Skip to content
Home » MT Articles » মোসাম্বি: জেনেনিন মোসাম্বি ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।

মোসাম্বি: জেনেনিন মোসাম্বি ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।

মোসাম্বি

মোসাম্বি (Sweet Lime) একটি জনপ্রিয় এবং পুষ্টিকর ফল, যা লেবুজাতীয় ফলের অন্তর্ভুক্ত। এটি স্বাদে হালকা মিষ্টি এবং প্রায়শই এর রস পান করা হয়। মোসাম্বি সারা বছরই পাওয়া যায়, তবে গ্রীষ্মকালে এর চাহিদা বেশি থাকে।

মোসাম্বি ফল এর পুষ্টিগুণ:

মোসাম্বি ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং অন্যান্য খনিজ উপাদানে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম মোসাম্বিতে প্রায় ৪৩ কিলোক্যালরি শক্তি, ০.২৭ গ্রাম ফ্যাট, ০.৮১ গ্রাম প্রোটিন, ২.৩ গ্রাম ফাইবার এবং ১১.৯৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে।

আরোও পড়ুন

চেলা মাছ: চেলা মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, বৈশিষ্ট্য ও রেসিপি।

মোসাম্বি ফলের উপকারিতা:

মোসাম্বি ফলের উপকারিতা
মোসাম্বি ফল

মোসাম্বি ফলের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, যা নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • হজমে সহায়তা: মোসাম্বি ফাইবার সমৃদ্ধ এবং হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়া প্রতিরোধে কার্যকর। এটি পিত্ত রস এবং ডাইজেস্টিভ অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়ায়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সর্দি, কাশি, ফ্লু এবং অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
  • শরীরের ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ: মোসাম্বিতে হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শরীরকে সতেজ ও আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি ডিহাইড্রেশন দূর করে।
  • ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য: মোসাম্বির ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে, যা ত্বককে উজ্জ্বল ও টানটান রাখে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। এটি ব্রণের সমস্যা কমাতেও সহায়ক। চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও এটি উপকারী।
  • চোখের স্বাস্থ্য: এই ফল চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সহায়ক।
  • হাড় ও জয়েন্টের স্বাস্থ্য: মোসাম্বিতে থাকা ফলিক অ্যাসিড, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ জয়েন্ট ফাংশন এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কার্যকর। এটি অস্টিওআর্থারাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থারাইটিসের মতো রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: মোসাম্বিতে অ্যান্টি-হাইপারলিপিডেমিক প্রভাব রয়েছে, যা উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণ: এটি শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে, যা রক্তকে পরিষ্কার রাখে।
  • পেশী সুরক্ষা: পেশী শক্ত হওয়া এবং ক্র্যাম্প প্রতিরোধে মোসাম্বি উপকারী। তাই ক্রীড়াবিদদের জন্য এটি বিশেষভাবে সহায়ক।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ: মোসাম্বিতে লিমোনয়েড নামক যৌগ থাকে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
  • আলসার নিরাময়: এটি পেপটিক আলসার নিরাময়ে সহায়তা করে।

মোসাম্বি ফলের অপকারিতা:

মোসাম্বি ফলের অপকারিতা

এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল এবং এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে যেকোনো কিছুর অতিরিক্ত সেবনই ক্ষতির কারণ হতে পারে। মোসাম্বি ফলের সম্ভাব্য কিছু অপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • অম্লতা: মোসাম্বি কিছুটা অম্লীয় প্রকৃতির। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তাদের বুক জ্বালাপোড়া, গ্যাস বা হজমের সমস্যা হতে পারে।
  • দাঁতের এনামেলের ক্ষতি: মোসাম্বির অম্লতা দাঁতের এনামেলের ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে যদি জুস হিসেবে পান করার পর দাঁত ব্রাশ না করা হয়।
  • ডায়রিয়া: অতিরিক্ত পরিমাণে মোসাম্বি বা এর রস খেলে হজমতন্ত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হতে পারে, কারণ এতে ফাইবার থাকে এবং এটি রেচক হিসেবে কাজ করতে পারে।
  • কফ বৃদ্ধি: আয়ুর্বেদ অনুসারে, মোসাম্বি বাত ও পিত্ত দোষের ভারসাম্য বজায় রাখলেও কফ দোষ বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই যাদের কফ জনিত সমস্যা আছে, তাদের পরিমিত পরিমাণে সেবন করা উচিত।
  • রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি (বিশেষ করে জুসের ক্ষেত্রে): যদিও এটি একটি স্বাস্থ্যকর ফল, তবে এর জুস তৈরি করার সময় ফাইবার বাদ পড়ে যায় এবং এতে প্রাকৃতিক শর্করা ঘনীভূত হয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মোসাম্বির জুস পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে।
  • ওজন বৃদ্ধি (জুসের ক্ষেত্রে): জুসের মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করলে ওজন বাড়তে পারে, বিশেষ করে যদি এতে চিনি যোগ করা হয়।
error: Content is protected !!