Skip to content
Home » MT Articles » পুদিনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা ও ব্যবহার।

পুদিনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা ও ব্যবহার।

পুদিনা পাতা

পুদিনা পাতা

পুদিনা একটি বহুবর্ষজীবী ভেষজ যা ইউরোপ এবং এশিয়ার স্থানীয়।পুদিনা পাতার ইংরেজি নাম: Spearmint, বা spear mint. পুদিনার পাতা এখন বিশ্বের অনেক জায়গায় পাওয়া যায়। পুদিনার ফুল সাধারণত সাদা, গোলাপী বা বেগুনি হয়। পুদিনা সর্দি-কাশির উপসর্গ উপশম করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও পুদিনা ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। এটি মুখরোধক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং এটি মাথার খুশকি ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে। পাতাগুলি তাজা বা শুকনো ব্যবহার করা যেতে পারে এবং এগুলি চা, জেলি, চাটনি এবং সস সহ বিভিন্ন খাবার এবং পানীয়তে ব্যবহৃত হয়। পুদিনা এসেনশিয়াল অয়েলও পাওয়া যায়।

পুদিনা পাতার উপকারিতা/ভেষজগুণ:

পুদিনা পাতার উপকারিতা

স্বাস্থ্যের জন্য:

  • হজম উন্নত করে: পুদিনা পাতায় থাকা মেন্থল হজম রসের উৎপাদন বৃদ্ধি করে, যা হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে এবং পেট খারাপ, বমি বমি ভাব এবং গ্যাসের মতো সমস্যা উপশম করতে সাহায্য করে।
  • ব্যথা কমায়: পুদিনা পাতায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মাথাব্যথা, পেট ব্যথা, পেশী ব্যথা এবং গেঁটেবাতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • শ্বাসকষ্ট উপশম করে: পুদিনা পাতা ঠান্ডা, সর্দি, কাশি এবং ব্রঙ্কাইটিসের মতো শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা উপশম করতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: পুদিনা পাতায় ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: পুদিনা পাতা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে, দাঁতের ফাঁক থেকে খাবারের কণা অপসারণ করতে এবং মাড়ির রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

ত্বকের জন্য:

  • মুখরোধক হিসেবে কাজ করে: পুদিনা পাতায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মুখের ব্রণ এবং ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • ত্বককে ঠান্ডা রাখে: পুদিনা পাতায় থাকা মেন্থল ত্বককে ঠান্ডা রাখতে এবং জ্বালা ও চুলকানি উপশম করতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে: পুদিনা পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষের ক্ষতি রোধ করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

চুলের জন্য:

  • চুলকানি কমায়: পুদিনা পাতায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য চুলের ত্বকের চুলকানি এবং ফুসকুড়ি কমাতে সাহায্য করে।
  • খুশকি দূর করে: পুদিনা পাতা চুলের খুশকি দূর করতে এবং চুলকে নরম ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
  • চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে: পুদিনা পাতা চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে এবং চুলকে ঘন ও শক্ত করতে সাহায্য করে।

আরোও পড়ুন

তুলসী পাতা কেন খাবেন? তুলসী পাতার ১০টি অসাধারণ ভেষজ গুণ।

পুদিনা পাতার অপকারিতা:

  • অ্যালার্জি: কিছু লোকের পুদিনা পাতার প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে, যার ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি, এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের জন্য: গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের পুদিনা পাতা এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এর প্রভাব সম্পর্কে এখনও পর্যাপ্ত গবেষণা হয়নি।
  • পেট খারাপ: অতিরিক্ত পুদিনা পাতা সেবন পেট খারাপ, বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে।
  • হজম সমস্যা: যাদের হজম সমস্যা আছে তাদের পুদিনা পাতা সেবন সীমিত করা উচিত, কারণ এটি পেটে অম্বল এবং গ্যাসের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া: পুদিনা পাতা কিছু ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। তাই যদি আপনি কোনও ওষুধ সেবন করেন, তাহলে পুদিনা পাতা সেবন করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
পুদিনা পাতার অপকারিতা

