Skip to content
Home » MT Articles » আনারসের পুষ্টিগুণ। আনারস (Pineapple) কেন খাবেন ?

আনারসের পুষ্টিগুণ। আনারস (Pineapple) কেন খাবেন ?

আনারস (Pineapple):

পাইন গাছের শক্ত, শুষ্ক ফল অর্থাৎ মোচক/মোচা (Cone) এর সঙ্গে ইউরোপবাসি আনারসের সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছিল। সে কারণে দক্ষিণ আমেরিকায় ইউরোপের অভিযাত্রীরা প্রথম এই ফল দেখে নাম রেখেছিল পাইনাপল (পাইন +আপেল)। সেটা ষোড়শ  শতকের কথা। তখনকার অপরিচিত ফল আনারস এরপর খুব অল্প সময়েই  সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।বলা যায় এই ফলটি এখন বিশ্বের প্রধান ফলগুলোর একটি। এখন প্রায় সব দেশেই আনারসের চাষ হয়। 

আনারস কাটতে দক্ষতার প্রয়োজন হয়। সুন্দর করে কাটা আনারস খাওয়ার তৃপ্তিই আলাদা। পাশাপাশি অনেকে আধপাকা বা পাকা আনারস রান্না করেও খান।মাংস বা মাছের সঙ্গে আনারস অতুলনীয়। কেবল সালাদ খেতে চাইলেও আনারসের জুড়ি নেই। আনারসের সালাদ যেমন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ তেমনি  সুস্বাদুও।এ ছাড়া টাটকা আনারসের জুস  শরীরের ক্লান্তি  দূর করে ঝরঝরে করে তোলে। 

আনারসের পুষ্টিগুণ:

 আনারসে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এনজাইম ব্রোমেলেইন। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়। এই ফলে আছে ম্যাঙ্গানিজ নামক খনিজ উপাদান, যা দেহের শক্তি বাড়ায়। আছে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন বি-১,যা শরীরের জন্য অপরিহার্য। পাশাপাশি এই ফল খেলে শরীরে খুব কম ক্যালরি সঞ্চিত হয়। সুতারাং মোটা হওয়ার ভয়ও থাকে না। প্রতি   ১০০ গ্রাম আনারস থেকে পাওয়া যায় মাত্র ৫০  কিলোক্যালরি। তাছাড়া এতে কোন কোলেস্টেরলও নেই। এতে আছে পেকটিন নামক গুরুত্বপূর্ণ ডায়েটরি ফাইবার। আনারস থেকে ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্সের  নানা উপদান  যেমন- ফলিক এসিড, থায়ামিন, পাইরিডক্সিন, রিবোফ্লাভিনও পাওয়া যায়।   

আনারসের উপকারিতা:

আনারসের পুষ্টিগুণ

ক্যান্সার প্রতিরোধক: অ্যান্টি –অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ আনারাস ফ্রি রেডিক্যালস ধ্বংস করে ও সেল ড্যামেজ রোধ করে। এটি অথেরোসক্লেরোসিস, হৃদরোগ, আর্থ্রাইটিস ও বিভিন্ন প্রকার ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা তৈরি করে।

প্রদাহ ও ইনফেকশন: আনারসে রয়েছে ভিটামিন সি ও ব্রোমেলিন। এই এনজাইমগুলো প্রোটিন ভাঙ্গে ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা তৈরি করে। তাই ঠান্ডা কাশিতে প্রচুর পরিমাণে আনারস খান। 

পুষ্টির অভাব দূর করে: আনারস পুষ্টির বেশ বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে আনারস খেলে দেহে এসব পুষ্টি উপাদানের অভাব থাকবে না। 

হজমশক্তি বাড়ায়: আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন, যা আমাদের হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। 

হাড় সুস্থ রাখতে: আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাংগানিজ।ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে  এবং ম্যাংগানিজ হাড়কে মজবুত করে। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের  সমস্যাজনিত যেকোনো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। 

আরোও পড়ুন

ড্রাগন ফল পুষ্টির খনি । ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা।

ওজন কমায়: শুনতে বেশ অবাক লাগলেও আনারস আমাদের ওজন কমানোয় বেশ সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার রয়েছে এবং ফ্যাটের পরিমান অনেক কম । সকালের যে সময়ে ফলমূল খাওয়া হয় সে সময় আনারস এবং সালাদে আনারস ব্যবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। তাই ওজন কমাতে চাইলে আনারস খেতে পারেন। 

চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে, আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এই রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই।আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।

ব্রণ ও দাগ: আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ যা ডার্ক স্পট ও ব্রণ দূর করে একইসঙ্গে ত্বকের টোন উন্নত করে। স্কিন টাইটেনিংয়েও আনারসের জুড়ি নেই। 

আনারসের অপকারিতা / পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :

আনারসের অপকারিতা

আনারস খেলে অনেকেই অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন। ফলে তাদের শরীরে চুলকানি, ফুসকুড়ি দেখা দেয়। এতে থাকা চিনি ডায়বেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। আনারস অ্যাসিটিক ফল।তাই খালি পেটে খেলে পেটব্যথা হতে পারে।

তথ্যসূত্র : Healthline.com

error: Content is protected !!