Skip to content
Home » MT Articles » আমড়া খাওয়ার ৯ টি উপকারিতা।আমড়ার পুষ্টিগুণ।

আমড়া খাওয়ার ৯ টি উপকারিতা।আমড়ার পুষ্টিগুণ।

আমড়া খাওয়ার ৯ টি উপকারিতা

আমড়া

বিশেষজ্ঞরা বলেন, মৌসুমি ফল খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এখন বাজারে সহজেই  মিলবে সুস্বাদু ফল আমড়া।আমড়ার ইংরেজি নাম হগ প্লাম (Hog-plum). এটি সাধারণত কাঁচাই খাওয়া হয়। এটি কাঁচা খাওয়ার পাশাপাশি  সুস্বাদু আচার, চাটনি এবং জেলি তৈরি করা যায় আমড়া থেকে । অনেকে তরকারি হিসেবে রান্না করে খান। আমড়াতে রয়েছে অনেক পুষ্টি যা প্রায় তিনটি আপেলের পুষ্টির সমান । আপেলের চেয়ে আমড়ায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে। পুষ্টিতে ভরপুর আমড়া একটি জনপ্রিয় ফল।। আমড়া ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল।মুখে রুচি বৃদ্ধিসহ অসংখ্য গুনাগুন রয়েছে আমড়ায়। আমড়া খেতে টক-মিষ্টি স্বাদের। দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া, দাঁতের গোড়া থেকে পুজ ও রক্ত পড়া, প্রচণ্ড ব্যথা হওয়া, খাবার খেতে অসুবিধা হওয়া, অকালে দাঁত ঝরে যাওয়া ইত্যাদি প্রতিরোধে আমড়ার ভূমিকা অনন্য। বিভিন্ন রকমের ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, সর্দি, কাঁশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় আমড়া অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে। শিশুদের দৈহিক গঠনে এটি খুব দরকারি। রক্তস্বল্পতাও দূর করে।

আমড়ার পুষ্টিগুণ:

আমড়া একটি পুষ্টিকর ফল যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে। একটি মাঝারি আকারের আমড়া (১০০ গ্রাম)-এ নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদান থাকে:

  • ক্যালোরি: ৫৯
  • কার্বোহাইড্রেট: ১৪ গ্রাম
  • চিনি: ১০ গ্রাম
  • ফাইবার: ৩ গ্রাম
  • প্রোটিন: ১ গ্রাম
  • ভিটামিন সি: ১৫ মিলিগ্রাম (দৈনিক ভোজনের ৩৩%)
  • ভিটামিন এ: ১০০০ আইইউ (দৈনিক ভোজনের ২৫%)
  • পটাশিয়াম: ২৬০ মিলিগ্রাম (দৈনিক ভোজনের ৭%)
  • ম্যাগনেসিয়াম: ১৯ মিলিগ্রাম (দৈনিক ভোজনের ৫%)
  • ক্যালসিয়াম: ১১ মিলিগ্রাম (দৈনিক ভোজনের ১%)

আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও থাকে, যা শরীরকে ক্ষতিকারক ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে রক্ষা করতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।

আমড়া খাওয়ার উপকারিতা:

আমড়া খাওয়ার ৯ টি উপকারিতা
আমড়া

আমড়া একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল যা আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এটিকে সরাসরি খেতে পারেন, জুস তৈরি করতে পারেন, সালাদ বা অন্যান্য খাবারের সাথে যোগ করতে পারেন।

১. ভিটামিন সি এর উৎকৃষ্ট উৎস: 

ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলাজেনের উৎপাদনে সাহায্য করে। কোলাজেন স্কিন, লিগামেন্ট, টেন্ডন ও কার্টিলেজকে স্বাস্থ্যবান রাখতে সহায়তা করে। এই ফলটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল। আমড়ার ভিটামিন সি ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় এটি খেলে স্কার্ভি রোগ এড়ানো যায়।

২. কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে আমড়া:

এই ফলটি রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে স্ট্রোক ও হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে এবং শরীরের পেশী গঠনে সাহায্য করে।

৩. বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে আমড়া:

আমড়াতে বিদ্যমান পেকটিন জাতীয় ফাইবার বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ করে শরীরকে সুস্থ রাখে।।

৪. আমড়া সর্দি কাশি,ইনফ্লুঞ্জার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে:

আরোও পড়ুন

খেজুরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ।

বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমন থেকে রক্ষা করা ছাড়াও আমড়া সর্দি কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জীবাণুর বিরুদ্ধে বেশ ভাল কাজ করে। যার ফলে নানা সংক্রমণ থেকে সহজেই রক্ষা পাওয়া যায়।

৫. আমড়া মুখের রুচি ও ক্ষুধা বৃদ্ধি করে:  

আমড়ায় কিছু ভেষজ গুণ রয়েছে । এই ফলটি খেলে মুখের অরুচিভাব দূর হয় এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। 

৬. ক্যালসিয়ামের  উৎকৃষ্ট উৎস:

ক্যালসিয়ামের অভাব হলে হাড়ের রোগসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমড়া  ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস। প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে তাই আমড়ার সাহায্য নিতে পারেন। শিশুর দৈহিক গঠনেও ক্যালসিয়াম খুব দরকারি।  তাই শিশুদের এই ফল খেতে উৎসাহিত করতে পারেন।

৭. আয়রন এর ঘাটতি পূরণ করে আমড়া:

হিমোগ্লোবিন থাকে লাল রক্ত কণিকায়। তাই আয়রন জাতীয় খাবার বেশি খেলে লাল রক্ত কণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। সারা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহকারী হিমোগ্লোবিন ও মায়োগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে এ ফলের ভুমিকা রয়েছে।

৮. আমড়া ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:

আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় ৫৯ ক্যালরি থাকে। তাই ওজন কমতে সাহায্য করে আমড়া। বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে এই ফলটি।

৯. ত্বক সুস্থ রাখতে  আমড়া :

ত্বক, চুল ও নখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে আমড়া। ত্বকের ব্রণ কমাতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে আমড়া দারুণ ভূমিকা রাখে। আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে যা ত্বক উজ্জ্বল রাখতে খুবই  দরকার। তাই ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে নিয়মিত এই ফলটি খেতে পারেন।

আমড়ার অপকারিতা:

আমড়া খাওয়ার অপকারিতা

এটি একটি পুষ্টিকর ফল যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে আমড়ার অপকারিতাও হতে পারে। যেমন:

  • আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে, যা কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে।
  • আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা কিছু লোকেরা সহ্য করতে পারে না। ফাইবার পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
  • আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিড থাকে, যা দাঁতের ক্ষয় হতে পারে।
  • আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে, যা ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।

যদি আপনি আমড়া খেতে চান, তাহলে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। এছাড়া, আপনি যদি কোনও স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে এটি খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।

error: Content is protected !!