পুদিনা পাতা খাওয়ার নিয়ম ও ব্যবহার:

পুদিনা পাতা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যেতে পারে:

তাজা পাতা:

  • চা:
    • ১ কাপ গরম পানিতে 5-6 টি পুদিনা পাতা 5 মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে নিন।
    • ঐচ্ছিক: মধু বা লেবুর রস যোগ করতে পারেন।
  • সালাদ:
    • পুদিনা পাতা কেটে সালাদে যোগ করুন।
  • স্যুপ:
    • স্যুপ তৈরির সময় পুদিনা পাতা যোগ করুন।
  • জেলি:
    • পুদিনা পাতা দিয়ে জেলি তৈরি করুন।
  • ডেজার্ট:
    • পুদিনা পাতা দিয়ে ডেজার্ট তৈরি করুন।
পুদিনা পাতা খাওয়ার নিয়ম

শুকনো পাতা:

  • গুঁড়ো:
    • শুকনো পুদিনা পাতা গুঁড়ো করে ত্বকের প্যাক এবং চুলের মাস্ক তৈরিতে ব্যবহার করুন।
  • চা:
    • 1 কাপ গরম পানিতে 1 চা চামচ পুদিনা গুঁড়ো মিশিয়ে 5 মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে নিন।

পুদিনা এসেনশিয়াল অয়েল:

  • অ্যারোমাথেরাপি:
    • অ্যারোমাথেরাপির জন্য পুদিনা এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করুন।
  • স্থানীয় ব্যবহার:
    • পাতলা করে তেলের সাথে মিশিয়ে ত্বকে বা চুলে লাগান।

This article is written with the help of Gemini.

Latest Post

নারিকেল

নারিকেল: নারিকেলের তেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সত্যিই কি উপকারী?

নারিকেল ফল নারিকেল একটি বহুল পরিচিত ফল। এটি পাম পরিবারভুক্ত একবীজপত্রী উদ্ভিদ। নারকেল গাছ সাধারণত উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় জন্মে। ...
টক পালং শাক

টক পালং শাক: জেনেনিন টক পালং শাকের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও রেসিপি।

টক পালং শাক টক পালং শাক (বৈজ্ঞানিক নাম: Rumex acetosa) এক প্রকার শাক। এটি Polygonaceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। টক পালং শাক ...
লেটুস পাতা

লেটুস পাতা: পুষ্টির ভান্ডার।

লেটুস পাতা: লেটুস পাতা, সালাদে ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় সবজি, শুধু স্বাদেই নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। এর পাতাগুলোতে রয়েছে প্রচুর ...
ক্যাপসিকাম

ক্যাপসিকাম: ক্যাপসিকামের উপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও প্রকারভেদ।

ক্যাপসিকাম: ক্যাপসিকাম, আমরা অনেকেই একে শুধু মরিচ হিসেবে চিনি। কিন্তু এই মরিচই রান্নায় রঙ আর স্বাদের এক অনন্য মাত্রা যোগ ...
এইচএমপিভি

এইচএমপিভি কি ভয়ঙ্কর? কিভাবে ছড়ায় এবং কি কি সতর্কতা নেবেন।

এইচএমপিভি (Human Metapneumovirus) কি? এইচএমপিভি (Human Metapneumovirus) হলো একটি সাধারণ শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস যা বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ ...
ব্রিকেট মাছ

ব্রিকেট মাছ: মিঠা পানির সুস্বাদু একটি মাছ।

ব্রিকেট মাছ: ব্রিকেট মাছ বাংলাদেশের নদী, খাল, বিল ও হাওরের একটি পরিচিত মিঠা পানির মাছ। এটি স্থানীয়ভাবে “বিকেট মাছ”, “ব্রিকেট ...

স্বাস্থ্য কথা

এইচএমপিভি

এইচএমপিভি কি ভয়ঙ্কর? কিভাবে ছড়ায় এবং কি কি সতর্কতা নেবেন।

এইচএমপিভি (Human Metapneumovirus) কি? এইচএমপিভি (Human Metapneumovirus) হলো একটি সাধারণ শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস যা বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ ...
চোখের ছানি

চোখের ছানি কি? কেন হয়? এর চিকিৎসা কি ও প্রতিরোধ করবেন কিভাবে?

