তুলসী পাতা
তুলসী পাতা হল ল্যামিয়াসি পরিবারের একটি সুগন্ধি, মরিচযুক্ত ভেষজ।এটি ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় এবং হিন্দু ধর্মে একটি পবিত্র গাছ হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি একটি জনপ্রিয় ভেষজ এবং এটি বিভিন্ন রকমের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। পাতাগুলোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ইহা ঠান্ডা, কাশি, জ্বর এবং মাথাব্যথার মতো সাধারণ অসুস্থতা থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মতো আরও গুরুতর অসুস্থতা চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
তুলসী পাতার পুষ্টিগুণ:
পরিমাণ: 1 কাপ (20 গ্রাম) কাটা তাজা তুলসী পাতা
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ | ডিভি(%) |
---|---|---|
ক্যালোরি | 2 | – |
চর্বি | 0 গ্রাম | – |
স্যাচুরেটেড ফ্যাট | 0 গ্রাম | – |
ট্রান্স ফ্যাট | 0 গ্রাম | – |
অস্যাচুরেটেড ফ্যাট | 0 গ্রাম | – |
কোলেস্টেরল | 0 মিলিগ্রাম | – |
সোডিয়াম | 2 মিলিগ্রাম | – |
কার্বোহাইড্রেট | 0.5 গ্রাম | – |
ফাইবার | 0 গ্রাম | – |
চিনি | 0 গ্রাম | – |
প্রোটিন | 0.5 গ্রাম | – |
ভিটামিন:
ভিটামিন | পরিমাণ | ডিভি(%) |
---|---|---|
ভিটামিন এ | 10% DV | – |
ভিটামিন সি | 16% DV | – |
ভিটামিন কে | 22% DV | – |
খনিজ:
খনিজ | পরিমাণ | ডিভি(%) |
---|---|---|
ক্যালসিয়াম | 2% DV | – |
আয়রন | 6% DV | – |
ম্যাগনেসিয়াম | 6% DV | – |
পটাসিয়াম | 5% DV | – |
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট:
- ইউজেনল
দ্রষ্টব্য:
- ডিভি(%) = দৈনিক চাহিদার পরিমানের শতাংশ
- এই টেবিলটি কেবলমাত্র তাজা তুলসী পাতার জন্য প্রযোজ্য। শুকনো তুলসী পাতার পুষ্টির উপাদানের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।
তুলসী পাতার উপকারিতা/ভেষজ গুণ:
১. ঠান্ডা ও কাশি প্রতিরোধে: তুলসী পাতায় অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ঠান্ডা ও কাশির জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
২. প্রদাহ কমায়: তুলসী পাতায় প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা গেঁটেবাত, বাত এবং হৃদরোগের মতো প্রদাহজনিত অবস্থার সাথে যুক্ত ব্যথা ও ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
৩. মানসিক চাপ কমায়: তুলসী পাতায় অ্যাডাপ্টোজেনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরকে মানসিক চাপের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: তুলসী পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
৫. হজম উন্নত করে: এটি হজমশক্তি উন্নত করতে এবং পেট খারাপের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
৬. ত্বকের যত্ন: তুলসী পাতার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৭. মুখের স্বাস্থ্য: ইহা মুখের জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে এবং দাঁতের ক্ষয় ও মাড়িরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৮. ক্যান্সার প্রতিরোধে: তুলসী পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধে সাহায্য করতে পারে।
৯. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
১০. ওজন কমাতে: তুলসী পাতার চা বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি করে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
তুলসী পাতার অপকারিতা/পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
1. গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলাদের জন্য: তুলসী পাতা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই গর্ভবতী মহিলাদের এটি খাওয়া উচিত নয়। স্তন্যদানকারী মহিলাদেরও ইহা খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
2. রক্ত পাতলা করার ঔষধের সাথে মিথস্ক্রিয়া: রক্ত পাতলা করতে পারে তুলসী পাতার রস। তাই যারা রক্ত পাতলা করার ঔষধ খান তাদের এটি খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
3. অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া: কিছু লোকের তুলসী পাতার প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে।এটি খাওয়ার পর যদি কোনো অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন চুলকানি, ফুলে যাওয়া বা শ্বাসকষ্ট, তাহলে তা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।
4. অতিরিক্ত ব্যবহার: তুলসী পাতার অতিরিক্ত ব্যবহার হজম সমস্যা, মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাবের কারণ হতে পারে।
তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম:
তুলসী পাতা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যেতে পারে। এখানে তুলসী পাতা খাওয়ার কিছু নিয়ম দেওয়া হল:
১. তুলসী চা:
- একটি কাপ পানিতে ৫-৬টি তুলসী পাতা দিয়ে ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন।
- ছেঁকে ঐ চা গরম গরম পান করুন।
- স্বাদ অনুযায়ী মধু বা লেবু মিশিয়ে খেতে পারেন।
২. তুলসী পাতার রস:
- তুলসী পাতা ধুয়ে পানিতে ব্লেন্ড করে রস তৈরি করুন।
- ছেঁকে ঐ রস সকালে খালি পেটে পান করুন।
- স্বাদ অনুযায়ী মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
৩. তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া:
- সকালে খালি পেটে ৫-৬টি তুলসী পাতা ধুয়ে চিবিয়ে খান।
- পানি দিয়ে গিলে ফেলুন।
৪. তুলসী পাতা সালাদে:
- সালাদে তুলসী পাতা কুচি করে মিশিয়ে খান।
৫. তুলসী পাতার তেল:
- তুলসী পাতার তেল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।
- সকালে খালি পেটে এক চা চামচ তুলসী পাতার তেল গরম পানির সাথে খেতে পারেন।
This article is written with the help of Gemini