Skip to content
Home » MT Articles » কাঁকরোলের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। কাঁকরোল রেসিপি, চাষ পদ্ধতি।

কাঁকরোলের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। কাঁকরোল রেসিপি, চাষ পদ্ধতি।

কাঁকরোল

কাঁকরোল

কাঁকরোল একটি জনপ্রিয় সবজি যা সারা বিশ্বে চাষ করা হয়। কাঁকরোলের ইংরেজি নাম Sweet Bitter Gourd।এটি একটি লতাজাতীয় উদ্ভিদ যা এর সবুজ, লম্বা, নলাকার ফলের জন্য চাষ করা হয়।কাঁকরোল বিভিন্নভাবে রান্না করা যেতে পারে। এটি সাধারণত ভাজা, বেক করা, বা স্যুপ এবং স্টুতে যোগ করা হয়।

কাঁকরোলের পুষ্টিগুণ

কাঁকরোলের পুষ্টিগুণ:

পুষ্টি উপাদানপ্রতি ১০০ গ্রাম কাঁকরোলতে পরিমাণ
ক্যালোরি২২
চর্বি০.১ গ্রাম
প্রোটিন১.২ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট৫.৪ গ্রাম
ফাইবার১.৫ গ্রাম
ভিটামিন সি১৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ২৯০ আইইউ
লোহা০.৪ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম১৪ মিলিগ্রাম

এছাড়াও, কাঁকরোলতে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যেমন পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, এবং ফসফরাসও রয়েছে।

কাঁকরোল চাষ পদ্ধতি:

কাঁকরোলের চাষ পদ্ধতি

জমি নির্বাচন:

কাঁকরোল চাষের জন্য উর্বর, দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো। মাটিতে জল নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা থাকা উচিত।

বীজ বপন:

কাঁকরোল বীজ বপনের সময় হলো মার্চ-এপ্রিল। বীজ বপনের আগে মাটি ভালোভাবে চাষ করে নিতে হবে। বীজ সারিতে বা ছিটিয়ে বপন করা যায়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে প্রতি সারিতে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং সারির মধ্যে ৬০ সেন্টিমিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বীজ ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে ১০-১২ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়।

সার প্রয়োগ:

কাঁকরোল চাষে জৈব সার এবং রাসায়নিক সার উভয়ই প্রয়োগ করা যায়। জৈব সার হিসেবে গোবর, আবর্জনা, কম্পোস্ট ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। রাসায়নিক সার হিসেবে প্রতি বর্গমিটারে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টিএসপি, এবং ৫০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

সেচ:

কাঁকরোল চাষে নিয়মিত সেচের প্রয়োজন। তবে, অতিরিক্ত সেচ দিলে গাছ মরে যেতে পারে।

পোকামাকড় ও রোগবালাই:

কাঁকরোল গাছে থ্রিপস, মাকড়সা, পোকামাকড়, এবং পাতায় পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে পারে। এছাড়াও, পাউডারি মিলডিউ, পাতায় দাগ রোগ, এবং ছত্রাকজনিত রোগ হতে পারে।

ফসল তোলা:

কাঁকরোল ফসল সাধারণত ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে তোলা যায়। কাঁকরোল গাছের পাতা ঝরে গেলে এবং ফলের রঙ সবুজ থেকে হলুদ হয়ে গেলে ফসল তোলার উপযুক্ত সময়।

কাঁকরোল চাষের কিছু টিপস:

  • কাঁকরোল চাষের জন্য ভালো জাতের বীজ নির্বাচন করতে হবে।
  • বীজ বপনের আগে বীজ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
  • গাছের গোড়ায় মাটি আলগা করে দিতে হবে।
  • নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে।
  • পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনের জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

কাঁকরোল চাষ একটি লাভজনক চাষ। সঠিকভাবে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

কাঁকরোল ভাজা রেসিপি:

আরোও পড়ুন

মিষ্টি কুমড়ার যত পুষ্টিগুন। সুস্থ চোখ ও কমনীয় ত্বকের জন্য তুলনাবিহীন।

উপকরণ:

  • কাঁকরোল, পরিষ্কার করে ধুয়ে টুকরো টুকরো করে কাটা – ১ কেজি
  • লবণ – ১ চা চামচ
  • হলুদ গুঁড়া – ১ চা চামচ
  • জিরা গুঁড়া – ১ চা চামচ
  • ধনে গুঁড়া – ১ চা চামচ
  • মরিচ গুঁড়া – ১ চা চামচ
  • তেল – ১/২ কাপ

রান্না প্রণালী:

কাঁকরোলের রান্না প্রণালী

১. একটি বড় বাটিতে কাঁকরোল, লবণ, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া এবং মরিচ গুঁড়া দিয়ে ভালো করে মেখে নিন।

২. একটি কড়াইতে তেল গরম করে কাঁকরোল দিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে নিন।

৩. ঢেকে দিন এবং মাঝারি আঁচে রান্না করুন। ৪. কাঁকরোল নরম হয়ে এলে নামিয়ে নিন।

টিপস:

  • কাঁকরোল ভাজার সময় বেশি নাড়াচাড়া করবেন না, এতে কাঁকরোল ভেঙে যেতে পারে।
  • কাঁকরোল বেশি ভাজবেন না, এতে কাঁকরোল শক্ত হয়ে যাবে।

কাঁকরোলের উপকারিতা:

কাঁকরোলের উপকারিতা

হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি: 

কাঁকরোলতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার খাদ্য থেকে পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: 

কাঁকরোলতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ক্ষতিকারক ফ্রি র‌্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফ্রি র‌্যাডিকেলগুলি রোগের কারণ হতে পারে।

দৃষ্টির স্বাস্থ্য রক্ষা: 

কাঁকরোলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে, যা দৃষ্টির স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা: 

এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। কোলাজেন ত্বকের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা এবং শক্তির জন্য দায়ী।

হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা: 

কাঁকরোলতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন এবং শক্তির জন্য দায়ী।

কাঁকরোলের অপকারিতা:

কাঁকরোল একটি সাধারণ এবং নিরাপদ খাবার। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এটি কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

কাঁকরোলের কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা নিম্নরূপ:

  • অস্বস্তি: এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কিছু লোকের মধ্যে পেটে ব্যথা, ফাঁপা বা গ্যাসের মতো অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
  • অ্যালার্জি: কাঁকরোলতে অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টিকারী কিছু উপাদান থাকতে পারে। কাঁকরোল খাওয়ার পরে যদি আপনার চুলকানি, ফুসকুড়ি বা শ্বাসকষ্ট হয় তবে তা অ্যালার্জির লক্ষণ হতে পারে।

সম্পর্কিত:

পটলের কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে? পটল খেলে কি কি উপকার ও অপকার হতে পারে?

September 2, 2023

লাল শাকের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

February 22, 2024

কুচিমটর ডাল: জেনে রাখুন কুচিমটর ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

March 18, 2025

ঝিঙার পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। ঝিঙার চাষ পদ্ধতি।

September 23, 2023

রুপচাঁদা মাছ এর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও মজাদার রেসিপি।

May 23, 2024

সূর্যমুখী তেল: স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য রক্ষায় সূর্যমুখী তেল।

March 6, 2025

হলুদের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

August 30, 2023

চিরতাপাতা কি? চিরতাপাতার উপকারিতা কি কি? কিভাবে ব্যবহার করবেন?

March 31, 2024

ক্যাপসিকাম: ক্যাপসিকামের উপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও প্রকারভেদ।

January 25, 2025

মাগুর মাছ: বাঙালির প্রিয় খাবার। মাগুর মাছের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।

November 17, 2024
error: Content is protected !!