Skip to content
Home » MT Articles » কাঁঠালের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ।কাঁঠাল কেন খাবেন ?

কাঁঠালের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ।কাঁঠাল কেন খাবেন ?

কাঁঠালের উপকারিতা

কাঁঠাল

বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। এটি গ্রীষ্মকালীন ফল । সুমিষ্ট এই ফলটি পুষ্টিগুণে ঠাসা। কাঁঠালের গাছ গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিম্নভূমিতে ভাল জন্মে এবং বিশ্বের ক্রান্তীয় অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ হয়। এটি সমস্ত ফলের মধ্যে বৃহত্তম ফল এবং একেকটি ফল ওজনে প্রায় ৫৫ কেজি (১২০ পাউন্ড) পর্যন্ত হতে পারে। 

কাঁঠালের পুষ্টিগুণ:

কাঁঠাল একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল। এটি ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস। কাঁঠালে ( প্রতি ১৬৫ গ্রাম) নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদান রয়েছে:

  • ক্যালোরি: ২৫৩
  • চর্বি: ০.৯ গ্রাম
  • সোডিয়াম: ১৬ মিলিগ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট: ৫২ গ্রাম
  • ফাইবার: ৮.৫ গ্রাম
  • চিনি: ৩৬ গ্রাম
  • প্রোটিন: ৩.৩ গ্রাম
  • ভিটামিন এ: ৩১% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ভিটামিন সি: ১৬% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ক্যালসিয়াম: ৩% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • আয়রন: ৪% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • ম্যাগনেসিয়াম: ১১% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
  • পটাসিয়াম: ১৬% (দৈনিক চাহিদা পূরণ করে)
কাঁঠালের উপকারিতা

কাঁঠালের উপকারিতা:

কাঁঠাল পুষ্টি সমৃদ্ধ। এতে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানব দেহের জন্য বিশেষ উপকারী। এখানে কাঁঠালের কিছু উপকারিতা দেওয়া হল:

১. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে: 

কাঁঠালে পটাসিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে, যা উভয়ই হৃদয় স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পটাসিয়াম রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে। ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

২. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: 

কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। ফাইবার পাচনতন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।

৩. দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে কাঁঠালের ভূমিকা: 

কাঁঠালে ভিটামিন এ রয়েছে, যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ রেটিনাকে সুস্থ রাখে এবং অন্ধত্বের ঝুঁকি হ্রাস করে।

৪. কাঁঠালের রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: 

কাঁঠালে ভিটামিন সি রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

৫. ত্বকের যত্নে কাঁঠালের অবদান: 

কাঁঠালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ত্বকের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে সূর্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করে এবং ত্বককে উজ্বল করে।

৬. চুলের যত্নে সাহায্য করে: 

কাঁঠালে প্রোটিন রয়েছে, যা চুলকে শক্তিশালী এবং মজবুত করে। প্রোটিন চুলকে ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করে এবং চুলকে ঘন করে।

আরোও পড়ুন

ভাইরাল জ্বর কি, এর লক্ষণ কি কি ? ভাইরাল জ্বর হলে করণীয় কি ?

৭. গর্ভাবস্থায় কাঁঠালের উপকারিতা: 

কাঁঠাল গর্ভাবস্থায় মহিলাদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। এটি ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস যা গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।

৮. ওজন কমাতে কাঁঠালের গুরুত্ত্ব: 

কাঁঠালে ফাইবার রয়েছে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার বেশি সময় পর্যন্ত পেট ভরা রাখে এবং ক্ষুধা কমায়।

৯. রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে: 

কাঁঠালে আয়রন রয়েছে, যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। আয়রন শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়ায় এবং রক্তশূন্যতার লক্ষণগুলি যেমন ক্লান্তি, মাথা ঘোরা এবং শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করে।

১০. শক্তি বৃদ্ধি করে: 

কাঁঠাল ক্যালোরির একটি ভাল উৎস যা শক্তি বৃদ্ধি করে। কাঁঠাল খেলে আপনার সারাদিনের শক্তির কোনো ঘাটতি থাকবে না।

কাঁঠালের অপকারিতা:

কাঁঠাল একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল। এটি ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস। তবে, কাঁঠাল অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিছু সমস্যা হতে পারে। কাঁঠালের অপকারিতাগুলির মধ্যে রয়েছে :

  • বদহজম: কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। ফাইবার হজমে সাহায্য করে, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে ফাইবার বদহজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • ডায়াবেটিস: কাঁঠালে চিনির পরিমাণ বেশি। তাই, ডায়াবেটিস রোগীদের কাঁঠাল খাওয়া উচিত নয় বা সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • অ্যালার্জি: কিছু মানুষের কাঁঠালের প্রতি অ্যালার্জি হতে পারে। কাঁঠাল খেলে যদি আপনি চুলকানি, ফুসকুড়ি বা শ্বাসকষ্টের মতো কোনও লক্ষণ অনুভব করেন তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

সাধারণভাবে, কাঁঠাল একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল। তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁঠাল খাওয়া উচিত নয়।

রান্নায় কাঁঠালের ব্যবহার:

কাঁঠালের তরকারি

কাঁচা কাঁঠালের হালকা স্বাদ এবং মাংসের মতো টেক্সচার রয়েছে। একে মশলা দিয়ে রান্না করা যায় এবং তরকারী হিসেবে খাবারে ব্যবহার করা যায়। এশীয় অনেক দেশের খাবারে  কাঁঠাল তরকারী হিসেবে রান্না করা হয়। অনেক দেশে কাঁঠাল প্রধান খাদ্য হিসাবে তরকারীতে ব্যবহার করা হয়। সিদ্ধ কচি কাঁঠাল সালাদে বা সাইড ডিশে কাটলেট এবং চপসের মত একটি উদ্ভিজ্জ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি নারকেল ও দুধ দিয়েও রান্না করা হয়ে থাকে, দক্ষিন ভারতে কাঁঠালের এই রেসিপিটি বিশেষ ভাবে প্রচলতি। এছাড়াও কাঁঠাল থেকে চিপ্সও বানানো হয়।

সম্পর্কিত:

বেদানার উপকারিতা ও অপকারিতা । শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে অতুলনীয় বেদানা।

August 2, 2023

ছোলা ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রান্না প্রণালী।

April 17, 2024

স্ট্রবেরি: শুধু সুস্বাদু নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর একটি ফল

June 29, 2024

পোস্ত দানা কি? জেনেনিন পোস্তর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও রান্না প্রণালী।

May 8, 2024

ফুলকপির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

August 31, 2023

কুচিমটর ডাল: জেনে রাখুন কুচিমটর ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

March 18, 2025

তেলাপিয়া মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

January 29, 2024

"পারশে মাছ: প্রাকৃতিক ওমেগা-৩ এর ভান্ডার" ও পুষ্টিগুণে ভরপুর।

November 17, 2024

লিভারের কাজ ও গুরুত্ব কি? লিভার ভাল রাখতে করনীয় কি?

June 30, 2024

চিরতাপাতা কি? চিরতাপাতার উপকারিতা কি কি? কিভাবে ব্যবহার করবেন?

March 31, 2024
error: Content is protected !!