Skip to content
Home » MT Articles » কমলা খাওয়ার উপকারিতা ও কমলার পুষ্টিগুণ।

কমলা খাওয়ার উপকারিতা ও কমলার পুষ্টিগুণ।

কমলা খাওয়ার উপকারিতা

কমলা

কমলাকে বলা হয় শতগুণে সমৃদ্ধ ফল। এর যেমন রূপ তেমনি গুণও।পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলেন, কমলার কোয়া ও খোসা দুটোই পুষ্টিতে ভরপুর। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন কমলা খাওয়ার দরকার। শীতকালে বাজারে কমলার আমদানি বাড়ে। দামও কমে চলে আসে নাগালের মধ্যে। তাই পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা এই সময়ে বেশি বেশি কমলা খাওয়ার পরামর্শ দেন।কমলা অসম্ভব সুস্বাদু একটি ফল । দেখা মাত্রই সবার খেতে মন চায় ।এটি শুধুমাত্র সুস্বাদু বললে ভুল হবে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, নিউট্রিয়েন্ট এন্ড রোগ প্রতিরোধ করার অসাধারণ ক্ষমতা।

কমলার পুষ্টিগুণ:

কমলা একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল যা ভিটামিন সি, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের একটি ভাল উৎস। একটি মাঝারি আকারের কমলা (১০০ গ্রাম) প্রায় নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে:

  • ক্যালোরি: ৪৭
  • কার্বোহাইড্রেট: ১১ গ্রাম
  • ডায়াটারি ফাইবার: ৩ গ্রাম
  • চিনি: ৮ গ্রাম
  • প্রোটিন: ১ গ্রাম
  • ভিটামিন সি: ১১৬% দৈনিক মূল্য (ডিভি)
  • ভিটামিন এ: ৬% ডিভি
  • পটাশিয়াম: ১৭% ডিভি
  • ফোলেট: ৬% ডিভি
  • ফাইবার: ৩ গ্রাম

কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কমলাতে ফাইবারও রয়েছে যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে, কোলেস্টেরল মাত্রা কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

কমলা খাওয়ার উপকারিতা: 

কমলা

কমলা একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল যা আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। আপনি কমলাকে সরাসরি খেতে পারেন, রস তৈরি করতে পারেন, সালাদ বা অন্যান্য খাবারগুলিতে যোগ করতে পারেন।

ক্যান্সার প্রতিরোধে কমলা:

কমলা এমন একটি খাবার যা আপনার ক্যান্সারের কোষ গুলোকে আপনার শরীর থেকে নিমিষেই দূর করে দিতে পারে। কমলায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এর পাশাপাশি রয়েছে আলফা ও বিটা ক্যারোটিন এর মত ফ্ল্যাভোনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে । কমলার উচ্চমাত্রার পুষ্টিগুণ  হচ্ছে প্লাবনয়েড যা ফুসফুস এবং ক্যাভিটি ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর।

কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে কমলা:

ফলটিতে অনেক বেশি দ্রবণীয় ফাইবার থাকে। এই দ্রবণীয় ফাইবারকে বলা হয় পেকটিন। পেকটিন রক্তের সাথে শোষিত হওয়ার আগেই মানব শরীরের কোলেস্টেরল দুর করতে ভুমিকা রাখে। শুধু তাই না, খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) দুর করার পাশাপাশি ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বৃদ্ধিতে কাজ করে পেকটিন। অর্থাৎ, কমলায় থাকা দ্রবণীয় ফাইবার সরাসরি শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

চোখের জন্য উপকারি কমলা:

ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ একটি ফল কমলা। কমলার মধ্যে থাকা ভিটামিন এ চোখের শ্লেষ্মা ঝিল্লি স্বাস্থ্যকর রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন এ চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারি। কমলা খাওয়ার ফলে চোখকে আলো শোষণে অত্যন্ত সহায়তা করে।

ডায়াবেটিসে নিয়ন্ত্রণে কমলার ভূমিকা:

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির কমলা খাওয়া খুবই দরকারী। কমলায় উপস্থিত পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সরাসরি সহায়তা করে। এটি শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনে সহায়তা করে। নিয়মিত কমলা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করে।

ওজন কমাতে কমলা:

কমলায় যে পরিমাণে ভিটামিন সি ও ফাইবার থাকে তা মেদ কমাতে অত্যন্ত সহায়তা করে।  যা শরীরের ওজন বাড়তে বাধা দেয়। শরীরের ভারসাম্যতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

ত্বক সুরক্ষায় কমলা:

কমলা ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপস্থিত থাকে। ত্বককে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে কমলার এই উপাদানটি। এটি ত্বক সুন্দর করতেও অত্যন্ত ভুমিকা রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কমলা:

কমলা ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি উপস্থিত থাকে। যা স্বাস্থ্যকর ইমিউন সিস্টেমের যথাযথ কার্যকারিতার জন্য দরকারী। যেমন সর্দি-কাঁশি রোধ এবং বার বার কানের সংক্রমণ রোধে অসামান্য ভুমিকা রাখে।

আরোও পড়ুন

খেজুরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ।

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কমলা:

ত্বকের সৌন্দর্যতা এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি দরকার ।আর কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকে ।বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বক ও দ্রুত বুড়িয়ে যেতে শুরু করে। ভিটামিন সি ছাড়াও কমলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ ত্বককে সতেজ ও সজীব রাখতে সাহায্য করে। কমলাতে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন সেল ড্যামেজ প্রতিরোধে সহায়তা করে ।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে কমলা:

কমলায় পেকটিনের পরিমাণ বেশ ভালো ।  আর পেকটিন হলো আঁশ। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে । 

বাতের ব্যথা কমাতে কমলা:

কমলা লেবুতে ভিটামিন সি রয়েছে যা একটি ভাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে বিবেচিত করা হয়। যা জয়েন্টগুলোতে প্রদাহ বা ব্যাথা কমাতে সহায়তা করে। এগুলি ছাড়াও, ফিয়ানোট্রিয়েন্ট জেক্সটিং  এবং বিটা-ক্রিপ্টোক্সানথিনের জারণ থেকে রক্ষা করতে সরাসরি সহায়তা করে। 

কমলা খাওয়ার অপকারিতা:

কমলা একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল যা ভিটামিন সি, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের একটি ভাল উৎস। তবে, কমলা খাওয়ার কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা রয়েছে।

  • অতিরিক্ত চিনি: কমলাতে চিনির পরিমাণ বেশি। একটি মাঝারি আকারের কমলায় প্রায় ৮ গ্রাম চিনি থাকে। অতিরিক্ত চিনি ওজন বৃদ্ধি, দাঁতের ক্ষয় এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • অ্যালার্জি: কমলায় কিছু লোকের অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি, নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া এবং শ্বাসকষ্ট।
  • অম্বল: কমলাতে অম্লতা থাকায় কিছু লোকের অম্বল হতে পারে। অম্বলের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বুকে জ্বালা, বমি বমি ভাব এবং বমি।

কমলা একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল, তবে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। আপনি যদি কমলা খেয়ে অ্যালার্জি বা অম্বলের মতো কোনও সমস্যা অনুভব করেন তবে এটি খাওয়া বন্ধ করা উচিত।

error: Content is protected !!