Skip to content
Home » MT Articles » রুই মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

রুই মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

রুই মাছ

রুই মাছ

রুই মাছ (Labeo rohita) একটি স্বাদুপানির মাছ যা ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, চীন, রাশিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে পাওয়া যায়। রুই মাছের ইংরেজি নাম Rohu Carp। এটি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় মাছ। এটি একটি বড় কার্প জাতীয় মাছ যা সাধারণত ৬০-৮০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের হয়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এটি ২০০ সেমি লম্বা এবং ৪৫ কেজি ওজনেরও হতে পারে।

রুই মাছের পুষ্টিগুণ:

রুই মাছের পুষ্টিগুণ
পুষ্টি উপাদানপরিমাণ
ক্যালোরি১৪৫ ক্যালোরি
প্রোটিন২৪.৫ গ্রাম
চর্বি১.৫ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট০ গ্রাম
ভিটামিন এ১৪০ আইইউ
ভিটামিন ডি২ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন ই১.৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১০.১ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২০.১ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৩৪.৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৫০.৩ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৬০.৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১২০ মাইক্রোগ্রাম
ফোলেট১১ মাইক্রোগ্রাম
পটাসিয়াম৩৯০ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম১০৫ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম১৪০ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম৩০ মিলিগ্রাম
ফসফরাস৩৮০ মিলিগ্রাম
আয়রন১ মিলিগ্রাম
জিঙ্ক১.৫ মিলিগ্রাম

রুই মাছ এর উপকারিতা:

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: 

রুই মাছ এর উপকারিতা

রুই মাছ এর প্রোটিন ও ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: 

রুই মাছ এর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: 

রুই মাছে উপস্থিত ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, বি১২ স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে: 

আরোও পড়ুন

ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা। ইলিশ কেন খাবেন?

রুই মাছের ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো করে: 

রুই মাছে উপস্থিত ভিটামিন এ, ই, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, বি১২ ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: 

এ মাছের ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: 

রুই মাছের প্রোটিন ও ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে: 

রুই মাছ একটি কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার। এটি ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।

রুই মাছের অপকারিতা:

মাছ রান্না
  • অতিরিক্ত খাওয়া: এ মাছে ক্যালোরির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই, অতিরিক্ত রুই মাছ খেলে ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • অ্যালার্জি: কিছু লোকের রুই মাছের প্রতি অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে চুলকানি, ফুসকুড়ি, ত্বকের লালভাব, শ্বাসকষ্ট এবং বমি বমি ভাব।
  • বিষক্রিয়া: দূষিত পরিবেশে চাষ করা রুই মাছের মধ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টিকারী উপাদান থাকতে পারে। তাই, রুই মাছ কেনার সময় ভালো মানের মাছ কেনার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

রুই মাছ খাওয়ার সময় সতর্কতা:

  • রুই মাছ পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • দূষিত পরিবেশে চাষ করা রুই মাছ না খাওয়া উচিত।
  • রুই মাছ রান্না করার সময় ভালোভাবে সেদ্ধ করা উচিত।

রুই মাছের বৈশিষ্ট্য:

এ মাছের পুষ্টি
  • রুই মাছের পিঠ ও পিঠের নিচের দিকটা বাদামি রঙের এবং পেট রুপালি সাদা রঙের হয়।
  • মুখ নিচের দিকে নামানো থাকে এবং পুরু ঠোট ভিতরের দিকে ভাঁজ হয়ে থাকে।
  • মুখের উপরে ঠোঁটে এক জোড়া গোঁফ থাকে।
  • রুই মাছ সর্বোচ্চ ২০০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
  • এরা সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে এবং ওজন ৪৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।

রুই মাছ এর আবাসস্থল:

রুই মাছ স্বাদু পানির মাছ। এটি সাধারণত নদী, খাল, বিল এবং হ্রদে পাওয়া যায়। রুই মাছ 14 ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রায় বাঁচতে পারে না।

রুই মাছের খাদ্য:

রুই মাছ একটি শাকাহারী মাছ। এরা জলের মাঝ স্তরের শৈবাল ও নিমজ্জিত উদ্ভিদ বেশি গ্রহণ করে। এছাড়াও, এরা পচনশীল জৈব পদার্থ ও বালু কাদা ইত্যাদিও খায়।

রুই মাছের প্রজনন:

রুই মাছ সাধারণত বর্ষার সময় ডিম ছাড়ে। এরা একসাথে বড় দলে ডিম ছাড়ে। এ মাছের ডিম ছোট এবং স্বচ্ছ। ডিম থেকে লার্ভা বের হওয়ার পর এরা প্রাথমিকভাবে প্ল্যাঙ্কটন খায়।

রুই মাছ এর চাষ:

রুই মাছ একটি বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছ। বাংলাদেশে রুই মাছের চাষ ব্যাপকভাবে হয়ে থাকে। রুই মাছ চাষের জন্য পুকুর, ডোবা, বাঁধ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। রুই মাছ চাষের জন্য বিভিন্ন প্রকার খাদ্য ও ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

এ মাছ এর কিছু ঐতিহ্যগত ব্যবহার:

এ মাছ এর কাবাব

রুই মাছ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করা হয়। রুই মাছ দিয়ে তৈরি কিছু জনপ্রিয় খাবার হলো:

  • রুই মাছ এর কালিয়া
  • রুই মাছ এর ভর্তা
  • রুই মাছ এর মালাইকারি
  • রুই মাছ এর পোলাও
  • রুই মাছ এর কাবাব

সম্পর্কিত:

তিলের তেল: তিলের তেলের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম।

March 20, 2025

কাঠলিচু কি? জেনেনিন কাঠলিচুর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

July 15, 2024

খরশুলা মাছ: খরশুলা মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য।

November 21, 2024

নিমপাতা কি? নিমপাতার উপকারিতা, অপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম।

March 30, 2024

শোল মাছ: শোল মাছের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।

November 13, 2024

সুপারি কি? জেনেনিন সুপারির উপকারিতা ও অপকারিতা।

September 17, 2024

কামরাঙ্গা ফলের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম।

June 4, 2024

পোস্ত দানা কি? জেনেনিন পোস্তর পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও রান্না প্রণালী।

May 8, 2024

বাগদা চিংড়ির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা।

May 21, 2024

জামরুলের উপকারিতা ও অপকারিতা। জামরুল কেন খাবেন ?

July 26, 2023
error: Content is protected !!