রসুন
রসুন একটি সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর মসলা যা হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের খাদ্য এবং ঔষধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রসুনের ইংরেজি নাম garlic. এটি একটি বীরুৎ উদ্ভিদ যা একটি ছোট গোলাকার রাইজোম উৎপন্ন করে। রসুনের ঝাঁঝালো স্বাদ এবং সুগন্ধের জন্য এটি সুপরিচিত।
রসুনের পুষ্টিগুণ:
নিচে রসুনের পুষ্টি উপাদানগুলির একটি টেবিল দেওয়া হল:
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
ক্যালরি | 42 |
কার্বোহাইড্রেট | 9 গ্রাম |
প্রোটিন | 2 গ্রাম |
ফাইবার | 2 গ্রাম |
ভিটামিন সি | 60 মিলিগ্রাম (100% RDA) |
ভিটামিন বি৬ | 0.3 মিলিগ্রাম (15% RDA) |
পটাসিয়াম | 322 মিলিগ্রাম (10% RDA) |
ম্যাগনেসিয়াম | 27 মিলিগ্রাম (7% RDA) |
ক্যালসিয়াম | 19 মিলিগ্রাম (2% RDA) |
আয়রন | 0.3 মিলিগ্রাম (2% RDA) |
জিঙ্ক | 0.2 মিলিগ্রাম (2% RDA) |
ম্যাঙ্গানিজ | 0.1 মিলিগ্রাম (5% RDA) |
রসুনে অ্যালিসিন নামক একটি যৌগ রয়েছে যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল। অ্যালিসিন রসুনের ঝাঁঝালো স্বাদ এবং সুগন্ধের জন্যও দায়ী।
রসুনতে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক এবং ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে।
রসুনের উপকারিতা:

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
রসুন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলির কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এটি সর্দি, ফ্লু, এবং অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
রক্তচাপ কমায়:
রসুন রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি রক্তনালীগুলিকে প্রসারিত করে এবং রক্ত প্রবাহকে উন্নত করে।
কোলেস্টেরল কমায়:
রসুন কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল (এলডিএল) এর মাত্রা কমায় এবং উপকারী কোলেস্টেরল (এইচডিএল) এর মাত্রা বাড়ায়।
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে:
রসুন হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। এটি রক্তচাপ কমায়, কোলেস্টেরল কমায়, এবং রক্তের অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ায়।
আরোও পড়ুন
তরমুজের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। তরমুজ কেন খাবেন?
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়:
রসুন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি ফুসফুস ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের মতো কিছু ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে দেখা গেছে।
প্রদাহ কমায়:
রসুন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনিত রোগ যেমন আর্থ্রাইটিস এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
হজমশক্তি উন্নত করে:
রসুন হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। এটি পেটের গ্যাস এবং ফোলাভাব কমাতে পারে, এবং এটি হজম রস নিঃসরণকে উদ্দীপিত করতে পারে।
ব্যথা উপশম করে:
রসুন ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে। এটি মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, এবং দাঁত ব্যথার মতো বিভিন্ন ধরণের ব্যথার তীব্রতা কমাতে দেখা গেছে।
রসুনের অপকারিতা:

রসুন একটি সাধারণ খাবার যা সাধারণত নিরাপদ বলে মনে করা হয়। তবে, রসুন গ্রহণের কিছু সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
- গ্যাস: রসুন গ্যাসের একটি সাধারণ কারণ। এটি রসুনতে থাকা ফাইবারের কারণে হয়।
- বমি বমি ভাব: রসুন বমি বমি ভাবের একটি সাধারণ কারণ। এটি রসুনতে থাকা অ্যালিসিনের কারণে হয়।
- বমি: রসুন বমি হওয়ার একটি সাধারণ কারণ। এটি রসুনতে থাকা অ্যালিসিনের কারণে হয়।
- পেট ব্যথা: রসুন পেট ব্যথার একটি সাধারণ কারণ। এটি রসুনতে থাকা অ্যালিসিনের কারণে হয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্য: রসুন কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি সাধারণ কারণ। এটি রসুনতে থাকা ফাইবারের কারণে হয়।
- হজমে সমস্যা: রসুন হজমে সমস্যার একটি সাধারণ কারণ। এটি রসুনতে থাকা অ্যালিসিনের কারণে হয়।
যদি আপনি রসুন গ্রহণের সময় এই কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।
রসুন কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের সাথেও ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারে। যদি আপনি কোনও ওষুধ গ্রহণ করেন তবে রসুন গ্রহণের আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।
রসুন সাধারণত নিরাপদ, তবে কিছু লোকের জন্য এটি ক্ষতিকারক হতে পারে। যারা রসুন গ্রহণ থেকে বিরত থাকা উচিত তাদের মধ্যে রয়েছে:
- যারা অ্যালিসিন বা রসুনের অন্যান্য যৌগগুলির প্রতি সংবেদনশীল।
- যারা রক্তপাতের সমস্যায় ভুগছেন।
- যারা গর্ভাবস্থায় বা স্তন্যপান করাচ্ছেন।
- যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক, বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করছেন।
রসুন খাওয়ার সময় এই সতর্কতাগুলি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।