Skip to content
Home » MT Articles » সফেদার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।

সফেদার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।

সফেদার পুষ্টিগুণ

সফেদা ফল

রসে টইটুম্বুর মজাদার ফল হল সফেদা। সফেদার ইংরেজি নাম সাপোডিলা (Sapodilla). আমরা কম-বেশি সবাই এই ফলটাকে চিনি। রাস্তা-ঘাটে প্রায় এই ফলটি বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে আম-কাঁঠালের মত হয়ত এতটা  পরিচিত  না। তাই বলে একে অবহেলা করার কিছু নেই। কারণ এই ফলের উপকারিতা শুনলে সবাই একটু অবাকই হবেন। সফেদায় আছে অনেক ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ট্যানিন যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত দরকারী। সফেদা ফলটি শুধুমাত্র এর স্বাদ ও গন্ধের জন্যই সমাদৃত নয়। সফেদা ফল অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর।

সফেদার পুষ্টিগুণ:

  • ক্যালোরি : 47
  • কার্বোহাইড্রেট : 10.3 গ্রাম
  • প্রোটিন : 0.8 গ্রাম
  • চর্বি : 0.1 গ্রাম
  • ফাইবার : 2.4 গ্রাম
  • ভিটামিন সি : 53 মিলিগ্রাম (94% দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ভিটামিন এ : 254 মাইক্রোগ্রাম (51% দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ভিটামিন কে : 11 মাইক্রোগ্রাম (13% দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • পটাশিয়াম : 195 মিলিগ্রাম (4% দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ম্যাগনেসিয়াম : 15 মিলিগ্রাম (4% দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ফসফরাস : 17 মিলিগ্রাম (3% দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ক্যালসিয়াম : 22 মিলিগ্রাম (2% দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)

সফেদার উপকারিতা:

সফেদার উপকারিতা

সফেদায় আছে ফাইবার, পলিফেনলিক যৌগ ও ভিটামিন সি যা আমদের দেহকে নীরোগ রাখতে সহায়তা করে। আসুন দেখে নেয়া যাক অনেক গুণ সম্পন্ন সফেদার কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা :

ফাইবারের উৎকৃষ্ট উৎস  সফেদা:

 সফেদা একটি ফাইবার সমৃদ্ধ ফল, তাই একে প্রাকৃতিক জোলাপ হিসেবে ব্যাবহার করা হয়।এতে পর্যাপ্ত খাদ্য আঁশ রয়েছে যা হজম, বদহজম এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। আধাপাকা সফেদা জলে ফুটিয়ে কষ বের করে খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সফেদা:

নিয়মিত সফেদা খেলে মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায় ও দাঁত ভালো থাকে।কেননা সফেদায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি উপস্থিত থাকে।এছাড়াও সফেদা খেলে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ দূর হয়। 

হাড় গঠনে সফেদা:

 সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস যা হাড়ের গঠন মজবুত করতে ভূমিকা রাখে।

মানসিক চাপ উপশমে সফেদা:

সফেদা ফলের স্নায়ু শান্ত ও মানসিক চাপ উপশম করার ক্ষমতা রয়েছে। অনিদ্রা ,উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতা রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিকে অনেক ডাক্তাররা সফেদা ফল খেতে পরামর্শ দেন। এতে অনিদ্রা , উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতা রোগ থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যায়।

সৌন্দর্য চর্চায় সফেদার ভূমিকা:

সফেদা ফলের মধ্যে আছে অনেক ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের একটি সুস্থ এবং উজ্জ্বল ত্বক পেতে সাহায্য করে।

শরীরের ওজন কমাতে সফেদা:

শরীরের ওজন কমাতে চাইলে নিয়মিত সফেদা খেতে পারেন। সফেদা ওজন কমাতে সাহায্য করে।সফেদায় চর্বি থাকে না। তাই বেশি খেলেও শরীরে মেদ বাড়ার কোন আশঙ্কা থাকে না।। তাছাড়া নিয়মিত সফেদা খেলে স্থূলতা জনিত সমস্যার সমাধান হয়।

আরোও পড়ুন

ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ভালোমত জানুন। নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন।

চোখের সুরক্ষায় সফেদা:

সফেদায় বিদ্যমান ভিটামিন এ চোখের সুরক্ষায় কাজ করে। রাতকানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।

ত্বকের যত্নে সফেদা:

সফেদা একদিকে ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করে কোষের ক্ষয় পূরণ করে, অন্যদিকে নতুন কোষ তৈরিতে অংশ নেয়। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তেও বাধা দেয়।

ডায়রিয়া প্রতিরোধে  সফেদা:

 সফেদা ডায়রিয়া বিরোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে।

ঔষধি গুণে ভরপুর সফেদার পাতা:

শুধুমাত্র সফেদা ফল নয়। সফেদা গাছের পাতারও ঔষধি গুণ রয়েছে। সফেদা গাছের পাতা ছেঁচে সদ্য ক্ষত হওয়া স্থানে লাগালে দ্রুত রক্তপাত বন্ধ হয়।

সর্দি ও কাশি কমাতে সফেদা:

হঠাৎ করে সর্দি, কাশি হলে ওষুধের বিকল্প হিসেবে সফেদা খেতে পারেন। সফেদা শরীরের কোষের ক্ষতিসাধন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। নিয়মিত সফেদা খেলে ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা কমে যায়। শ্বাসকষ্ট দূর করতে সাহায্য করে এবং ফুসফুস ভালো রাখে।

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী: 

সফেদার পুষ্টি এবং কার্বোহাইড্রেট কর্মজীবী গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অনেক উপকারী। এটা গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব এবং মাথা ঘোরা দূর করতে সাহায্য করে।

সফেদা খাওয়ার অসুবিধা: 

সফেদার অপকারিতা

সফেদা একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবার রয়েছে। তবে, সফেদা খাওয়ার কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন:

  • সফেদাতে ফাইবার বেশি থাকে। তাই কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা, গ্যাস ও ডায়রিয়া হতে পারে।
  • সফেদাতে অ্যালার্জির উপাদান থাকতে পারে। তাই যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের সফেদা খাওয়া উচিত নয়।

যদি আপনি সফেদা খেতে চান, তাহলে পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। এবং যদি আপনি কোনও অসুবিধা অনুভব করেন, তাহলে সফেদা খাওয়া বন্ধ করুন।

সম্পর্কিত:

চান্দা মাছ: চান্দা মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য।

November 24, 2024

চিনাবাদাম কি? চিনাবাদামের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

December 11, 2023

কাতলা মাছ এর যত পুষ্টিগুণ, বৈশিষ্ট্য ও উপকারিতা।

January 24, 2024

বরবটির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

September 3, 2023

আটা কি? আটা ও ময়দার মধ্যে পার্থক্য কি? আটার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা কি কি?

September 1, 2024

কাঠলিচু কি? জেনেনিন কাঠলিচুর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

July 15, 2024

পাবদা মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রেসিপি।

May 12, 2024

ভুট্টার পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। ভুট্টার জাত, উৎপত্তি ও চাষ।

September 19, 2023

পুঁটি মাছ: স্বাদ আর পুষ্টির সমাহার। পুঁটি মাছের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।

November 20, 2024

গজাল মাছ: গজাল মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য।

November 13, 2024
error: Content is protected !!