স্ট্রবেরি
স্ট্রবেরি ছোট, লাল, হৃৎপিণ্ডাকৃতি ফল যা নরম, রসালো এবং মিষ্টি স্বাদের। এতে ছোট ছোট বীজ থাকে যা আসলে ফলের বাইরের অংশ। স্ট্রবেরি বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে ছোট “চাষের” স্ট্রবেরি থেকে বড় “বুনো” স্ট্রবেরি।স্ট্রবেরি সাধারণত লাল রঙের হয়, তবে গোলাপী, সাদা এবং কালো স্ট্রবেরিও পাওয়া যায়।স্ট্রবেরি ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ, ফাইবার এবং পটাশিয়ামের একটি চমৎকার উৎস। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও প্রচুর পরিমাণে থাকে যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। স্ট্রবেরি ক্যালোরি কম এবং চর্বি মুক্ত, যা এটিকে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টাকারীদের জন্য একটি ভাল বিকল্প করে তোলে।
স্ট্রবেরির পুষ্টিগুণ:
স্ট্রবেরির পুষ্টিউপাদান টেবিল (প্রতি 100 গ্রাম)
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
ক্যালোরি | 32 |
চর্বি | 0.4 গ্রাম |
স্যাচুরেটেড ফ্যাট | 0 গ্রাম |
পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট | 0 গ্রাম |
মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট | 0 গ্রাম |
কোলেস্টেরল | 0 মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | 2 মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | 236 মিলিগ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | 7.6 গ্রাম |
খাদ্যতন্তু | 2.2 গ্রাম |
চিনি | 4.9 গ্রাম |
প্রোটিন | 0.7 গ্রাম |
ভিটামিন এ | 2% |
ভিটামিন সি | 59% |
ভিটামিন ডি | 0% |
ক্যালসিয়াম | 16% |
লোহা | 2% |
ম্যাগনেসিয়াম | 16% |
ফসফরাস | 13% |
জিঙ্ক | 2% |
তামা | 6% |
ম্যাঙ্গানিজ | 59% |
স্ট্রবেরির উপকারিতা:

স্ট্রবেরি, যা “ফলের রাজা” নামেও পরিচিত, কেবল তার মিষ্টি স্বাদ এবং সুগন্ধের জন্যই জনপ্রিয় নয়, বরং এর অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্যও পরিচিত।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ:
- ভিটামিন সি: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, কোলাজেন উৎপাদন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
- ম্যাঙ্গানিজ: হাড়ের গঠন, কোষের বিপাক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
- ফাইবার: হজম স্বাস্থ্য উন্নত, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, দীর্ঘস্থায়ী পূর্ণতা।
- পটাশিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, স্নায়ু ও পেশীর কার্যকারিতা উন্নত।
- ভিটামিন কে: হাড়ের গঠন, রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ।
- ফোলেট: গর্ভবতী নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, নিউরাল টিউব ত্রুটি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
আরোও পড়ুন
ডুমুরের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য।
স্বাস্থ্য উপকারিতা:
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: স্ট্রবেরিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার LDL (খারাপ) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং HDL (ভাল) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: স্ট্রবেরিতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে: স্ট্রবেরিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
- চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে: স্ট্রবেরিতে থাকা ভিটামিন এ এবং লুটেইন ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং অন্যান্য চোখের সমস্যার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে: স্ট্রবেরিতে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা ত্বককে স্থিতিস্থাপক এবং ঝুঁকিপূর্ণ রাখে।
- মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করে: স্ট্রবেরিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে এবং স্মৃতিশক্তি ও জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: স্ট্রবেরি ক্যালোরি কম এবং ফাইবার সমৃদ্ধ, যা আপনাকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে পূর্ণ রাখতে এবং অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

স্ট্রবেরির অপকারিতা
এই ফল খাওয়ার অনেক সুবিধা থাকলেও, কিছু অপকারিতাও লক্ষ্য করা গেছে যা সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
সম্ভাব্য অপকারিতা:
- অ্যালার্জির ঝুঁকি: কিছু লোকের স্ট্রবেরির প্রতি অ্যালার্জি থাকে, যা ফোলাভাব, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট এবং এমনকি অ্যানাফিল্যাক্সিসের মতো লক্ষণগুলির কারণ হতে পারে।
- হাইপোগ্লাইসেমিয়া: স্ট্রবেরি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত কমাতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
- পাথরের ঝুঁকি: স্ট্রবেরিতে অক্সালেট থাকে, যা কিডনিতে পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- দাঁতের ক্ষতি: স্ট্রবেরির অম্লতা দাঁতের পাতলা আবরণ ক্ষয় করতে পারে, যার ফলে সংবেদনশীলতা এবং ক্ষয় হতে পারে।
- ঔষধের সাথে মিথস্ক্রিয়া: কিছু ঔষধের সাথে স্ট্রবেরি মিথস্ক্রিয়া করতে পারে, যার ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বৃদ্ধি পেতে পারে।
স্ট্রবেরি খাওয়ার সময় সতর্কতা:
- স্ট্রবেরির প্রতি অ্যালার্জি থাকে, তাহলে এটি এড়িয়ে চলুন।
- ডায়াবেটিস রোগীরা স্ট্রবেরি খাওয়ার পরে তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
- যদি আপনার কিডনিতে পাথরের ইতিহাস থাকে, তাহলে স্ট্রবেরি খাওয়ার পরিমাণ সীমাবদ্ধ করা উচিত।
- খাওয়ার পরে দাঁত ব্রাশ করুন।
- আপনি যদি কোনও ঔষধ খাচ্ছেন, তাহলে স্ট্রবেরি খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
This article is written with the help of Gemini