Skip to content
Home » MT Articles » ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। ইলিশ কেন খাবেন?

ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। ইলিশ কেন খাবেন?

ইলিশ মাছ

ইলিশ মাছ

ইলিশ মাছ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। ইলিশ মাছের ইংরেজি নাম Hilsa fish। এটি একটি সামুদ্রিক মাছ, যা ডিম পাড়ার জন্য বাংলাদেশ ও পূর্ব ভারতের নদীতে আগমন করে। বাঙালিদের কাছে ইলিশ খুব জনপ্রিয়। এ ছাড়াও ইলিশ ভারতের বিভিন্ন এলাকা যেমন পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, ত্রিপুরা ও আসামে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাছ।

ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ:

পুষ্টি উপাদানপরিমাণ
প্রোটিন২৫ গ্রাম
ক্যালসিয়াম৫৫ মিলিগ্রাম
আয়রন১.৩ মিলিগ্রাম
ফসফরাস৪০০ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম৪৪০ মিলিগ্রাম
জিংক৪.০ মিলিগ্রাম
ভিটামিন A৩৭০০ আইইউ
ভিটামিন D৪৫ আইইউ
ভিটামিন B12১৪ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন E১.৯ মিলিগ্রাম
চর্বি১৯ গ্রাম
স্যাচুরেটেড ফ্যাট৪ গ্রাম
মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট৯ গ্রাম
পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট৬ গ্রাম
কোলেস্টেরল৭০ মিলিগ্রাম

ইলিশ মাছের উপকারিতা:

ইলিশ মাছের উপকারিতা

রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: 

ইলিশ মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

আরোও পড়ুন

বেগুনের কি কোনো পুষ্টিগুণ বা উপকারিতা আছে?

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: 

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে: 

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে: 

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি উদ্বেগ এবং হতাশা কমাতে সাহায্য করে।

চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: 

ভিটামিন A চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ইলিশ মাছে ভিটামিন A এর ভালো উৎস রয়েছে।

হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে:

ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, এবং ভিটামিন D হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ইলিশ মাছে এই পুষ্টি উপাদানগুলোর ভালো উৎস রয়েছে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:

জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ইলিশ মাছে জিংক এর ভালো উৎস রয়েছে।

বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস:

  • শ্রেণী: অস্টিচথিস (Osteichthyes)
  • বর্গ: অ্যাক্টিনোপটেরিগি (Actinopterygii)
  • পরিবার: চিলিডাই (Chilchthyidae)
  • গণ: টেনিউলোসা (Tenualosa)
  • প্রজাতি: ইলিশ (Ilisha)

বিবরণ:

ইলিশের পুষ্টিগুণ

ইলিশ মাছ রুপালি রঙের, যাদের পিঠের দিকে গাঢ় নীল আঁশ থাকে। এদের দেহ চাপা, মাথা ছোট এবং চোখ বড়। ইলিশ মাছ সাধারণত ৪০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়।

ইলিশ মাছের বাসস্থান:

ইলিশ মাছ সাধারণত সমুদ্রের উপকূলবর্তী এলাকায় বাস করে। এরা ডিম পাড়ার জন্য নদীতে প্রবেশ করে। ইলিশ মাছ বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, কর্ণফুলি, সুরমা, বরাক, গোমতী, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদীতে পাওয়া যায়।

ইলিশ মাছের খাদ্য:

ইলিশ মাছ ছোট ছোট মাছ, পোকামাকড়, কাঁকড়া, ইত্যাদি খেয়ে জীবন ধারণ করে।

ইলিশ মাছের প্রজনন:

ইলিশ মাছ সাধারণত ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রজনন করে। এরা নদীর মোহনায় বা নদীর উজানে ভাঙন এলাকায় ডিম ছাড়ে। ইলিশ মাছের ডিম থেকে রেণু বের হয় এবং নদীর স্রোতে ভাসতে থাকে। রেণু থেকে পোনা বের হয় এবং তারা নদীর তলদেশে বালির মধ্যে লুকিয়ে থাকে। পোনারা ৬-১০ সপ্তাহ পর জাটকা হয়ে সমুদ্রে চলে যায়।

ইলিশ মাছের অর্থনৈতিক গুরুত্ব:

ইলিশ মাছ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদ। এটি বাংলাদেশের মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ১৫% যোগান দেয়। ইলিশ মাছ থেকে মাছ ধরা, পরিবহন, প্রক্রিয়াকরণ, এবং বিপণন ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন হয়।

ইলিশ মাছের নানা পদ:

ইলিশ মাছ এর নানা পদ

ইলিশ মাছ দিয়ে অনেক রকমের পদ তৈরি করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে:

  • ইলিশ ভাজা
  • ইলিশ মাছ দিয়ে ঝোল
  • ইলিশ মাছ দিয়ে পোলাও
  • ইলিশ মাছ দিয়ে খিচুড়ি
  • ইলিশ মাছ দিয়ে চিংড়ি
  • ইলিশ মাছ দিয়ে মাংস
  • ইলিশ মাছ দিয়ে সবজি

ইলিশ মাছ বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় খাবার। এটি বাঙালির খাদ্য সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ইলিশ মাছের অপকারিতা:

  • ওজন বৃদ্ধি: ইলিশ মাছে প্রচুর পরিমাণে চর্বি থাকে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে ইলিশ মাছ খেলে ওজন বাড়তে পারে।
  • ক্ষতিকর জীবাণু: ইলিশ মাছ একটি জলজ প্রাণী। তাই এর মধ্যে ক্ষতিকর জীবাণু থাকতে পারে। তাই ইলিশ মাছ ভালভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত।
  • অ্যালার্জি: কিছু লোকের ইলিশ মাছে অ্যালার্জি হতে পারে। তাই এটি খেতে শুরু করার আগে একটি ছোট পরিমাণে খেয়ে দেখুন।

ইলিশ মাছ খাওয়ার সতর্কতা:

ইলিশ মাছ এর ডিম
  • ইলিশ মাছ সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার খাওয়া উচিত। তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে ইলিশ মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
  • ইলিশ মাছ ভালভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত।
  • ইলিশ মাছে অ্যালার্জি থাকলে এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
error: Content is protected !!