়াম রয়েছে। ভিটামিন সি ত্বককে উজ্বল ও মসৃণ করে। ভিটামিন এ ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। পটাশিয়াম ত্বককে ব্রণ ও অন্যান্য সমস্যা থেকে রক্ষা করে। কচুয়ের রস চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কচু খেলে ত্বক ও চুলের জন্য উপকার হয়।

জন্ডিস ও কিডনি সমস্যায় উপকারী: 

কচুর পানি ও পটাশিয়াম জন্ডিস ও কিডনি সমস্যায় উপকারী। পানি শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। পটাশিয়াম কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কচু খেলে জন্ডিস ও কিডনি সমস্যায় উপকার হয়।

অন্যান্য উপকারিতা: 

কচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। তাই এটি ঠান্ডা লাগা, সর্দি-কাশি, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

আরোও পড়ুন

বাঁধাকপির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা

কচুর অপকারিতা:

কচুর অপকারিতা
ওলকচু

কচুর অপকারিতাগুলো নিম্নরূপ:

  • কচুতে প্রচুর পরিমাণে অক্সালিক অ্যাসিড থাকে। তাই কচু বেশি খেলে গলা চুলকায়।
  • কচুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই কচু বেশি খেলে পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব বা ডায়রিয়া হতে পারে।
  • কচুতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। তাই কিডনি রোগীদের কচু কম খাওয়া উচিত।
  • কচুতে অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদান থাকতে পারে। তাই যাদের কচুর প্রতি অ্যালার্জি আছে, তাদের কচু খাওয়া উচিত নয়।

কচুর অপকারিতা এড়াতে হলে কচু পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। কচু রান্না করার সময় লেবুর রস বা সিরকা যোগ করলে অক্সালিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায়। এতে গলা চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

সম্পর্কিত:

নাশপাতির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। নাশপাতি ফল কেন খাবেন?

October 3, 2023

চিরতাপাতা কি? চিরতাপাতার উপকারিতা কি কি? কিভাবে ব্যবহার করবেন?

March 31, 2024

আনারসের পুষ্টিগুণ। আনারস (Pineapple) কেন খাবেন ?

July 13, 2023

টক পালং শাক: জেনেনিন টক পালং শাকের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও রেসিপি।

February 17, 2025

মিষ্টি কুমড়ার যত পুষ্টিগুণ। সুস্থ চোখ ও কমনীয় ত্বকের জন্য তুলনাবিহীন।

September 2, 2023

শাপলা মাছ কি খাওয়ার উপযুক্ত? এর কি কোন স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে?

November 20, 2024

চোখ সুস্থ রাখতে ৮ টি খাবার।

October 15, 2023

ক্যাপসিকাম: ক্যাপসিকামের উপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও প্রকারভেদ।

January 25, 2025

সাগুদানা কি? সাগুদানার পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রেসিপি।

December 9, 2023

খেজুরের রস কি? খেজুরের রসের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

January 21, 2024
error: Content is protected !!