আম একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল। আমকে ফলের রাজা বলা হয়। আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। আম ফলটি মুখোরচক এবং পুষ্টিকর। এটিকে বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। আমকে কাঁচা, পাকা বা শুকনো খাওয়া যায়। আম থেকে জুস, আচার, মোরব্বা, আমসত্ত্ব, জেলি, ইত্যাদি তৈরি করা যায়। চলুন সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক আম খাওয়ার উপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা সম্পর্কে।
আমের পুষ্টিগুণ:
আম একটি পুষ্টিকর এবং রসালো ফল এবং এটি বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেলের ভালো উৎস। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (USDA) অনুসারে, এক কাপ (165 গ্রাম) কাটা আমে থাকে :
- শক্তি – 99 কিলোক্যালরি
- প্রোটিন – 1.35 গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট – 24.7 গ্রাম
- খাদ্যতালিকাগত ফাইবার – 2.64 গ্রাম
- চর্বি – 0.627 গ্রাম
- চিনি – 22.5 গ্রাম
- ফোলেট – 71 এমসিজি
- ভিটামিন সি – 60.1 এমসিজি
- ক্যালসিয়াম – 1.2 মিলিগ্রাম
- আয়রন – 0.264 মিলিগ্রাম
- সোডিয়াম – 1.65 মিলিগ্রাম
- পটাসিয়াম – 277 মিলিগ্রাম
আম খাওয়ার উপকারিতা:

- হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: আমে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী: আমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে।
- ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়: আমে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- দৃষ্টিশক্তির জন্য উপকারী: আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে, যা দৃষ্টিশক্তির জন্য প্রয়োজনীয়। এটি চোখের ছানি এবং অন্যান্য চোখের রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- ত্বকের জন্য উপকারী: আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয়। এটি ত্বককে উজ্জ্বল এবং মসৃণ রাখতে সাহায্য করে।
- হজমশক্তির জন্য উপকারী: আমে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে: আমে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি। এটি ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
আরোও পড়ুন
ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ভালোমত জানুন। নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন।
আম খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি কি ?
আম একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল। এটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। আম খাওয়ার উপকারিতা অনেক, তবে কিছু ক্ষেত্রে আম খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে।
আম খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল:
- দাঁতের ক্ষয়: আমের মধ্যে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, যা দাঁতের ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। তাই আম খাওয়ার পর অবশ্যই মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- অ্যালার্জি: কিছু মানুষের আম খেলে অ্যালার্জি হতে পারে। এই অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে চুলকানি, ফোলাভাব এবং শ্বাসকষ্ট।
- গ্যাস এবং পেট ফাঁপা: আমে ফাইবার থাকে, যা গ্যাস এবং পেট ফাঁপার কারণ হতে পারে। তাই আম খাওয়ার পর অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
- ডায়াবেটিস: আমে চিনি থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের আম খাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
যদি আপনি আম খেয়ে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন তবে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিন।
প্রতিদিন কতটুকু আম খাওয়া উচিত:
প্রতিদিন কতটুকু আম খাওয়া উচিত তা নির্ভর করে আপনার বয়স, লিঙ্গ, স্বাস্থ্য এবং শারীরিক অবস্থার উপর। সাধারণত, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ১-২টি আম খেতে পারেন। তবে, যদি আপনি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা কিডনি রোগে আক্রান্ত হন তবে আপনার আম খাওয়ার পরিমাণ সীমিত করা উচিত। যদিও আম বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে শরীরকে সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। তবে, আমে প্রচুর চিনি থাকে। তাই অতিরিক্ত আম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

আম অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
আম একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল, সেই সাথে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও বৃদ্ধি করে। তাই প্রতিদিন অন্তত একটি আম খাওয়া উচিত।