কাঠলিচু
কাঠলিচু, যা লংগান বা আঁশফল নামেও পরিচিত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি সুস্বাদু ফল। এটি লিচুর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত এবং একই পরিবারে (Sapindaceae) অন্তর্ভুক্ত।এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয়, এবং বাংলাদেশেও পাওয়া যায়।
কাঠলিচু’র পুষ্টিগুণ:

পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ (প্রতি 100 গ্রাম) |
---|---|
ক্যালোরি | 60 |
জল | 84% |
প্রোটিন | 1.1 গ্রাম |
চর্বি | 0.2 গ্রাম |
ফাইবার | 1.6 গ্রাম |
চিনি | 14 গ্রাম |
ভিটামিন সি | 64 মিলিগ্রাম |
বিটা ক্যারোটিন | 0.4 মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | 273 মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | 10 মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | 5 মিলিগ্রাম |
লোহা | 0.2 মিলিগ্রাম |
জিঙ্ক | 0.3 মিলিগ্রাম |
তামা | 0.1 মিলিগ্রাম |
কাঠলিচু’র উপকারিতা:

১) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: কাঠলিচু ভিটামিন সি’র একটি ভালো উৎস, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং ঠান্ডা, ফ্লু এবং অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
২) চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি: কাঠলিচুতে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন থাকে, যা শরীর ভিটামিন এ-তে রূপান্তর করে। ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৩) হজম উন্নত করে: কাঠলিচুতে ফাইবার থাকে, যা হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
৪) ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি: কাঠলিচুতে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের কোষগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
আরোও পড়ুন
স্ট্রবেরি: শুধু সুস্বাদু নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর একটি ফল
৫) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: কাঠলিচুতে পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৬) হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: কাঠলিচুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৭) ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: কাঠলিচুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে কোষগুলিকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৮) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে: কাঠলিচু ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকে, যা আপনাকে পূর্ণ বোধ করতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৯) মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি: কাঠলিচুতে ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ উন্নত করতে সাহায্য করে।
১০) হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি: কাঠলিচুতে ক্যালসিয়াম থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
কাঠলিচু এর অপকারিতা:

কাঠলিচু, যা লংগান নামেও পরিচিত, এটি একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে, কাঠলিচুর অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন কিছু অপকারিতাও ডেকে আনতে পারে।
কাঠলিচুর কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা নীচে দেওয়া হলো:
১) রক্তে চিনির মাত্রা বৃদ্ধি: কাঠলিচুতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে, তবে কাঠলিচু সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
২) ওজন বৃদ্ধি: কাঠলিচুতে ক্যালোরি থাকে, তাই অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হলে ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।
৩) অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া: কিছু লোকের কাঠলিচুতে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ফোলাভাব, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট এবং পেটে ব্যথা। আপনার যদি অ্যালার্জির ইতিহাস থাকে, তাহলে কাঠলিচু খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
৪) হজমের সমস্যা: কিছু লোকের কাঠলিচু খাওয়ার পর পেট ফোলাভাব, গ্যাস এবং ডায়রিয়া হতে পারে।