শিম
শিম একটি পুষ্টিকর সবজি যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। শিম ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। শিমের বিচিতে রয়চে প্রচুর পরিমান প্রোটিন। শিমে ভিটামিন এ, সি, কে, ফোলেট, আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং জিংক রয়েছে। শিম একটি সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর সবজি যা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়। এটি কাঁচা, রান্না বা শুকিয়ে খাওয়া যায়। কাঁচা শিম সালাদ, স্যালাড ড্রেসিং, জুস বা স্যুপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। রান্না করা শিম তরকারি, ভর্তা, ডাল, মাংস বা মাছ রান্নায় ব্যবহার করা হয়। শুকনো শিমের বীজ চা, মশলা বা ডাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
শিমের পুষ্টিগুণ:
শিম একটি পুষ্টিকর সবজি যা ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। নিচে শিমের পুষ্টি উপাদান পরিমাণ দেওয়া হল:
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
ক্যালোরি | 48 কিলোক্যালরি |
কার্বোহাইড্রেট | 6.7 গ্রাম |
প্রোটিন | 3.8 গ্রাম |
ফ্যাট | 0.2 গ্রাম |
খাদ্যআঁশ | 3.4 গ্রাম |
ফোলেট | 24 মাইক্রোগ্রাম |
নিয়াসিন | 1 মিলিগ্রাম |
ভিটামিন সি | 21.1 মিলিগ্রাম |
ভিটামিন এ | 375 আইইউ |
ভিটামিন ই | 0.36 মিলিগ্রাম |
ভিটামিন কে | 53 মাইক্রোগ্রাম |
সোডিয়াম | 8 মিলিগ্রাম |
পটাসিয়াম | 303 মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | 81 মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | 57 মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | 63 মিলিগ্রাম |
জিংক | 0.60 মিলিগ্রাম |
ক্যারটিন-বি | 225 মাইক্রোগ্রাম |
লুটেইন | 516 মাইক্রোগ্রাম |
শিমে ভিটামিন এ এবং সি এর ভালো উৎস, যা দৃষ্টিশক্তি, ত্বক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রক্ষায় সহায়তা করে। শিমে ফাইবার সমৃদ্ধ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে। শিমে প্রোটিনও রয়েছে, যা পেশী গঠন এবং মেরামত করতে সাহায্য করে।
শিমের উপকারিতা:

হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি:
শিমে ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে। ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:
শিমে ভিটামিন সি এবং এ এর ভালো উৎস, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি, ত্বক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রক্ষায় সহায়তা করে।
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ:
শিম রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। শিমে ফাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে, যা রক্তের শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো:
শিম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। শিমে ফাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে, যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। শিমে ভিটামিন সিও রয়েছে, যা রক্তনালীগুলোকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
আরোও পড়ুন
কচুর কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে? কচু খেলে কি কি উপকার ও অপকার হতে পারে?
ওজন নিয়ন্ত্রণ:
শিম একটি পুষ্টিকর এবং কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার। শিম খেলে আপনি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
শিমের অপকারিতা:

শিম একটি পুষ্টিকর সবজি যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে শিমের কিছু সম্ভাব্য অপকারিতাও রয়েছে, যা নিম্নরূপ:
- অ্যালার্জি: শিমের অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া খুব বিরল, তবে এটি ঘটে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ফুসকুড়ি, চুলকানি, ফোলাভাব এবং শ্বাসকষ্ট।
- পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি: শিম পটাশিয়ামের একটি ভালো উৎস। পটাশিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, তবে অতিরিক্ত পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে পারে এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যাগুলির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
শিম খাওয়ার ক্ষেত্রে এই সম্ভাব্য অপকারিতাগুলি সম্পর্কে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি শিমের অ্যালার্জি বা গ্যাস এবং ফুলে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন তবে এটি খাওয়া এড়ানো উচিত। যদি আপনি কিডনি সমস্যায় ভোগেন তবে আপনার পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।