Skip to content
Home » MT Articles » ছোলা ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রান্না প্রণালী।

ছোলা ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রান্না প্রণালী।

ছোলা ডাল

ছোলা ডাল

ছোলা ডাল বা চনার ডাল হলো একটি জনপ্রিয় দক্ষিণ এশিয়ান ডাল যা ছোলা বাদাম (Cicer arietinum) দিয়ে তৈরি। ছোলা ডালের ইংরেজি নাম Chickpeas। এটি ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার খাবারে একটি মূল উপাদান।ছোলা ডাল প্রোটিন, ফাইবার এবং খনিজ পদার্থের একটি ভালো উৎস। এতে প্রোটিন, আয়রন, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। এটি ফাইবারের একটি ভালো উৎস, যা হজম এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।ছোলা ডাল বিভিন্নভাবে রান্না করা যেতে পারে। এটি প্রায়শই স্যুপ, স্টু এবং কারি তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। এটি রুটি এবং অন্যান্য খাবারের সাথে একটি সাইড ডিশ হিসাবেও পরিবেশন করা যেতে পারে।

ছোলা ডালের পুষ্টিগুণ:

ছোলা ডালের পুষ্টিগুণ
ক্যালোরি269
প্রোটিন15 গ্রাম
চর্বি4 গ্রাম
ফাইবার12 গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট44 গ্রাম
চিনি8 গ্রাম
স্যাচুরেটেড ফ্যাট0.5 গ্রাম
সোডিয়াম370 মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম518 মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম43 মিলিগ্রাম
লোহা2.4 মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম74 মিলিগ্রাম
জিঙ্ক3.3 মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি60.2 মিলিগ্রাম
ফোলেট164 মাইক্রোগ্রাম

ছোলা ডাল রান্নার উপায়:

ছোলা ডাল রান্নার দুটি জনপ্রিয় উপায়:

প্রেসার কুকারে ছোলা ডাল:

উপকরণ:

  • ছোলা ডাল – ১ কাপ
  • পেঁয়াজ কুচি – ১/২ কাপ
  • আদা বাটা – ১ টেবিল চামচ
  • রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
  • টমেটো কুচি – ১/২ কাপ (ঐচ্ছিক)
  • হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • জিরা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • ধনে গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • লঙ্কা গুঁড়ো – ১/৪ চা চামচ (স্বাদ অনুযায়ী)
  • লবণ – স্বাদ অনুযায়ী
  • তেল – ২ টেবিল চামচ
  • ধনেপাতা কুচি – সাজানোর জন্য (ঐচ্ছিক)

আরোও পড়ুন

মাষকলাই ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রান্না প্রণালী।

রান্না প্রণালী:

  1. ছোলা ডাল ভালো করে ধুয়ে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন।
  2. একটি প্রেসার কুকারে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি বাদামী করে ভাজুন।
  3. আদা বাটা, রসুন বাটা এবং টমেটো কুচি (যদি ব্যবহার করেন) দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভাজুন।
  4. হলুদ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো এবং লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে মসলা কষিয়ে নিন।
  5. ভেজানো ছোলা ডাল, লবণ এবং প্রয়োজনমতো পানি যোগ করুন।
  6. প্রেসার কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে ৩-৪ সিটি বাজান।
  7. চাপ কমে গেলে ঢাকনা খুলে নরম ছোলা ডাল নামিয়ে নিন।
  8. ধনেপাতা কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

তেলে ভাজা ছোলা ডাল:

উপকরণ:

  • ছোলা ডাল – ১ কাপ
  • পেঁয়াজ কুচি – ১/২ কাপ
  • আদা বাটা – ১ টেবিল চামচ
  • রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
  • টমেটো কুচি – ১/২ কাপ (ঐচ্ছিক)
  • হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • জিরা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • ধনে গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
  • লঙ্কা গুঁড়ো – ১/৪ চা চামচ (স্বাদ অনুযায়ী)
  • লবণ – স্বাদ অনুযায়ী
  • তেল – ২ টেবিল চামচ
  • তিল – ১ টেবিল চামচ
  • ধনেপাতা কুচি – সাজানোর জন্য (ঐচ্ছিক)
ছোলা ডাল রেসিপি

প্রণালী:

  1. ছোলা ডাল ভালো করে ধুয়ে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন।
  2. একটি কড়াইতে তেল গরম করে তিল ভেজে নিন।
  3. পেঁয়াজ কুচি বাদামী করে ভাজুন।
  4. আদা বাটা, রসুন বাটা এবং টমেটো কুচি (যদি ব্যবহার করেন) দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভাজুন।
  5. হলুদ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো এবং লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে মসলা কষিয়ে নিন।
  6. ভেজানো ছোলা ডাল, লবণ এবং প্রয়োজনমতো পানি যোগ করুন।
  7. অবশেষে নামিয়ে পরিবেশন করুন।


ছোলা ডালের উপকারিতা:

১) হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়:

ছোলা ডালে থাকা ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। এছাড়াও, ছোলা ডালে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

২) রক্ত ​​শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:

ছোলা ডালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, যার মানে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি ভালো খাবার করে তোলে।

৩) হজম উন্নত করে:

ছোলা ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে এবং নিয়মিত পায়খানা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

ছোলার উপকারিতা

৪) ওজন হ্রাসে সাহায্য করে:

ছোলা ডাল প্রোটিন এবং ফাইবারের একটি ভালো উৎস, যা আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণ রাখতে সাহায্য করে। এটি ক্যালোরি গ্রহণ কমাতে এবং ওজন হ্রাসে সাহায্য করতে পারে।

৫) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:

ছোলা ডালে প্রচুর পরিমাণে লোহা, জিঙ্ক এবং ফসফরাস থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৬) হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো:

ছোলা ডালে ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই খনিজগুলি হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

৭) ত্বকের জন্য ভালো:

ছোলা ডালে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বকের কোষগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং বয়সের লক্ষণগুলি হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে।

৮) চুলের জন্য ভালো:

ছোলা ডালে প্রোটিন এবং লোহা থাকে, যা চুলের বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি চুলের পাতলা হওয়া এবং ভাঙা রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

৯) মস্তিষ্কের জন্য ভালো:

ছোলা ডালে থাকা থায়ামিন মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

১০) রক্ত ​​চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:

ছোলা ডালে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা রক্ত ​​চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। উচ্চ রক্ত ​​চাপ হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। ছোলা ডাল খাওয়া এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ছোলা ডালের অপকারিতা:

১) গ্যাসের সমস্যা:

ছোলা ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজমের জন্য ভালো হলেও, কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটি গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যারা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে অভ্যস্ত নন তাদের জন্য।

 ফুল ছোলা ডাল
ছোলা ডালের ফুল

২) পেট ফোলাভাব:

অতিরিক্ত ছোলা ডাল খাওয়া কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে পেট ফোলাভাবের কারণ হতে পারে।

৩) অ্যালার্জি:

কিছু ব্যক্তির ছোলা ডালের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ফুসকুড়ি, চুলকানি, বমি বমি ভাব এবং পেটে ব্যথা।

৪) কিডনির পাথরের ঝুঁকি:

যারা কিডনির পাথরের ঝুঁকিতে আছেন তাদের ছোলা ডাল সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত কারণ এতে অক্সালেট থাকে যা কিডনির পাথর তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

This article is written with the help of Gemini

error: Content is protected !!