নারিকেল ফল
নারিকেল একটি বহুল পরিচিত ফল। এটি পাম পরিবারভুক্ত একবীজপত্রী উদ্ভিদ। নারকেল গাছ সাধারণত উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় জন্মে। এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় ফল হিসেবে পরিচিত।
নারিকেলের পুষ্টিগুণ:
১০০ গ্রাম নারিকেলে যেসব পুষ্টি উপাদান থাকে তার একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলো:
- ক্যালোরি: ৩৫৪ কিলোক্যালরি
- ফ্যাট: ৩৩ গ্রাম
- স্যাচুরেটেড ফ্যাট: ২৯.৭ গ্রাম
- মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট: ১.৪ গ্রাম
- পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট: ০.৪ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট: ১৫ গ্রাম
- ফাইবার: ৯ গ্রাম
- চিনি: ৬ গ্রাম
- প্রোটিন: ৩.৩ গ্রাম
- ভিটামিন:
- ভিটামিন সি: ৩.৩ মিলিগ্রাম
- থায়ামিন (বি১): ০.০৬৬ মিলিগ্রাম
- রিবোফ্লাভিন (বি২): ০.০২০ মিলিগ্রাম
- নিয়াসিন (বি৩): ০.৫৪০ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি৬: ০.০৫৪ মিলিগ্রাম
- ফোলেট (বি৯): ২৬ মাইক্রোগ্রাম
- খনিজ:
- ম্যাঙ্গানিজ: ১.৫ মিলিগ্রাম
- কপার: ০.৪৩৫ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস: ১১৩ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম: ৩৫৬ মিলিগ্রাম
- আয়রন: ২.৪৩ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম: ৩২ মিলিগ্রাম
- জিঙ্ক: ১.১০ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম: ১৪ মিলিগ্রাম
নারিকেল খাওয়ার উপকারিতা:

- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: নারিকেলে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: নারিকেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- হজম ক্ষমতা উন্নত করে: নারিকেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজম ক্ষমতা উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: নারিকেলে থাকা ভিটামিন এবং মিনারেল ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে: নারিকেলে থাকা ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে: এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
- শরীরের শক্তি বাড়ায়: নারিকেলে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
- হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: নারিকেলে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে: নারিকেলে থাকা উপাদান মানসিক চাপ কমাতে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
আরোও পড়ুন
টাকি মাছ: টাকি মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।
নারিকেলের তেল খাওয়ার উপকারিতা:
নারকেল তেল একটি প্রাকৃতিক তেল যা নারিকেলের শাঁস থেকে তৈরি হয়। এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং ব্যবহারিক সুবিধার জন্য পরিচিত। নারিকেল তেল খাওয়ার কিছু উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: নারিকেল তেলে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে: এই তেলে থাকা ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- হজম ক্ষমতা উন্নত করে: নারিকেল তেল হজম ক্ষমতা উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এই তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে: ইহা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে: এই তেলে থাকা উপাদান মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
- ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: এতে থাকা ভিটামিন এবং মিনারেল ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- শরীরের শক্তি বাড়ায়: এই তেলে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
- দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: নারিকেল তেলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
নারিকেল তেল বিভিন্নভাবে খাওয়া যেতে পারে, যেমন:
- রান্নার তেল হিসেবে
- সালাদের ড্রেসিং হিসেবে
- স্মুদি বা কফির সাথে মিশিয়ে
- সরাসরি চামচ দিয়ে
নারিকেল তেল খাওয়ার অপকারিতা:

নারিকেল তেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও, অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিছু অপকারিতাও দেখা দিতে পারে। নিচে এই তেল খাওয়ার কিছু অপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
- উচ্চ কোলেস্টেরল: নারিকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
- ওজন বৃদ্ধি: নারিকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ওজন বাড়তে পারে।
- ডায়রিয়া: কিছু লোকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত নারিকেল তেল খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া বা পেটের অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- অ্যালার্জি: কিছু লোকের নারিকেল তেলে অ্যালার্জি থাকতে পারে। এর ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি বা অন্যান্য অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- ব্রণ বৃদ্ধি: নারিকেল তেল ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে দিতে পারে, যা ব্রণ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
- কিডনির সমস্যা: যাদের কিডনির সমস্যা আছে, তাদের নারিকেল তেল গ্রহণ করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এতে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে।
সতর্কতা:
- যাদের কোলেস্টেরল বা হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে, তাদের এই তেল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের এই তেল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- যাদের সংবেদনশীল ত্বক রয়েছে তাদের ও এই তেল ব্যবহারে সতর্ক থাকা উচিত।
Thia article is written with the help of Gemini