আটা
আটা হলো শস্যদানাকে পিষে তৈরি করা একটি সূক্ষ্ম গুঁড়ো। বিভিন্ন ধরনের শস্য, যেমন গম, চাল, জোয়ার, বাজরা ইত্যাদি থেকে আটা তৈরি করা হয়। এই আটা দিয়েই আমরা রুটি, পিঠা, কেক এবং আরো অনেক ধরনের খাবার তৈরি করি। এখানে আমরা আটা ও ময়দার মধ্যে পার্থক্য এাং আটার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব।
আটার পুষ্টিগুণ:
আটার পুষ্টিগুণ বিভিন্ন ধরনের শস্য, পিষার পদ্ধতি এবং পরিশোধনের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। তবে সাধারণভাবে, পুরো শস্যের আটা পরিশোধিত আটার চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টিকর।
একটি সাধারণ ধারণা দেওয়ার জন্য, নিচে বিভিন্ন ধরনের আটার প্রধান পুষ্টিগুণের একটি তালিকা দেওয়া হল:
আটার ধরন | প্রধান পুষ্টিগুণ |
---|---|
গমের লাল আটা | আঁশ, প্রোটিন, ভিটামিন বি (বিশেষ করে বি১, বি২, বি৩), ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, আয়রন |
চালের আটা | কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন বি |
জোয়ারের আটা | আঁশ, প্রোটিন, ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস |
বাজরার আটা | আঁশ, প্রোটিন, ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস |
লাল আটা ও সাদা আটার মধ্যে পার্থক্য:
পুষ্টি উপাদান | লাল আটা | সাদা আটা |
---|---|---|
আঁশ | বেশি | কম |
ভিটামিন ও খনিজ | বেশি | কম |
প্রোটিন | বেশি | কম |
আটা খাওয়ার উপকারিতা:

আটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। রুটি, পিঠা, কেক থেকে শুরু করে অনেক খাবারই আটার তৈরি। কিন্তু আটা শুধু খাবার তৈরি করার জন্যই ব্যবহৃত হয় না, এতে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণও থাকে।যেমন-
- পাচনতন্ত্র স্বাস্থ্য: পুরো শস্যের আটায় প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে। আঁশ আমাদের পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হজমে সহায়তা করে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: পুরো শস্যের আটা খাওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এতে থাকা আঁশ খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- ডায়াবেটিস প্রতিরোধ: পুরো শস্যের আটায় থাকা আঁশ রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: আঁশযুক্ত খাবার খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং খিদে কম লাগে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- শক্তি সরবরাহ: আটায় কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা শরীরকে শক্তি সরবরাহ করে।
- অন্যান্য পুষ্টিগুণ: বিভিন্ন ধরনের আটায় ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং প্রোটিন থাকে, যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।
আরোও পড়ুন
বুট ডালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও রান্না প্রণালী।
আটা ও ময়দার মধ্যে পার্থক্য:
আটা ও ময়দা, দুটিই আমাদের রান্নাঘরে প্রায়ই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এই দুটির মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে, বিশেষ করে পুষ্টিগুণ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে। আসুন একটি টেবিলের মাধ্যমে এই পার্থক্যগুলো স্পষ্ট করে তুলি:

বৈশিষ্ট্য | আটা | ময়দা |
---|---|---|
উৎস | বিভিন্ন ধরনের শস্য (গম, চাল, জোয়ার ইত্যাদি) থেকে তৈরি | সাধারণত গমের দানা থেকে তৈরি |
পিষার পদ্ধতি | পুরো শস্যকে পিষে তৈরি | গমের দানার বাইরের খোসা ও অন্যান্য অংশ বাদ দিয়ে ভেতরের শুধুমাত্র ভূণকে পিষে তৈরি |
পুষ্টিগুণ | আঁশ, প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ লবণ সমৃদ্ধ | আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ লবণ কম, প্রধানত কার্বোহাইড্রেট |
রঙ | সাধারণত হলুদাট বা গোলাপি রঙের | সাদা রঙের |
স্বাদ | হালকা গন্ধ ও স্বাদ | গন্ধহীন এবং স্বাদহীন |
ব্যবহার | রুটি, পিঠা, কেক, নুডলস, খিচুড়ি ইত্যাদি তৈরি | কেক, পেস্ট্রি, বিস্কিট, ব্রেড ইত্যাদি তৈরি |
স্বাস্থ্য উপকারিতা | পাচনতন্ত্র স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে | স্বাদ বাড়াতে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু পুষ্টিগুণ কম |
This article is written with the help of Gemini