Skip to content
Home » MT Articles » গাজরের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

গাজরের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

গাজরের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা

গাজর 

গাজর একটি পুষ্টিকর সবজি যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। গাজরের ভিতর প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A, C, K, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ফাইবার ইত্যাদি রয়েছে।

গাজরের পুষ্টিগুণ:

১০০ গ্রাম গাজরে রয়েছে:

  • শক্তি-৪১ কিলোক্যালরি
  • কার্বোহাইড্রেট-৯.৬ গ্রাম
  • প্রোটিন-০.৯ গ্রাম
  • ফ্যাট-০.৩ গ্রাম
  • আঁশ-২.৮ গ্রাম
  • ভিটামিন A-১৬৭০৬ ওট ভিটামিন A
  • ভিটামিন C-৬ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন K-১৩ মাইক্রোগ্রাম
  • পটাসিয়াম-২৬৩ মিলিগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম-৪০ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস-৩৩ মিলিগ্রাম
  • আয়রন-০.৪ মিলিগ্রাম
গাজরের উপকারিতা

গাজরের উপকারিতা:

চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: 

গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে, যা ভিটামিন A-তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন A চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করে: 

গাজরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে:

 গাজরে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিনয়েডস রয়েছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।

ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে: 

গাজরে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি। তাই এটি ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: 

গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A রয়েছে, যা ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। এটি ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।

আরোও পড়ুন

রসুনের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। রসুন কেন খাবেন?

হৃদস্বাস্থ্যের জন্য ভালো: 

গাজরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: 

গাজরে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম রয়েছে, যা কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে: 

গাজরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে।

গাজরের অপকারিতা /পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

গাজর একটি পুষ্টিকর সবজি যা সাধারণত খাওয়ার জন্য নিরাপদ। তবে, কিছু ক্ষেত্রে গাজরের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। গাজরের কিছু অপকারিতা নিম্নরূপ:

  • গ্যাস ও ফোলাভাব: গাজরে ফাইবার বেশি থাকায় এটি খেলে গ্যাস ও ফোলাভাব হতে পারে। বিশেষ করে যাদের পেটের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি হতে পারে।
  • অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া: গাজরের প্রতি কারো অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া থাকলে তা খেলে অ্যালার্জির লক্ষণ যেমন ফুসকুড়ি, চুলকানি, রাইনাইটিস, চোখের জ্বালাপোড়া, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি হতে পারে।
  • ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি: গাজরে পিউরিন বেশি থাকায় এটি খেলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই যাদের ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে গাজর খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
  • ত্বকের হলুদ হয়ে যাওয়া: অতিরিক্ত গাজর খেলে ত্বকের রঙ হলুদ হয়ে যেতে পারে। এটি বিটা ক্যারোটিনের কারণে হয়। তবে, এটি ক্ষতিকর নয় এবং কিছুদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যায়।

গাজরের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে হলে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

গাজর চাষ পদ্ধতি:

গাজরের চাষ

গাজরের চাষের জন্য উর্বর, দোআঁশ বা এটেল মাটি সবচেয়ে ভালো। গাজরের বীজ বপনের সময় হলো অক্টোবর-নভেম্বর মাস। বীজ বপনের আগে মাটি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে নিতে হবে। বীজ বপনের পর মাটি হালকা করে চেপে দিতে হবে। বীজ বপনের পরপরই সেচ দিতে হবে। গাজরের চারা গজানোর পর প্রতিটি চারা থেকে ৪৫-৫০ সেমি দূরত্বে রোপণ করতে হবে। গাজরের চারা রোপণের পর প্রতি ১৫-২০ দিন অন্তর অন্তর সেচ দিতে হবে। গাজরের চারা রোপণের পর সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি সারিতে ১০-১২ কেজি গোবর সার, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টিএসপি ও ৫০ গ্রাম এমওপি সার মিশিয়ে মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। গাজরের চারা রোপণের পর পরই আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।

গাজর একটি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর সবজি যা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

error: Content is protected !!