চোখের ছানি কি? কেন হয়? চোখের ছানি (Cataracts) হল চোখের লেন্সের একটি অস্বচ্ছ বা ঘোলাটে হয়ে যাওয়া অবস্থা। চলুন জেনে ...
রক্তের চর্বি কমানোর উপায়

রক্তের চর্বি কি? রক্তের চর্বি বৃদ্ধির কারণ ও কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।

রক্তের চর্বি কি? : (সংক্ষিপ্ত বিবরণ) রক্তের চর্বি বা কলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। এটি কোষের ঝিল্লি তৈরি, ...
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার: শরীরকে সুস্থ রাখার মূল চাবিকাঠি

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার: শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি আয়রন আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খনিজ পদার্থ। এটি রক্তের লোহিত কণিকা ...
লিভারের কাজ ও গুরুত্ব

লিভারের কাজ ও গুরুত্ব কি? লিভার ভাল রাখতে করনীয় কি?

লিভার : লিভার (যাকে যকৃৎ বা কলিজাও বলা হয়) আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি। লিভারের অবস্থান উদরগহ্বরের ডানদিকে, পাকস্থলীর নীচে। ...
কিডনির পাথর

কিডনির পাথর কি? কিডনিতে পাথর কেন হয়? কিভাবে প্রতিরোধ করবেন?

কিডনির পাথর কি? আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের খাদ্য গ্রহণ করে থাকি। এসব খাবারে থাকে বিভিন্ন ধরনের কনিজ উপাদান যা আমাদের ...

খাদ্য ও পুষ্টিগুণ – (ভেষজ)

কেশরাজ পাতা

কেশরাজ পাতা এর উপকারিতা, অপকারিতা ও ব্যবহার।

কেশরাজ পাতা কেশরাজ পাতা, যার বৈজ্ঞানিক নাম Eclipta prostrata, এটি একটি আয়ুর্বেদিক ঔষধি উদ্ভিদ যা ভারতীয় উপমহাদেশে সহজলভ্য। কেশরাজ পাতা ...
অর্জন গাছ

অর্জুন গাছ এর ছাল ও পাতার উপকারিতা জানলে অবাক হবেন আপনিও!

অর্জুন গাছ অর্জুন গাছ (Terminalia arjuna) হল টারমিনালিয়া গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এটি ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ...
লজ্জাবতী গাছ

লজ্জাবতী গাছের উপকারিতা, অপকারিতা ও ব্যবহার।

লজ্জাবতী গাছ লজ্জাবতী গাছ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Mimosa pudica, মিমোসাসি পরিবারের একটি ছোট লতানো গাছ। লজ্জাবতী গাছের ইংরেজি নাম Mimosa ...
বাসক পাতার উপকারিতা, অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম।

বাসক পাতার উপকারিতা, অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম।

বাসক পাতা বাসক পাতা (basuku) হচ্ছে একটি ভেষজ উদ্ভিদ যা বাংলাদেশ সহ ভারত উপমহাদেশে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।বাসক পাতার বৈজ্ঞানিক ...
শতমূলী গাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, বৈশিষ্ট্য ও খাওয়ার নিয়ম।

শতমূলী গাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, বৈশিষ্ট্য ও খাওয়ার নিয়ম।

শতমূলী শতমূলী যা শতাবরী এবং সাতাওয়ার নামেও পরিচিত, একটি লতানো বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ যা Asparagaceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। শতমূলী গাছের ইংরেজি নাম ...
সজনে পাতা

সজনে পাতার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। সজনে পাতা গুড়া তৈরি ও খাওয়ার নিয়ম।

সজনে পাতা কি? সজনে পাতা হলো সজিনা গাছের (Moringa oleifera) পাতা। এটি একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার যা দক্ষিণ ...

সম্পর্কিত:

error: Content is protected !!