Skip to content
Home » MT Articles » দারুচিনি কি? দারুচিনির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

দারুচিনি কি? দারুচিনির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

দারুচিনি

দারুচিনি

দারুচিনি হল Cinnamomum জাতীয় গাছের বাকল থেকে তৈরি একটি মসলা। এটি মূলত শ্রীলঙ্কায় উৎপন্ন হয়, তবে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া, ভারত, চীন ও অন্যান্য দেশেও উৎপাদিত হয়। দারুচিনি একটি বহুবর্ষজীবী বৃক্ষ যা 10 থেকে 20 মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। এর পাতা লম্বা এবং সরু, এবং এর ফুল সাদা বা গোলাপি হয়। দারুচিনির বাকল পাতলা এবং মসৃণ, এবং এটি একটি মিষ্টি এবং সুগন্ধযুক্ত স্বাদযুক্ত। 

দারুচিনির প্রকারভেদ:

দারুচিনির প্রধান তিনটি প্রকার হল:

  • ক্যাসিয়া সিনামন: এটি হল সবচেয়ে সাধারণ ধরণের দারুচিনি যা বাণিজ্যিকভাবে পাওয়া যায়। এটি কম দামে পাওয়া যায় এবং এর স্বাদ মিষ্টি এবং কিছুটা ঝাঁঝালো।
  • কোরিয়ান সিনামন: এটি একটি হালকা মিষ্টি এবং কিছুটা ঝাঁঝালো স্বাদের দারুচিনি। এটি ক্যাসিয়া সিনামন থেকে একটু বেশি ব্যয়বহুল।
  • সিলন সিনামন: এটি সবচেয়ে দামি ধরণের দারুচিনি। এটির স্বাদ মিষ্টি এবং সুগন্ধি। এটিতে কোমোরিন নামক একটি যৌগের পরিমাণ কম থাকে, যা লিভারের ক্ষতি করতে পারে।

দারুচিনির অন্যান্য প্রকারভেদগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ভিয়েতনামী সিনামন: এটি ক্যাসিয়া সিনামন এবং সিলন সিনামনের মধ্যে একটি হাইব্রিড। এটির স্বাদ মিষ্টি এবং কিছুটা ঝাঁঝালো।
  • মেক্সিকান সিনামন: এটি একটি হালকা মিষ্টি এবং কিছুটা ঝাঁঝালো স্বাদের দারুচিনি। এটি ক্যাসিয়া সিনামন থেকে একটু বেশি ব্যয়বহুল।
  • সিঙ্গাপুর সিনামন: এটি একটি হালকা মিষ্টি এবং কিছুটা ঝাঁঝালো স্বাদের দারুচিনি। এটি ক্যাসিয়া সিনামন থেকে একটু বেশি ব্যয়বহুল।

দারুচিনির প্রকারভেদগুলি তাদের স্বাদ, ঝাঁঝালোতা এবং দামের মধ্যে পৃথক হয়।

দারুচিনির পুষ্টিগুণ:

দারুচিনি এর পুষ্টিগুণ
পুষ্টি উপাদানপরিমাণ
ক্যালোরি25
কার্বোহাইড্রেট5 গ্রাম
প্রোটিন1 গ্রাম
চর্বি1 গ্রাম
ফাইবার2 গ্রাম
ভিটামিন সি0.1 মিলিগ্রাম
ভিটামিন কে0.4 মাইক্রোগ্রাম
পটাসিয়াম190 মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম10 মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম12 মিলিগ্রাম
ফসফরাস20 মিলিগ্রাম
আয়রন0.2 মিলিগ্রাম
জিংক0.1 মিলিগ্রাম
সেলেনিয়াম0.2 মাইক্রোগ্রাম

দারুচিনির উপকারিতা:

দারুচিনির উপকারিতা

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: 

দারুচিনি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে, যা শরীরের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইহা বিশেষভাবে উপকারী বলে মনে করা হয়।

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: 

আরোও পড়ুন

লবঙ্গ কি? লবঙ্গের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

দারুচিনি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করতে পারে। এটি LDL (খারাপ) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং HDL (ভাল) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো: 

দারুচিনি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করতে পারে। এটি রক্তচাপ কমাতে এবং হৃদপিণ্ডের অসুস্থতার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

প্রদাহ কমানো: 

দারুচিনি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। প্রদাহ বিভিন্ন ধরণের রোগের সাথে যুক্ত, তাই প্রদাহ কমানো স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ: 

দারুচিনি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

স্মৃতি ও মনোযোগের উন্নতি: 

দারুচিনি স্মৃতি ও মনোযোগের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। এটি বয়সের সাথে সাথে বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষতির ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করতে পারে।

দারুচিনি এর অপকারিতা/পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

দারুচিনির অপকারিতা
  • অ্যালার্জি: দারুচিনিতে উপস্থিত কিছু উপাদান কিছু লোকের মধ্যে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
    • চুলকানি বা লালভাব
    • ফোলাভাব
    • শ্বাসকষ্ট
    • মুখ, জিহ্বা বা ঠোঁটের ফোলাভাব
  • রক্তপাত: দারুচিনি রক্তপাতের সময়কে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই, যারা রক্তপাতের ওষুধ সেবন করছেন তাদের দারুচিনি গ্রহণের আগে তাদের ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।
  • লিভারের সমস্যা: দারুচিনিতে উপস্থিত কোমোরিন নামক একটি যৌগ লিভারের ক্ষতি করতে পারে। তাই, যারা লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তাদের দারুচিনি গ্রহণের আগে তাদের ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!