চিনা বাদামের পুষ্টিগুণ
চিনা বাদামের পুষ্টিগুণ অসাধারন। চিনা বাদাম শুধু মুখরোচক খাবারই নয়, এটি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এই ছোট্ট বাদামের মধ্যে রয়েছে একাধিক ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
চিনা বাদামের মূল পুষ্টিগুণ:
চিনা বাদাম সুস্বাদু খাবারের পাশাপাশি একটি পুষ্টিগুণেরও খনি। আসুন, চিনা বাদামের প্রতিটি পুষ্টি উপাদান, পরিমাণ, দৈনিক চাহিদা এবং তাদের কাজ ও চিনাবাদামের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ (প্রতি ১০০ গ্রাম) |
ক্যালোরি | 567 |
প্রোটিন | 25.8 গ্রাম |
চর্বি | 49 গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | 40.6 গ্রাম |
ফাইবার | 8.5 গ্রাম |
চিনি | 1.9 গ্রাম |
ভিটামিন ই | 37.4 মিলিগ্রাম (৪৪%) |
ম্যাগনেসিয়াম | 288 মিলিগ্রাম (৫১%) |
ফসফরাস | 326 মিলিগ্রাম (৩৮%) |
পটাশিয়াম | 630 মিলিগ্রাম (২৭%) |
আয়রন | 6.7 মিলিগ্রাম (৩২%) |
ক্যালসিয়াম | 90 মিলিগ্রাম (৯%) |
জিঙ্ক | 3.1 মিলিগ্রাম (৩১%) |
প্রোটিন:
চিনা বাদামে উচ্চমানের প্রোটিন পাওয়া যায়। প্রোটিন শরীরের কোষ গঠন, পেশী বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ফ্যাট:
চিনা বাদামে মূলত অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ কম এবং স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। এই ফ্যাটগুলি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ফাইবার:
চিনা বাদামে ফাইবারের পরিমাণও বেশি। ফাইবার পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ই:
চিনা বাদামে ভিটামিন ই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। ভিটামিন ই কোষকে মুক্ত রডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।
ম্যাঙ্গানিজ:
ম্যাঙ্গানিজ হাড়ের স্বাস্থ্য এবং শরীরের বিভিন্ন এনজাইমের কাজে সহায়তা করে।
ম্যাগনেসিয়াম:
ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্য, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং পেশির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফসফরাস:
ফসফরাস হাড়ের স্বাস্থ্য এবং শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।
অন্যান্য পুষ্টি উপাদান:
এছাড়াও চিনা বাদামে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, জিঙ্ক, কপার ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।
চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা:
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: চিনা বাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অন্যান্য উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: চিনা বাদামে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরে রাখে এবং ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে সহজ করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: চিনা বাদামে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে: চিনা বাদামে থাকা ভিটামিন ই ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখতে সাহায্য করে।
কত পরিমাণ চিনা বাদাম খাওয়া উচিত?
দৈনিক 20-30টি চিনা বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত চিনা বাদাম খাওয়া ক্যালরি বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই পরিমাণ মতো চিনা বাদাম খাওয়া উচিত।
কোন কোন খাবারে চিনা বাদাম ব্যবহার করা যায়?
চিনা বাদামকে বিভিন্ন ধরনের খাবারে ব্যবহার করা যায়। যেমন:
- সলাদ
- দই
- মুসলি
- বেকড আইটেম
- স্মুজি
সতর্কতা:
যদি আপনার কোন ধরনের অ্যালার্জি থাকে, তাহলে চিনা বাদাম খাওয়ার আগে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সারসংক্ষেপ:
চিনা বাদাম পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাবার। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। তাই সুস্থ থাকতে আপনার দৈনিক খাদ্যতালিকায় চিনা বাদামকে অন্তর্ভুক্ত করুন।
আরো জানতে চাইলে নিচের লিঙ্কগুলোতে ঘুরে আসতে পারেন: