Skip to content
Home » MT Articles » ডেবো ফল এর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

ডেবো ফল এর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

ডেবো ফল

ডেবো ফল বা ডেউয়া

ডেবো ফল, বা “ডেউয়া”, বাংলাদেশের একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। এটি Rosaceae পরিবারের Rubus গণের সদস্য এবং গোলাপ, ব্ল্যাকবেরি এবং রাস্পবেরির সাথে সম্পর্কিত। ডেবো ফল বাংলাদেশের স্থানীয় ফল, তবে এটি ভারত, নেপাল এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য অংশেও পাওয়া যায়।

ডেবো ফলের গাছগুলো লম্বা, কাঁটাযুক্ত লতানো গাছ যা ৫ মিটার পর্যন্ত উঁচুতে বেড়ে উঠতে পারে। পাতাগুলো সবুজ, যৌগিক এবং ৩-৫ টি পত্রিকা থাকে। ফুলগুলো সাদা বা হালকা গোলাপি রঙের এবং ছোট ছোট ছোট গোছায় থাকে।এই ফল ছোট, গোলাকার এবং ০.৫-১ সেন্টিমিটার ব্যাসের হয়। এগুলো পাকা হলে সবুজ থেকে লাল, বেগুনি বা কালচে রঙের হয়ে যায়। ডেবো ফলের স্বাদ মিষ্টি-আম্লান এবং এতে একটি অনন্য সুগন্ধি থাকে।

ডেবো ফলের পুষ্টিগুণ:

ডেবো ফল
ডেবো ফল গাছ
ডেবো ফলের পুষ্টি উপাদান টেবিল:
পুষ্টি উপাদানপরিমাণ (প্রতি 100 গ্রাম)
শক্তি47 ক্যালোরি
কার্বোহাইড্রেট11.2 গ্রাম
চর্বি0.4 গ্রাম
প্রোটিন1.3 গ্রাম
ডায়েটারি ফাইবার3.3 গ্রাম
ভিটামিন সি64.6 মিলিগ্রাম (108% DV)
ভিটামিন এ323 মাইক্রোগ্রাম (36% DV)
ভিটামিন ই1.1 মিলিগ্রাম (7% DV)
ভিটামিন কে10.6 মাইক্রোগ্রাম (13% DV)
পটাশিয়াম243 মিলিগ্রাম (7% DV)
ম্যাগনেসিয়াম17 মিলিগ্রাম (4% DV)
ক্যালসিয়াম33 মিলিগ্রাম (3% DV)
লৌহ0.6 মিলিগ্রাম (3% DV)

উল্লেখ্য:

  • DV (Daily Value) মানে প্রতিদিন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রস্তাবিত পরিমাণ।
  • এই তথ্যটি USDA National Nutrient Database-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
  • ডেবো ফলের পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ জাত, পাকস্থলী এবং অন্যান্য কারণের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।

ডেবো ফল এর উপকারিতা:

ডেবো ফল এর উপকারিতা

পুষ্টি:

  • ভিটামিন: ডেবো ফল ভিটামিন সি, এ, ই, এবং কে-এর একটি ভালো উৎস। এই ভিটামিনগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • খনিজ পদার্থ: ফলটি পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং লৌহের একটি ভালো উৎস। এই খনিজ পদার্থগুলো হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হাড় ও দাঁত শক্তিশালী করা এবং শরীরে অক্সিজেন বহন করতে সাহায্য করে।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: এই ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়। ফাইবার: ডেবো ফল ফাইবারের একটি ভালো উৎস, যা পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করতে, মলত্যাগ নিয়মিত করতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

আরোও পড়ুন

ডুমুরের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য।

স্বাস্থ্য উপকারিতা:

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: ডেবো ফলে থাকা ভিটামিন সি, এ, এবং ই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং ঠান্ডা, ফ্লু এবং অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: ডেবো ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ পদার্থ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে, খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: ডেবো ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র‌্যাডিকেলের কারণে কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, যা ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধিকে বাধা দিতে পারে।
  • পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে: ডেবো ফলে থাকা ফাইবার মলত্যাগ নিয়মিত করতে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে এবং সামগ্রিক পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে: ডেবো ফলে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতে এবং রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

ডেবো ফল এর অপকারিতা:

ডেবো ফল এর অপকারিতা

সম্ভাব্য অপকারিতা:

অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া: কিছু লোকের ডেবো ফলের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে, যার ফলে ফোলাভাব, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট এমনকি অ্যানাফিল্যাক্সিসহ তীব্র প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যদি আপনার আগে কোনও খাদ্য অ্যালার্জি থাকে, তাহলে ডেবো ফল খাওয়ার আগে সতর্কতা অবলম্বন করা এবং একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উ ।

পেটের সমস্যা: ডেবো ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা কিছু লোকে পেট ফোলাভাব, গ্যাস এবং ডায়রিয়া সহ পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে। যদি আপনার সংবেদনশীল পেট থাকে, তাহলে ধীরে ধীরে ডেবো ফল গ্রহণ শুরু করা এবং আপনার শরীর কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় তা পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

রক্ত ​​​​পাতলাভাবের ঝুঁকি বাড়ানো: ডেবো ফলে ভিটামিন কে থাকে, যা রক্ত ​​​​জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। আপনি যদি রক্ত ​​​​পাতলাকারক ওষুধ খান, তাহলে ইহা খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ওষুধের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ানো: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ডেবো ফল রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। আপনি যদি ডায়াবেটিসে ভোগেন, তাহলে ডেবো ফল খাওয়া সীমিত করা এবং আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানের সময়: গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মহিলাদের জন্য ডেবো ফলের নিরাপত্তা সম্পর্কে পর্যাপ্ত গবেষণা নেই। সতর্কতার সাথে ডেবো ফল খাওয়া বা এড়ানো ভালো।

মনে রাখবেন: এই অপকারিতাগুলো সম্ভাব্য এবং সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ডেবো ফলের বেশিরভাগ মানুষের জন্য নিরাপদ এবং উপকারী বলে মনে করা হয়। যাইহোক, আপনার যদি কোনও স্বাস্থ্য উদ্বেগ থাকে বা ডেবো ফল খাওয়ার পরে আপনি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন তবে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।

This article is written with the help of Gemini

error: Content is protected !!