Skip to content
Home » MT Articles » আখের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। আখের রস কেন খাবেন?

আখের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। আখের রস কেন খাবেন?

আখের পুষ্টিগুন

আখ

প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে আখের রসে চুমুক দিলেই যেন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এটা শুধু আপনার তৃষ্ণাই নিবারণ করবে না, ক্লান্তিও দূর করবে। এছাড়া আখের রসে আছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, উপকারী অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক, থিয়ামিন এবং রিবোফ্লাভিন। যা শরীরে প্রবেশ করার পর স্ট্রেসের কারণে শরীরের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকেই না। একই সঙ্গে আরও বেশকিছু উপকার পাওয়া যায়। 

আখের পুষ্টিগুণ:

আখের পুষ্টিগুন

আখ একটি পুষ্টিকর উদ্ভিদ যা চিনি, ফাইবার, এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। আখ থেকে গুড়, চিনি, এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য তৈরি করা হয়।

১০০ গ্রাম আখের পুষ্টি উপাদান নিম্নরূপ:

  • ক্যালোরি: ২২৬
  • প্রোটিন: ০.৭ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট: ৭২.৭ গ্রাম
  • চিনি: ৭০.৪ গ্রাম
  • ফাইবার: ১.৪ গ্রাম
  • ভিটামিন এ: ৭০ আইইউ
  • ভিটামিন সি: ০.৩ মিলিগ্রাম
  • পটাসিয়াম: ৩৮১ মিলিগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম: ১২ মিলিগ্রাম
  • আয়রন: ০.৩ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম: ১৯ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস: ৪০ মিলিগ্রাম
  • জিঙ্ক: ০.২ মিলিগ্রাম

আখের  উপকারিতা:

আখের রসের উপকারিতা

১.লিভারের জন্য উপকারী আখ:

আখের রস লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি লিভার সুস্থ রাখে এবং লিভারকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।

২.রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে আখ:

আয়রনের একটি ভালো উৎস হলো আখ, যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৩.হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে আখ:

আখ ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আখ:

এটি ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উৎস, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৫.তারুণ্য বজায় রাখে আখ:

প্রোটিন, আয়রন, জ়ঙ্ক, পটাশিয়াম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজে সমৃদ্ধ আখের রস ত্বককে অকালে বুড়িয়ে যেতে দেয় না। এছাড়াও আখের রসে থাকা ভিটামিন এ এবং সি ত্বকে বলিরেখা বা কোনও রকম দাগ ছোপও পড়তে দেয় না।

৬.মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে আখ:

আরোও পড়ুন

আঙ্গুর ফল এর ১২ টি অসাধারণ উপকারিতা

আখের রসে প্রাকৃতিক ভাবে থাকা আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড্‌স (এএইচএএস) ত্বকের উপর থেকে ধুলো-ময়লার আবরন সরিয়ে ফেলতেও সাহায্য করে। আখের রস দিয়ে নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করলে ত্বক ভিতর থেকে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

৭.হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করে আখ:

আখ ফাইবারের একটি ভালো উৎস, যা হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

৮.ত্বক ও চুল ভালো রাখতে আখ:

ত্বক ও চুল ভালো রাখার ক্ষেত্রেও উপকারী আখের রস। এতে থাকা আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বক ভালো রাখার জন্য সহযোগিতা করে। 

৯.ফাইবারের উৎকৃষ্ট উৎস:

আখে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি শরীরের বিপজ্জনক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হার্ট ভালো রাখে।

১০.ব্রণ সারাতে আখ:

এর রসে থাকা আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড স্কিন সেলের উৎপাদন বাড়াতে ব্রণের প্রকাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে ব্রণের দাগ কমাতেও সাহায্য করে থাকে।

১১. ক্ষত সারাতে আখ:

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পাশাপাশি আখের রসে রয়েছে প্রদাহনাশক উপাদান। যা ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলোকে মেরামত করে। ফলে সহজেই ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

আখের অপকারিতা:

আখের অপকারিতা

অনেক পুষ্টিকর একটি উদ্ভিদ হলো আখ যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। তবে, অতিরিক্ত মাত্রায় আখ খাওয়া কিছু অপকারিতা সৃষ্টি করতে পারে।

  • ওজন বৃদ্ধি: আখতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি এবং চিনি রয়েছে, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সমস্যা: আখতে প্রচুর পরিমাণে চিনি রয়েছে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • অ্যালার্জি: কিছু লোক আখের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে চুলকানি, ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট, এবং মুখ বা গলা ফুলে যাওয়া।
  • রক্তপাতের সমস্যা: আখে উপস্থিত পোলিকোসানোল রক্তকে পাতলা করতে পারে, যার ফলে রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
  • গ্যাস এবং ফোলাভাব: আখ ফাইবার সমৃদ্ধ, যা গ্যাস এবং ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে।

আখ খাওয়ার অপকারিতাগুলি সাধারণত সামান্য এবং গুরুতর নয়। তবে, যদি আপনি আখ খাওয়ার পরে কোনও অপ্রত্যাশিত লক্ষণ অনুভব করেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

আখ খাওয়ার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত:
  • যদি আপনার ওজন বাড়ার চেষ্টা করেন তবে আখের পরিমাণ সীমিত করুন।
  • আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হন তবে আখ সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • যদি আখের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হন তবে এটি এড়িয়ে চলুন।
  • আপনি যদি রক্তপাতের সমস্যায় ভুগছেন তবে আখ সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • আপনি যদি গ্যাস বা ফোলাভাব অনুভব করেন তবে আখের পরিমাণ সীমিত করুন।

আখ একটি পুষ্টিকর উদ্ভিদ যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। তবে, এটি খাওয়ার সময় উপরের বিষয়গুলি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

সম্পর্কিত:

শাপলা মাছ কি খাওয়ার উপযুক্ত? এর কি কোন স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে?

November 20, 2024

রসুনের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। রসুন কেন খাবেন?

August 30, 2023

ফ্যাসা মাছ: ফ্যাসা মাছের জাদুকরী পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা জেনে রাখুন।

December 10, 2024

আমলকীর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। চুলের যত্নে আমলকী।

October 14, 2023

খই ফল: খই ফলের বৈশিষ্ট্য, উপকারিতা ও অপকাতিা।

November 9, 2024

বোয়াল মাছ "শরীরের জন্য পুষ্টির ভান্ডার"

November 20, 2024

নারিকেল: নারিকেলের তেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সত্যিই কি উপকারী?

February 22, 2025

তালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। তাল ফল কেন খাবেন?

August 28, 2023

নৈল ফল: স্বাস্থ্যের ভান্ডার।জেনে রাখুন এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।

September 14, 2024

ধনেপাতার পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

September 3, 2023
error: Content is protected !!