Skip to content
Home » MT Articles » বরই বা কুল কেন খাবেন। এতে কি কি পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে?

বরই বা কুল কেন খাবেন। এতে কি কি পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে?

বরই বা কুল এর উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

বরই বা কুল

বরই বা কুল একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল। এটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে, যা শরীরের জন্য উপকারী।বাংলাদেশের ছোট-বড় সবার নিকট অত্যন্ত পরিচিত একটি ফল কুল। কুল বরই নামেও পরিচিত। ছোট আকৃতির এ ফলটি শিশু, কিশোর ও মহিলাদের অধিক প্রিয়। ফলটি খুবই পুষ্টিকর ও মানব দেহের রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন মহলের অভিমতে বরইয়ের উৎপত্তিস্থল ভারত উপমহাদেশেই। বাংলাদেশে সর্বত্রই বরই জন্মে। বরই গাছে বছরের অক্টোবর মাসে সাদা সাদা ফুল আসে নভেম্বর মাসে ফল ধরতে শুরু করে। জানুয়ারি মাস হতে পাকতে শুরু করে। মার্চ মাস পর্যন্ত ফলটি পাওয়া যায়। পাকলে ফল হলুদ বা লালচে হয়। বরই জাতের ওপর নির্ভর করে ফলের আকার। বাংলাদেশে অসংখ্য জাতের কুল আছে। তবে বেশির ভাগ জাতের কুলেই স্বাদ টক ও কষা। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জাত হলো নারকেলি কুল, কুমিল্লার কুল, আপেল কুল, বাউকুল ইত্যাদি। আপেল কুল ও বাউকুলই মিষ্টি বেশি।

বরইয়ের বা কুলের পুষ্টিগুণ:

নিচে বরইয়ের পুষ্টি উপাদানগুলির একটি টেবিল রয়েছে:

পুষ্টি উপাদানপরিমাণ
ক্যালোরি42
কার্বোহাইড্রেট10 গ্রাম
প্রোটিন1 গ্রাম
ফ্যাট0.2 গ্রাম
ফাইবার2 গ্রাম
ভিটামিন সি10 মিলিগ্রাম (12% RDA)
ভিটামিন এ20% RDA
পটাসিয়াম200 মিলিগ্রাম (5% RDA)
ম্যাগনেসিয়াম20 মিলিগ্রাম (5% RDA)
ক্যালসিয়াম10 মিলিগ্রাম (1% RDA)
আয়রন0.2 মিলিগ্রাম (2% RDA)
RDA হল প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পরিমাণ।

বরই একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো, ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করা, হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করা, পেশীর কার্যকারিতা উন্নত করা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

বরই বা কুল এর উপকারিতা:

বরই বা কুল এর উপকারিতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: 

বরইয়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো:

 বরইয়ে পটাসিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। রক্তচাপ কম থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে।

ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করা: 

বরইয়ে ভিটামিন এ রয়েছে, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ ত্বকের কোষগুলিকে পুনর্গঠনে সাহায্য করে এবং ত্বককে সুস্থ রাখে।

আরোও পড়ুন

কদবেলের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। কদবেল কেন খাবেন?

হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করা: 

বরইয়ে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম হাড়কে শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে।

পেশীর কার্যকারিতা উন্নত করা: 

বরইয়ে পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা পেশীর কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম পেশীর সংকোচন এবং শিথিলতায় সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা: 

বরইয়ে ফাইবার রয়েছে, যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

বরই বা কুলের অপকারিতা

বরই বা কুল এর অপকারিতা

বরই একটি পুষ্টিকর ফল যা অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। তবে, অতিরিক্ত বরই খাওয়ার কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা রয়েছে।

  • কোষ্ঠকাঠিন্য: বরইতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তবে, অতিরিক্ত বরই খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য আরও খারাপ হতে পারে। এটি কারণ বরই শরীরে জল শোষণ করে, যা মলকে আরও শুষ্ক করে তুলতে পারে।
  • গ্যাস এবং ফোলাভাব: বরইতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং চিনি রয়েছে, যা গ্যাস এবং ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, যাদের ইতিমধ্যেই এই সমস্যাগুলি রয়েছে তাদের অতিরিক্ত বরই এড়ানো উচিত।
  • রক্ত শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি: বরইতে চিনির পরিমাণ বেশি, তাই এটি রক্ত শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত বরই এড়ানো উচিত।
  • অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া: বরইতে অ্যালার্জেন থাকতে পারে, যা কিছু লোকেদের অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এই প্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে চুলকানি, ফুসকুড়ি, এবং শ্বাসকষ্ট।

বরইয়ের অপকারিতা এড়াতে, এটি পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত। এছাড়াও, যারা ইতিমধ্যেই কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, ফোলাভাব, রক্ত শর্করার সমস্যা বা অ্যালার্জি রয়েছে তাদের অতিরিক্ত বরই এড়ানো উচিত।

error: Content is protected !!