কাতলা মাছ
কাতলা মাছ একটি বড় আকারের স্বাদুপানির মাছ। এটি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান এবং মায়ানমারে পাওয়া যায়। এটি একটি বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছ এবং এটি পুকুরেও চাষ করা হয়। কাতলা মাছ একটি শক্ত মাছ এবং এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এটি সাধারণত ১ মিটার (৩ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হয় এবং ৩০ কেজি (৬৬ পাউন্ড) পর্যন্ত ওজনের হয়। কাতলা মাছ একটি মাংসাশী মাছ এবং এটি ছোট মাছ, কাঁকড়া এবং অন্যান্য পোকামাকড় খায়।
কাতলা মাছের বৈশিষ্ট্য:
- মাথা দেহের অনুপাতে বড় এবং দেহ দৈর্ঘ্যের অনুপাতে বেশ চওড়া এবং দুই পাশ চ্যাপ্টা।
- আঁইশ দাঁতালো ও বড় বড়।
- মাথা ও পৃষ্ঠ ধূসর, দেহের পাশে রুপালি এবং পেট সাদা।
- প্রাকৃতিক আবাসে এরা ১.৮০ মিটার লম্বা এবং ওজন ৪৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
- দুই বছরেই এরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকে।
- বর্ষাকালে প্লাবিত নদীতে (বিশেষত জলজ উদ্ভিদময় স্থানে) প্রজনন করে থাকে।
- এক প্রজনন ঋতুতে একটি মা মাছ প্রায় পনের থেকে ছাব্বিশ লক্ষ ডিম দিয়ে থাকে।
- বর্তমানে এদের কৃত্রিম পদ্ধতিতে পুকুরে ডিম উৎপাদন করা হয়।

কাতলা মাছ এর পুষ্টিগুণ:
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ (প্রতি ১০০ গ্রামে) |
ক্যালোরি | ১৪৮ |
প্রোটিন | ২০ গ্রাম |
চর্বি | ২.৩ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ০ গ্রাম |
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড | ১.২ গ্রাম |
ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড | ১.০ গ্রাম |
ভিটামিন এ | ১০৬ আইইউ |
ভিটামিন বি১ | ০.০৫ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি২ | ০.১২ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি১২ | ০.৭১ মাইক্রোগ্রাম |
ভিটামিন ডি | ০ মাইক্রোগ্রাম |
ভিটামিন ই | ১.২ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন কে | ৬.৭ মাইক্রোগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ১৭ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ২৭৫ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ০.৫ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ২৩ মিলিগ্রাম |
পটাসিয়াম | ৪০০ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | ৯০ মিলিগ্রাম |
জিঙ্ক | ০.৯ মিলিগ্রাম |
সেলেনিয়াম | ১৬ মাইক্রোগ্রাম |

কাতলা মাছ এর উপকারিতা নিম্নরূপ:
শরীরের গঠন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে:
কাতলা মাছের প্রোটিন দেহের গঠন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি দেহের ক্ষয়পূরণ ঘটায় এবং নতুন কোষ তৈরিতে সহায়তা করে।
শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে:
আরোও পড়ুন
রুই মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।
কাতলা মাছের প্রোটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে:
কাতলা মাছের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি দেহকে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা প্রদান করে।
হৃদস্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে:
কাতলা মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদস্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, রক্তনালীর স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
স্নায়ু স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে:
কাতলা মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড স্নায়ু স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে। এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে:
কাতলা মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি চোখের রেটিনাকে সুরক্ষা দেয় এবং ছানি পড়ার ঝুঁকি কমায়।
ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে:
কাতলা মাছের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে। এটি ত্বককে কোমল ও মসৃণ রাখে এবং চুলের বৃদ্ধি ও উজ্জ্বলতা বাড়ায়।